কালাষ্টমী ব্রত বিধি



কালাষ্টমী ব্রত বিধি

ISSGT শৈব সংগঠনের পক্ষ থেকে কালাষ্টমী ব্রতের বিধি আনা হল। এই ব্রতের পূজাপদ্ধতি শ্রী কৌশিক রায় শৈবজী মহাশয় সংগ্রহ করেছেন এবং সম্পাদনা করেছেন। বিশেষ সহায়তা রয়েছেন শ্রদ্ধেয় শ্রী রোহিত কুমার চৌধুরী শৈবজী মহাশয়।

🔷প্রভু কালভৈরবের প্রাথমিক পরিচয়🔷

🔴ভৈরব কথার অর্থ – যিনি সমস্ত জগতকে ভরণ করছেন তিনিই ভৈরব। ইনিই কালকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখেন তাই ইনি কালভৈরব নামে বিখ্যাত।

ভগবান কালভৈরব হলেন স্বয়ং পরমেশ্বর শিবের একটি ভীষন উগ্র স্বরূপ। পরমেশ্বর শিবের স্বরূপ থেকে প্রকটিত হয়ে প্রভু শিবের আদেশে ভগবান কালভৈরব প্রজাপতি ব্রহ্মার অহংকারী পঞ্চমমুণ্ডু কেটে ফেলেছিলেন। এরপর তিনি প্রভু শিবের নির্দেশে সেই ব্রহ্মার পঞ্চম কপালটি নিজের হস্তেই ধারণ করেন এবং কাশীতে অবস্থান করে কাশীর অধিনায়ক হিসেবে অবস্থান করেন। এছাড়া শাস্ত্রে ভগবান কালভৈরবের আরো বিভিন্ন স্বরূপ আছে (বটুক ভৈরব,রুরু ভৈরব প্রভৃতি সহ অষ্টভৈরব)।

🔵কালাষ্টমী ব্রতের ফল – ভগবান কালভৈরবের এই ব্রত পালন করলে ভূত,প্রেত,পিশাচ সহ কোনো অপদেবতা ব্রতকারীর কোনো অনিষ্ট করতে পারেনা, ব্রতকারীর উপরে প্রয়োগ করা সমস্ত জাদুটোনাক্রিয়া প্রভাবহীন হয়ে যায়, সমস্ত গ্রহ দোষ থেকে মুক্তি মেলে, বিশেষত রাহু কেতুর বক্রদৃষ্টি থেকে মুক্তি মেলে।গৃহে সুখশান্তি বজায় থাকে এবং শুভশক্তির আগমন ঘটে। বাবা কালভৈরব সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাশক। তাই তাকে ভজনা করা প্রত্যেক শিবভক্ত শৈবের আবশ্যক কার্য।

✅ব্রতের দিনক্ষন – শাস্ত্রমতে প্রত্যেক মাসের উভয় পক্ষের অষ্টমীতে ভগবান কালভৈরবের ব্রত পালন করতে হয়।লৌকিক মতে, শুধুমাত্র কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমীতে এই ব্রত পালন করতে হয়। এছাড়া যে কোনো মঙ্গলবার, যেকোনো চতুর্দশীতেও বাবা কালভৈরবের পূজা করতে পারেন।

🔴পূজার বিশেষ উৎসবের তিথি – অগ্রহায়ণ মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে পরমেশ্বর মহাদেবের থেকে তার একটি স্বরূপ কালভৈরবজীর আবির্ভাব ঘটেছিল। তাই এই বিশেষ দিনে সারা রাত জেগে ভগবান কালভৈরবজীর আরাধনা করা উচিত।ফলে বাবা কালভৈরব অতি প্রসন্ন হয়ে ভোগ, মোক্ষ, অর্থ ও সুরক্ষা প্রদান করেন।

