পরমেশ্বর শিব ও মাতা পার্বতীর বিবাহ কবে হয়েছিল ?

 


বর্তমানে সনাতনীরা নিজেরাই নিজেদের ধর্মের অনুষ্ঠানের সময়সূচি সম্পর্কে অনভিজ্ঞ হয়ে পড়েছে, এর ফলে সনাতন ধর্মের যিনি মূল , সেই পরমেশ্বর পরমপিতা ও জগৎজননীর মিলনসূত্রের এই মহাপবিত্র ক্ষণের সম্পর্কে জানতে পারেনি, অনেকে মহাশিবরাত্রিকে শিবপার্বতীর বিবাহের সময় বলে গুজব ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। তাই ISSGT শৈব সংগঠনের পক্ষ থেকে আমি এই শিবপার্বতীর বিবাহের প্রকৃত সময়সূচির শাস্ত্রসম্মত প্রমাণ উপস্থাপন করলাম নীচে। 

 

বশিষ্ঠ উবাচ ।

লগ্নাধিপে চ লগ্নস্থে চন্দ্রে স্বতনয়ান্বিতে ॥৫৮

মুদিতে রোহিণীযুক্তে বিশুদ্ধে চন্দ্রতারকে ।

মার্গমাসে চন্দ্রবারে সর্বদোষবিবর্জিতে ॥৫৯

সর্বসদ্ গ্রহসংসৃষ্টেঽসদ্ গ্রহদৃষ্টিবিবর্জিতে ।

সদপত্যপ্রদে জীবে পতিসৌভাগ্যদায়িনি ৬০

জগদম্বাং জগৎপিত্রে মূলপ্রকৃতিমীশ্বরীম্ ।

কন্যাং প্রদায় গিরিজাং কৃতী ত্বং ভব পর্বত ॥৬১


[তথ্যসূত্র - রুদ্রসংহিতা/পার্বতী খণ্ড/৩৫নং অধ্যায়]

🌷 সরলার্থ : বশিষ্ঠ বলিলেন- সেই সময় চন্দ্র লগ্নের স্বামী হয়ে নিজপুত্র বুধের সঙ্গেই লগ্নে স্থিত হবেন, রোহিণী নক্ষত্রের সঙ্গে তার যোগ হবে। চন্দ্র তথা তারাগণের যোগ‌ও উত্তম বলে গণ্য হবে। অগ্রহায়ণ মাসের অন্তর্গত সম্পূর্ণ দোষরহিত সোমবারে, যখন লগ্নের ওপর শুভগ্রহাদির দৃষ্টি হবে, পাপগ্রহাদির দৃষ্টি থাকবে না এবং বৃহস্পতি এমন স্থানে থাকবে, যেখান থেকে সে উত্তম সন্তান ও পতির সৌভাগ্য দিতে সক্ষম ॥৫৮-৬০ 

সেই মুহূর্তে তুমি তোমার কন্যা মূলপ্রকৃতি ঈশ্বরী জগদম্বা পার্বতীকে জগৎপিতা পরমেশ্বর শিবের হাতে সমর্পণ করে কৃতার্থ হয়ে যাও ॥৬১


🔥 সিদ্ধান্ত - সুতরাং, শিবমহাপুরাণের উপরোক্ত শ্লোক দ্বারা পরিষ্কার করে বোঝা যাচ্ছে যে পরমেশ্বর শিব ও মাতা পার্বতীর বিবাহ অগ্রহায়ণ মাসের উক্ত রোহিণীযুক্ত লগ্নে হয়েছিল, বর্তমান সময়ে সাধারণত বর্তমান সময়ের গণনা অনুসারে অগ্রহায়ণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতেই উক্ত বুধ সহ চন্দ্রের সহযোগে রোহিণীযুক্ত লগ্নের মুহূর্তটি পড়ে। তাই মহাশিবরাত্রি কখনোই শিবপার্বতীর বিবাহের সময় নয়। 

✍️লেখনীতে - শ্রী নন্দীনাথ শৈব

©️কপিরাইট ও প্রচারে - International Shiva Shakti Gyan Tirtha - ISSGT 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমবার ব্রত বিধি ও মাহাত্ম্য (শৈবপুরাণোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ১ (মূলপূজা)

বৃহৎ শিবার্চন বিধি পুস্তক (শৈব আগমোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ২ (প্রহরপূজা)

ত্রিপু্রোৎসব দীপপ্রজ্জ্বলন রীতি – স্কন্দমহাপুরাণোক্ত