অদ্বৈত শৈব দর্শনের উপর ওপার বাংলার খিচুড়িবাদীদের দ্বারা আরোপিত শঙ্কা সমূহের খণ্ডন এবং জবাব প্রদান

কথায় আছে না গাধাকে যতই ঘাস দেওয়া হউক না কেন গাধা গাধাই থাকে। আর গাধার স্বভাব হল সে নিজেকে এবং নিজের দলকে (গাধার দল) সবজান্তা ভেবে বসে। ক্ষ্যাপা বলদ গুলোর সিং ভেঙে যাবে, তবুও চোখ বন্ধ করে ছোটাছুটি করার স্বভাব যাবে না। যে বা যারা কোনোদিন অদ্বৈত শৈব দর্শন বা অন্যান্য শৈব দর্শন সংক্রান্ত শাস্ত্র গুলি এক পাতাও পড়ে দেখেনি, তারা এসেছে প্রত্যভিজ্ঞা দর্শনের বিচার করতে। চোরের মুখে ধর্মের কাহিনী শোনার মত অবস্থা ঠিক । 

 ওপার বাংলার এইসব শৈব মত বিদ্বেষী এবং শিব বাক্যের উলঙ্ঘনকারী খ্যাঁকশিয়াল-দের দ্বারা কৃত শৈব মত এবং ISSGT এর উপর  আরোপ গুলিকে একবার দেখে নেওয়া যাক -






আমরা  জানতাম ওপার বাংলার ভোঁদরের দল ঠিক তাদের নিজস্ব সীমিত বিচারধারা দিয়ে শৈব দর্শনের বিচার করতে চলে আসবে পুরো পোস্টটি ভালো করে না পড়েই। এদের  নিজেদেরই কথার কোনো ঠিক নেই, যারা নিজেদের একবার বীরশৈব বলে আবার কখনো পাশুপত বলে আবার কখনো নিজেকে শঙ্করপন্থী স্মার্ত বলে । আসলে মাথার ঘিলু না থাকলে আর অন্যের কথা শুনে কোমর দোলালে যা হয় আর কি। যারা ৩৬ তত্ত্বের ধারণা এবং উহাদের বিশ্লেষণ, সপ্তপ্রমাতা, পঞ্চকলা, মায়া তত্ত্ব ও পরাচিতি (পরাশক্তি) এর মধ্যে ভেদ, জড় প্রকৃতিপরাপ্রকৃতি এর মধ্যে ভেদটুকু পর্যন্ত জানে না, বোঝেনা, যাদের তন্ত্র বা আগম নিয়ে একপাতাও কোনো চর্চা নেই,  সে সব পাঁঠারাই ২৪ তত্ত্ব ভিত্তিক যুক্তি দিয়ে ৩৬ তত্ত্ব ভিত্তিক ধারণাকে খণ্ডন করবার শিশুসুলভ আচরণ করে। তন্ত্র ভিত্তিক অদ্বৈতবাদ বুঝতে যেখানে বড় বড় স্কলারদের ঘাম ছুটে যায়, বাংলার বাইরের বড় বড় সংস্কৃতজ্ঞ, বৈয়াকরণিকরা,  আচার্যরা পর্যন্ত যে দর্শনকে সমীহ করে চলে, সেই প্রাচীনতম দর্শনকে বিচার করবে দুই দিন আগে ডিম ফুটে বেড়ানো ওপার বাংলার এই হাঁদারা, যাদের সঠিক বাংলা বানান জ্ঞানটুকুও পর্যন্ত নেই, খুব বড়জোর হলে এরা পড়েছে বাংলায় ছাপানো শঙ্করাচার্যের দর্শনভিত্তিক কিছু বই আর খণ্ডন-মণ্ডন মূলক কিছু পুঁথি যেগুলো দিয়ে এরা নাকি সেই অনাদি কাল থেকে চলে আসা অদ্বৈত শৈব দর্শনকে ভ্রান্ত প্রমাণ করবে, যা যুক্তি, তর্ক, দর্শন এসবের পাশাপাশি অদ্বৈত শৈব সাধকদের সাধনালব্ধ উপলব্ধির উপর আধারিত ও প্রতিষ্ঠিত ছিল। আদিশঙ্কর আচার্য এর বহু পূর্ব থেকেই যে দর্শনের অস্তিত্ব ছিল, আচার্য পরম্পরা ছিল, যার সরাসরি উল্লেখ মহামুনি ব্যাসদেব পর্যন্ত করে গিয়েছেন একাধিক শাস্ত্রে, যা সাক্ষাৎ শিববাক্য । 