✅কালাষ্টমী ব্রতের উপকরণ –

১)কালভৈরব ভগবানের একটি চিত্র
২) আটা দিয়ে বানানো তিনটি দীপ
৩) ঘি
৪) মাষকলাই
৫) গুগ্গল ধূপ (অন্য কোনো ধূপ ব্যবহার করবেন না)
৬)কিছু মিষ্টান্ন (গুড়, চিনি ইত্যাদি)
৭) আটার মিষ্টি রুটি (আপনার সাধ্যমতো)
৮) লাল বর্ণের ফুল ও অপরাজিতা ফুল(নীলকন্ঠ)
৯) বেলপাতা(চন্দন সহ)
১০) পানীয় জল সহ গ্লাস
১১) দুধ
১২) লাল বর্ণের আসন
১৩) কর্পূর
১৪) অক্ষত (গোটা আতপ চাল কয়েকটি)
১৫) দুটি ছোট ছোট কালো কাপড়
১৬) একটি গোটা নারকেল(ছোবড়া ছাড়ানো)

🔴ভগবান কালভৈরবের ছবি ডাউনলোড করে নিয়ে প্রিন্ট করে নিতে পারেন। ডাউনলোড করুন এখান থেকে 👇

ভগবান কালভৈরব

✅কালাষ্টমীব্রতের পূজা আরম্ভ :

🔴কালাষ্টমী পূজার জন্য করণীয় :

✅
সকালের করনীয় কর্ম :
সকালে নিদ্রাভঙ্গ করে শিবগৌরীর স্মরণ করুন হাত জোড় করে। মন্ত্র –
কর্পূর গৌরং করুণাবতারং সংসার সারম্ ভুজগেন্দ্রহারম্ ।
সদা বসন্তং হৃদয়ারবিন্দে ভবং ভবানী সহিতম্ নমামি ।।

✅এবার ব্রত সংকল্প করুন এই মন্ত্রে(অথবা সরল বাংলা ভাষাতেই বলুন) –

মন্ত্র – দেবদেব মহাদেব কালভৈরবায় নমোঽস্তু তে ।
কর্তুমিচ্ছাম্যহং দেব কালাষ্টমীব্রতং তব ॥
তব প্রভাবাদ্দেবেশ নির্বিঘ্নেন ভবেদিতি।
কামাদ্যাঃ শত্রবো মাং বৈ পীড়া কুর্বন্তু নৈব হি ॥

(অথবা এই সহজ ভাষায় সংকল্প করুন,

বলুন – দেবদেব মহাদেব হে কালভৈরব আপনাকে নমস্কার করি। হে দেব ! আমি আপনার কালাষ্টমীব্রতের অনুষ্ঠান করতে চাই। হে মহেশ্বর প্রভু কালভৈরব ! আপনার প্রভাবে এই ব্রত যেন সম্পূর্ণ নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয় এবং কামাদি শত্রু যেন আমাকে পীড়া প্রদান না করে)

উপবাসী থেকে নিত্যদিনের মতো সকালের কার্য সম্পন্ন করবেন, স্নান করবেন, তারপর শুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করবেন। ত্রিপুণ্ড্র ও রুদ্রাক্ষ ধারণ করুন। সম্ভব হলে পূজার সময় কৃষ্ণবর্ণের বস্ত্র অর্থাৎ কালো বর্ণের বস্ত্র ধারণ করবেন।


🔴সারাদিন উপবাসী থাকার পর সন্ধ্যার পর পূজার ঘরে প্রবেশ করুন। এছাড়াও শিব মন্দিরে গিয়ে শিবলিঙ্গেও কালভৈরব বাবাকে পূজা করতে পারেন।

✅গঙ্গা জল ছিটিয়ে দিন চারিদিকে ॐ নমঃ শিবায় মহামন্ত্র উচ্চারণ করে।
 প্রথমে পরমেশ্বর শিব ও মাতা পার্বতীর পূজা নিত্যদিনের মতো সেরে নিন।

✅এবার ভগবান কালভৈরব বাবার চিত্র বা বিগ্রহ অথবা শিবলিঙ্গকে একটি কালো কাপড় দিয়ে উত্তরীয় হিসেবে পরিয়ে পেছন দিক থেকে ঢেকে জড়িয়ে দিন।

✅এবার বাবা কালভৈরবের ছবিটি একটি লাল রঙের আসনের উপর উত্তর দিকে বসিয়ে দিন (শিবলিঙ্গতে পূজা করলেও লালবর্ণের কাপড়ের উপরেই উত্তর দিকে বসাবেন)।

✅ ফুলের মালা পড়িয়ে দিতে পারেন এই মন্ত্র উচ্চারণ 👇

ॐ নমঃ ভগবতে কালভৈরবায় ॥ নমঃ শিবায় , গন্ধপুষ্পমাল্য সমর্পয়ামি ।

(বারংবার কালভৈরব বাবাকে স্পর্শ করবেন না, তিনি স্পর্শ অপছন্দ করেন, তাই ওনাকে একবার আসনে স্থাপন করার পর আর স্পর্শ করবেন না, ফুলবেলপাতা এবং অনান্য উপাচার ওনার চরণের কাছে অর্পণ করবেন স্পর্শরহিত ভাবে)

✅এবার গুগ্গল ধূপ ও আটার বানানো তিনটি দীপ ঘি দিয়ে জ্বালিয়ে নিন কালভৈরব গায়ত্রি মন্ত্র পাঠ করতে করতে 👉 ॐ কালাকালায় বিদ্মহে ।
কালাঅথীথায়া ধীমহি ।
তন্নো কাল ভৈরবা প্রচোদয়াৎ ॥

✅ এক এক করে দুধ, আটার কয়েকটি মিষ্টিরুটি, পানীয় জলে একটু গুড় ও খুবই সামান্য কর্পূর মিশিয়ে গ্লাস নিজের হাতে ধরে কালভৈরব বাবার সামনে তুলে ধরে ভক্তিসহকারে সমর্পন করুন এই মন্ত্রটি পাঠ করতে করতে 👉 ॐ কালরাজার্পণমস্তু ॐ কালভৈরবায় নমঃ ॥
(এবার দুধের পাত্র, ভোগের থালা ও জলের গ্লাস বাবার সামনে রেখে দিন)

✅লালফুল ও অপরাজিতা ফুল চন্দন সহ বেলপাতা যুক্ত করে হাতে নিয়ে কালভৈরব বাবার চরণে ভক্তিসহকারে অর্পণ করুন এই মন্ত্র পাঠ করতে করতে👉 ॐ নমঃ ভগবতে কালভৈরবায় ॥ নমঃ শিবায় 

 ✅ এবার কালো কাপড়ে জড়ানো নারকেল টি বাবা কালভৈরবকে সমর্পন করুন এই মন্ত্র পাঠ করতে করতে👉 ॐ কাশিকাপুরনায়কায় নমঃ ॥ নমঃ শিবায় 

✅ এবার ভক্তিসহকারে অক্ষত হিসেবে কয়েকটি গোটা আতপ চাল প্রদান করুন বাবার চরণে, এই মন্ত্র পাঠ করতে করতে 👉 ॐ কপালমোচনানন্তায় নমঃ ॥ নমঃ শিবায় 

✅অতপর, মাষকলাই হাতে নিয়ে বাবার চরণে অর্পণ করুন এই মন্ত্র পাঠ করতে করতে 👉 ॐ করালদংষ্ট্রায় নমঃ ॥ নমঃ শিবায় 

এবার হাতে একটি ফুল নিয়ে নিম্নোক্ত ধ্যানমন্ত্র পাঠ করে ভগবান কালভৈরবের ধ্যান করুন(পাঁচ মিনিট) - 