আমরা জানতাম পাঁঠারা প্রতিবারের ন্যায় এবারেও আমাদের দ্বারা একাধিক প্রামাণিক শাস্ত্র থেকে আচার্য পরম্পরার মান্যতার নিরিখে প্রদত্ত রেফারেন্স গুলিকে খণ্ডন করবার দুঃসাহস দেখাবে না, বরং সেটা না পেরে নিজেদের কলুষিত এবং হিংসাপরায়ণ স্বভাব দ্বারা সাক্ষাৎ শিববাক্যের উপর কটূক্তি করবে এবং একাধিক প্রামাণিক শৈব আচার্যরা যে সিদ্ধান্ত দিয়ে গিয়েছেন ,সেগুলিকে ISSGT এর নিজস্ব সিদ্ধান্ত বলে চালিয়ে, সেগুলির বিরুদ্ধাচারণ করবে। 

পাঁঠার মত চিৎকার করা ছাড়া  শৈব শাস্ত্রের উপরে যাদের বিন্দুমাত্র দখল নেই, শৈব পরম্পরা, আচার, আগম, শৈব দর্শন সম্পর্কে যাদের ধারণা নেই তারাই শৈব আচার্যদের মান্যতাকে 'ভাট বকা ' বলবে, কারণ একটা পাঁঠা বাকিদেরকেও নিজের ন্যায় পাঁঠা মনে করে, এটাই স্বাভাবিক।

এবার এইসব পাঁঠাদের বাচালতার প্রত্যুত্তর দেওয়া যাক ---

1. " জলের মধ্যে লবণ থাকা সত্ত্বেও জল লবণহীণ " - এইরকম যুক্তি দ্বারা ব্রহ্ম, শক্তি ও মায়া এর বিচার বাটপার-রাই করবে। যারা শক্তি ও মায়ার মধ্যে পার্থক্য জানে না সেই সকল ছাগমস্তিষ্ক থেকেই এইরূপ উদ্ভট কথা বেরোবে, কারণ তন্ত্র শাস্ত্র তো এক পাতাও পড়েনি, মাথায় গোবর থাকলে যা হয় আরকি, দেবনাগরী হরফও পড়তে পারে কিনা সেটা নিয়েও সন্দেহ।

 " ব্রহ্মে মায়া প্রকৃতি অবস্থান করছে, তবুও ব্রহ্ম নির্গুণ " যদি এই কথা বলা হত তবে নাহয় সেই সিদ্ধান্ত ত্রুটিপূর্ণ হত। অদ্বৈত শৈব সিদ্ধান্তে পরাশক্তি মায়ার উর্ধ্বে, প্রকৃতির উর্ধ্বে, ইহাই শিব বাক্য, আগমের অর্থাৎ শ্রুতির সিদ্ধান্ত। পারমার্থিক পর্যায়ে মায়া, কলা, বিদ্যা, রাগ, মল, প্রকৃতি এসব কোনো কিছুরই অস্তিত্ব থাকে না, তাহলে গুণ থাকতে যাবে কোন দুঃখে। পরাশক্তিরই একটি প্রতিবিম্বিত পরিণাম হল মায়া সহ বাকি পুরো ৩৫ তত্ত্ব। এরফলে সেই প্রতিবিম্বক দর্পণ এ কিন্তু কোনরকম বিকৃতি ঘটছে না, তাই ইহা সর্বদাই শুদ্ধ চিৎ স্বরূপিনী। আর ব্রহ্মে এই শুদ্ধ, সূক্ষ্ম চিৎ স্বরূপা পরাশক্তিই অবস্থান করে, তাই ব্রহ্মও সর্বদাই গুণ রহিত। " লবণ উৎপন্ন হয় প্রস্তর বা rock থেকে। তাই জলে যদি লবণের উৎপাদক সেই প্রস্তর অবস্থান করে, তাহলেই যে সেই জল লবণাক্ত হয়ে পড়বে তার কোনো কথা নেই । কারণ সেই প্রস্তর স্বরূপ সেই পরাচিতি শক্তির প্রকৃত পক্ষে কোনো বিকৃতি ঘটে না, বিকৃতি প্রতিবিম্বিত পরিণাম ছাড়া আর কিছুই নয় "।

সুতরাং, নিজেরা আগে যুক্তির সঠিক প্রয়োগ শিখুন। অন্যের নকল করে কতদিন আর চলবেন। পরাশক্তি, পরাবিন্দু, মায়া, এদের মধ্যে ভেদ ISSGT এর কোনো নিজস্ব সিদ্ধান্ত নয়, বরং ইহাই আগমান্ত এর মত, প্রাচীন শৈব আচার্যদের বাক্য, সাক্ষাৎ মহাআপ্ত শিব বাক্য। তাই নির্গুণ ব্রহ্মে শক্তি থাকতে পারবে না, এই মত " ইচ্ছা শক্তিরুমা কুমারী " ইত্যাদি সূত্রের বিরোধী এবং একাধিক আপ্ত বাক্য বিরোধী হওয়ায় এবং আগম অর্থাৎ শ্রুতির বিরোধী হওয়ায় উহা অমান্য। তাই এই প্রসঙ্গে " লবণ জল", " চিনি ডায়াবেটিস " এই সব কুযুক্তির প্রয়োগই ত্রুটিপূর্ণ এবং হাঁদামি ছাড়া আর কিছু নয়।