বন্দে নাথং স্ফটিক সদৃশং ভৈরবং আসিতাঙ্গং

দিব্যা কল্পৌর্ নবমণিময়ৈঃ কিঙ্কিণী-নূপুর রাঢ়্যৈঃ ॥

দিপ্তাকারং বিশদবদনং সুপ্রসন্নং ত্রিনেত্রং

হস্তা গ্রাভ্যাং সুদৃ‌ঢ় বপুষং শূল-দণ্ডোপধানম্ 

করকলি তকপালঃ কুণ্ডলী দণ্ডোপাণি-স্তরুণ-তিমির-নীলব্যাল-যজ্ঞ উপবীতী ।

ক্রতু-সময়-সপর্য্যা-বিঘ্নবিচ্ছেদ-হেতুর্ জয়তি 

বিরুদনাথঃ সিদ্ধিদো ভৈরবাখ্যঃ ॥

ॐ শ্রী কালভৈরবায় নমঃ শিবায় ॥

অতপর সেই হাতের নেয়া ফুলটি নিজের মাথায় রেখে দিন ।

✅কর্পূর জ্বালিয়ে আরতি করুন এই মন্ত্র পাঠ করতে করতে 👉 ॐ কালভৈরবায় নমঃ শিবায় , কর্পূর আরতি সমর্পয়ামি ॥

✅গুগ্গলের ধূপ দিয়ে আরতি করুন এই মন্ত্র পাঠ করতে করতে 👉 ॐ কপালিনে নমঃ শিবায় ॥
(এই ধূপটির ধোয়া ঘরে ছড়িয়ে দেবেন)

✅এবার রুদ্রাক্ষের মালাতে অথবা হাতের  শৈবমালাতে ১০৮ বার ভগবান কালভৈরবের মন্ত্র জপ করুন 👉 ॐ হ্রীং বটুকায় আপদ উদ্ধারণায় কুরু কুরু বটুকায় হ্রীং ॥

 (মন্ত্রটি রুদ্রযামল থেকে সংগৃহীত)

অথবা সহজ ভাবে এই মন্ত্রের জপ করুন👉 ॐ কালভৈরবায় নমঃ ॥

✅জপ শেষ করে কালভৈরব চালিশা পাঠ করবেন।

🔥কালভৈরব চালিশা পাঠ করুন এখানে ক্লিক করে 

👉শ্রীশ্রীকালভৈরব চালিসা

🔴এরপর যদি সম্ভব হয় তবে বাবা কালভৈরবের অষ্টোত্তরশতনামের জপ করবেন।

এখানে ক্লিক করে কালভৈরব ১০৮ নাম পাঠ করুন

 👉শ্রীশ্রীকালভৈরব অষ্টোত্তরশতনাম


🟣 শ্রীশ্রীভৈরব স্তোত্র পাঠ করতে পারেন

👉 শ্রীশ্রীভৈরব স্তোত্র (শৈবাচার্য অভিনব গুপ্তজীকৃত)


✅ এবার ভগবান কালভৈরব বাবার কাছে ভক্তিযুক্ত মনে সহজ সরলভাবে প্রার্থনা করে বলুন :

 হে প্রভু কালভৈরব !
হে কালরুদ্র !

হে কালরাজ !

হে কাশিকাধীপতি !
হে শিবস্বরূপ ভৈরবদেব ! আমি ভক্তিসহকারে আমার সাধ্য মতো যেমন ভাবে আপনার আরাধনা করেছি তাতে কোনো ত্রুটি থাকলে তা আপনি মার্জনা করুন প্রভু এবং আপনি কৃপা করে আমার ব্রত সম্পূর্ণ করে দিন। আমি আপনার শরণাপন্ন হলাম। আপনি আমার সমস্ত বিপদ দূর করুন, আমার সমস্ত পাপ নাশ করুন, আমার গৃহকে সমস্ত আপদ থেকে মুক্ত করুন, আমার হৃদয়ে যেন সর্বদা শিবভক্তি প্রকাশিত হয়, আপনি আমাকে এই আশীর্বাদ করুন ॥ হে কালরাজ ! আপনার চরণে আমি নিজেকে সমর্পণ করছি, আপনি আমার উপর প্রসন্ন হয়ে আমাকে সর্বদা কৃপা করুন।

আমাকে সমস্ত ভূত প্রেতাদি অপদেবতাদের কবল থেকে উদ্ধার করুন, মারণ, উচ্চাটন, বশীকরণ স্তম্ভন বিদ্বেষন আদি সমস্ত অশুভ প্রয়োগ থেকে আমাকে রক্ষা করুন, সমস্ত গ্রহ নক্ষত্রের অশুভ দৃষ্টি থেকে আমাকে সর্বদা আমাকে রক্ষা করুন
আমাকে রক্ষা করুন
আমাকে রক্ষা করুন ॥

 ॐ নমঃ শিবায় ॥

ॐ নমঃ শিবায় ॥

ॐ নমঃ শিবায় ॥

✅এবার ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে পনেরো মিনিটের জন্য সকলে পূজার ঘর থেকে বেরিয়ে যান। তারপর ঘরে প্রবেশ করে ঘণ্টা বাজিয়ে শাখ বাজিয়ে মহাভোগ প্রসাদ নামিয়ে নিন।

✅ওই প্রসাদের থেকে কিছু অংশ (আটার মিষ্টি রুটি) ও কিছুটা দুধ সর্বপ্রথম কোনো একটি কুকুর কে খেতে দিন। এতে বাবা কালভৈরব অতি প্রসন্ন হন। কারণ কুকুর হল বাবা কালভৈরবের বাহন। তারপর নিজেরা মহাপ্রসাদ গ্রহণ করুন।

✅যে পানীয় জল টি বাবা কালভৈরবকে অর্পন করেছিলেন সেটির কিছুটা নিজেরা গ্রহণ করুন ও কিছুটা সমস্ত ঘর বাড়িতে ছিটিয়ে দিন প্রভু কালভৈরব কে স্মরণ করতে করতে। এতে সমস্ত অপদেবতার প্রভাব লুপ্ত হয়।

(বিশেষ দিনের ক্ষেত্রে পালনীয় রীতিনীতি – অগ্রহায়ণ মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে এই কালাষ্টমীব্রত পালন করে সারা রাত্রি জাগরণ করে কালভৈরব বাবার ভজন করবেন, শিবমহাপুরাণের শতরুদ্রসংহিতার ৮ ও ৯অধ্যায়ের ভৈরবগাথা অধ্যয়ন করবেন, জপ করবেন)

॥ কালাষ্টমীব্রত বিধি সমাপ্ত ॥

🔵বিশেষ কারণের জন্য বিশেষ ফল পাওয়ার জন্য নীচে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন ভাবে পূজার নিয়মাবলী দেয়া হল। নিজের প্রয়োজন হিসেবে নীচের একটি পদ্ধতি অনুসরণ করবেন।


🔴প্রথম পদ্ধতি🔴
ভয় নাশক কাল ভৈরব মন্ত্র –

দক্ষিণদিকে আপনার মুখ রেখে বসুন। মাষকলাই এর ডাল কালভৈরব জী কে অর্পন করুন, পুষ্প,অক্ষত,ধূপ,দীপ দিয়ে পূজা করুন, রুদ্রাক্ষের মালা ১০৮বার করে তে ৬মালা জপ করুন, এই মন্ত্র পাঠ করতে করতে 👉ॐ ভং ভৈরবায় আপদ্দুদারানায় ভয়ং হন ॥

🔴দ্বিতীয় পদ্ধতি🔴
শত্রুনাশক কাল ভৈরব মন্ত্র 

পশ্চিমদিকে আপনার মুখ রেখে বসুন। নারকেলকে কালো কাপড়ে জড়িয়ে কালভৈরব জী কে অর্পন করুন। গুগ্গুলের ধুনো জ্বালিয়ে রুদ্রাক্ষের মালাতে ১০৮বার করে ৫ মালা জপ করুন, এই মন্ত্র পাঠ করতে করতে👉ॐ ভং ভৈরবায় আপদ্দুদারানায় শত্রু নাশং কুরু ॥

🔴তৃতীয় পদ্ধতি🔴
জাদু টোনা নাশক কালভৈরব মন্ত্র –

দক্ষিণদিকে আপনার মুখ রেখে বসুন। আটা দিয়ে তিনটে দীপ তৈরি করুন এবং সেটি ঘি দিয়ে প্রজ্বলিত করুন, কর্পূর জ্বালিয়ে আরতী করুন। রুদ্রাক্ষের মালাতে ১০৮বার করে ৭মালা জপ করুন, এই মন্ত্র পাঠ করতে করতে 👉ॐ ভং ভৈরবায় আপদ্দুদারানায় তন্ত্র বাধাম নাশয় নাশায় ॥

🔥নিম্নোক্ত ৩টি মন্ত্র উপরোক্ত মূল কালাষ্টমীব্রত পূজার সময় জপ করতে পারেন।

১) মনোকামনা পূরক কালভৈরব মন্ত্র – ॐ নমো ভৈরবায় স্বাহা ॥

২) পাপ বিনাশক কালভৈরব মন্ত্র – ॐ হ্রীং বটুক শাপম্ বিমোচয় বিমোচয় হ্রীং ক্লীং ॥

৩) মঙ্গল দোষ দূর করার ভৈরব সিদ্ধ মন্ত্র –
ধর্মধ্বজং শঙ্কররূপমেকং শরণ্যমিত্থং ভুবনেষু সিদ্ধম্ ।
দ্বিজেন্দ্র পূজ্যং বিমলং ত্রিনেত্রং শ্রী ভৈরবং তং শরণং প্রপদ্যে ॥

🔴গৃহকে সুরক্ষিত রাখতে “শ্রী কালভৈরব যন্ত্র” – এর ছবি প্রিন্ট করে নিয়ে কালভৈরবজীর সামনে রেখে তার উপর পুজো করুন ব্রতের দিন এবং ছবিটি গৃহের প্রধান প্রবেশ দ্বারের উপরে টানিয়ে দিন।
এই যন্ত্রটি ফুল দিয়ে পূজা করবেন, গুগ্গলের ধুপ ও দীপ দিয়ে আরতি করবেন মন্ত্র পাঠ করতে করতে।
মন্ত্র👉 ॐ ভং ভৈরবায় আপদ উদ্ধারণায় কুরু কুরু ভৈরবায় ভং ফট্ স্বাহা ॥

এখানে ক্লিক করে “শ্রী কালভৈরব যন্ত্র” – এর ছবিটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করিয়ে নিন👇



শ্রী কালভৈরব যন্ত্র” – এর ছবি

🔴খাদ্য খাবারের বিষয় : ব্রতের দিন সকাল থেকে উপবাসী থেকে সন্ধ্যায় কালাষ্টমী ব্রতের পূজা সম্পন্ন হওয়ার পর রাতে নিরামিষ খাদ্য গ্রহণ করতে পারবেন। পরদিন থেকে নিজের নিত্য দিনের মতো খাদ্য গ্রহণ করতে পারবেন।
🔵বিশেষ দিনের জন্য নির্দেশ – অগ্রহায়ণ মাসের কৃষ্ণ পক্ষের তিথিতে সন্ধ্যা বা রাতে পূজা করার পর নিরামিষ খাদ্য গ্রহণ করেই সারারাত্রি জাগরণ করতে পারবেন।

☝যে সমস্ত অপকর্ম থেকে বিরত থাকবেন :
১)মিথ্যাচার করবেন না,
২)বাজে চিন্তা করবেন না,
৩)বাজে ভাষা প্রয়োগ করবেন না,
৪)কারোর অপকার করবেন না,
৫)মাদকদ্রব্য সেবন করবেন না,
৬)স্ত্রী জাতির প্রতি শ্রদ্ধা রাখবেন,
৭)পশুপাখিকে পীড়া দেবেন না অথবা হত্যা করবেন না,
৮)অকারণে বৃক্ষকে পীড়া দেবেন না,
৯)ঘর থেকে কখনো ভিক্ষুক কে খালি হাতে ফেরাবেন না,
১০)বাচ্চাদের বিরক্ত করবেন না।

🌞যা করলে আপনার ব্রতের ফল পাওয়া সহজ হবে তথা আরো বেশি ফলদায়ক হবে :
১)মাতা পিতার প্রতি বিনয়ী হয়ে তাদের শিব শিবা রূপে দেখবেন এবং তাদের সাথে সদব্যবহার করবেন,
২)পশুপাখিদের খাদ্য প্রদান করবেন,
৩)সবার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখবেন,
৪)দরিদ্র মানুষের সহায়তা করবেন প্রসন্ন ভাবে,
৫)সর্বদা শিবনাম হৃদয়ে ধারণ করে সবার উপকারের কথা চিন্তা করবেন, নচেৎ ব্রতের ফল তো নষ্ট হবেই বরং উল্টো ফল হতে পারে।

অতএব, সর্বদা জগৎ কল্যাণের চিন্তা করবেন।

॥ ॐ নমঃ শিবায় ॥

📍সংগ্রহে ও লেখনীতে – শ্রী কৌশিক রায় শৈবজী
🚩কপিরাইট ও প্রচারে – International Shiva Shakti Gyan Tirtha

© Koushik Roy. All Rights Reserved https://issgt100.blogspot.com

মন্তব্যসমূহ

  1. সুন্দর ভাবে ব্রত বিধি লিখেছেন ভক্তদের সুবিধামতো🙏
    ॐ कलभैरवाय नमः🙏

    উত্তরমুছুন
  2. অসাধারণ ব্রতবিধি লিখেছেন, জয় হউক।

    উত্তরমুছুন
  3. খুব সুন্দর লিখেছেন , মহাদেব কৃপা করুন । একটি বিষয় জানার ছিল , পূজা শেষ করার পর ওই দিন কি ফুল পুষ্প নদীতে ভাসিয়ে দিতে হবে ?

    উত্তরমুছুন
  4. ধ্যান মন্ত্র তে ভাসিতাং হবে না আসিতাং হবে

    উত্তরমুছুন
  5. আর হ্রীং এর পর ফট্ স্বাহা হবে নাহলে মন্ত্র অসম্পূর্ণ থেকে যায়।

    উত্তরমুছুন
  6. আমি বটুক ভৈরব পূজা করি
    তন্ত্র মতে
    ও বটুক ভৈরব স্ত্রোত্র পাঠ করি
    এখানে বলা আছে, রোগ, শোক
    ভয় ,চোর, সাপ , ও তন্ত্র ক্রিয়া
    ভূত প্রেত পিশাচ বা সমস্ত
    কিছু থেকে মুক্তি পাওয়া যায়

    উত্তরমুছুন
  7. আমি কি আলাদা করে কাল
    ভৈরব পূজা করতে পারি না কি
    এক ই পূজা

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমবার ব্রত বিধি ও মাহাত্ম্য (শৈবপুরাণোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ১ (মূলপূজা)

বৃহৎ শিবার্চন বিধি পুস্তক (শৈব আগমোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ২ (প্রহরপূজা)

ত্রিপু্রোৎসব দীপপ্রজ্জ্বলন রীতি – স্কন্দমহাপুরাণোক্ত