2. আদি শঙ্করাচার্য পরাশক্তি, চিৎ শক্তি এসবকে মেনেছেন না মানেননি, অদ্বৈত দর্শন আর শঙ্কর দর্শন  মতে তাদের কি term , সে সব গল্প আমাদের শুনিয়ে কাজ নেই। বরং আদি শঙ্কর আচার্যকে কেন দেবী নিজে এসে শিক্ষা দিয়ে গিয়েছেন - সেটি নিয়ে আপনি আগে চিন্তা করুন। "সৌন্দর্য্যলহরী" যেখানে পুরো তন্ত্রভিত্তিক অদ্বৈতবাদ (ত্রিক শৈব দর্শন) এর উপর প্রতিষ্ঠিত,যা লক্ষ্মীধর ও আনন্দগিরির টীকা থেকেই সুস্পষ্ট,  পুরো ত্রৈপুরসিদ্ধান্ত-টাই (ত্রিপুরাসুন্দরী/শ্রীকুল) প্রাচীন কাশ্মীর ত্রিক দর্শনের উপর আধারিত, সেখানে পরাশক্তি- কে মায়া বলে চালানোটাই মূর্খামির পরাকাষ্ঠা, দুদিন আগে ডিম ফুটে বেরোনো এরা নাকি বিচার করবে সেই ত্রিক দর্শনের, যারা হাতে দুধের বোতলটাও  ঠিককরে ধরতে শেখেনি। এরা নিজেরাই খিঁচুড়িবাদী, যারা আবার অন্যকে ' ভুগিচুগি মার্কা , শৈবাস্কনী বলে ', এটা ঠিক ' চোরের মায়ের বড় গলা ' র মতো অবস্থা। 


3. " শঙ্করপন্থীরা হল শৈব " অথবা " অদ্বৈতবাদী (শঙ্কর) শৈব বা শাক্ত" - এই শব্দমালাটাই দোষযুক্ত, "সোনার পাথরবাটি"  শব্দমালাটি যেমন একটি দোষযুক্ত শব্দ ঠিক তেমনই। কারণ 'শৈব' আর 'শিব ভক্ত, শিবের উপাসক' কথাটির মধ্যে বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান। শৈব পরম্পরা, শৈব দর্শনের যারা অন্তর্গত নয়, তার শৈব হয় কিকরে? যদি তারা শৈব হিসেবে গণ্য হয় এবং দর্শন হিসেবে শৈব দর্শন বিরোধী শঙ্করমত-কে মেনে চলে, তাহলে শৈব দর্শন অনুসারীদের কি বলা হবে? এখানেই প্রশ্ন থেকে যায়। তাই এদের নিজেদের শৈব বলে ঢাক পেটানো লোকহাসানো দাবী ছাড়া আর কিছুই নয়। 


4. আর ISSGT কবে থেকে আবার ভেদবাদী হল ??  ISSGT নিজেই যেখানে অদ্বৈত শৈববাদ অর্থাৎ শিবসূত্র ভিত্তিক অদ্বৈত শৈববাদ মেনে চলে, প্রত্যভিজ্ঞা মেনে চলে, যেখানে এরা আদৌ শিবসূত্রের এক পাতাও খুলে দেখেছে কিনা সন্দেহ।  বৈষ্ণব, নব্য শাক্তদের দ্বারা শতাব্দী যাবৎ চলে আসা ভণ্ডামী এর জবাব দিলেই  আর নিজেদের আচার্যদের, দর্শনের মান্যতা অনুযায়ী চললেই কেউ ভেদবাদী হয়ে যায় না। শৈব দর্শনের মান্যতা জেনে এসে কথা বলবেন। কারণ প্রাচীন শৈব অদ্বৈত বা শৈব বিশিষ্টাদ্বৈত দর্শন এসবের সাথে তুলনামূলক অর্বাচীন শঙ্করঅদ্বৈত দর্শনের পার্থক্য রয়েছে এই কথা পূর্বেই স্পষ্ট করা হয়েছে। পুরো শঙ্করপন্থীরা যেখানে তাদের দর্শন ছাড়া বাকি অন্যান্য দর্শন-কে হেয় করে চলে, ভ্রান্ত বলে প্রচার করে, সেখানে তারা আর ভেদবাদী নয়, একাই ISSGT ভেদবাদী। আসলে বাংলায় শৈব আচার্য পরম্পরাগুলি না থাকায়, University গুলিতে তন্ত্র বা শৈব দর্শন নিয়ে কোনোরূপ চর্চা, আলাদা ডিপার্টমেন্ট না থাকার ফলস্বরূপ আজ এইসব খিচুড়িবাদী ভণ্ডরা এত আস্কারা পেয়ে গিয়েছে। দক্ষিণ ভারতের দ্বৈত বা বিশিষ্টাবাদী শৈব পরম্পরা গুলি অথবা বীরশৈব পরম্পরা  পরম্পরা গুলি  যদি বাংলায় চলত, তাহলে এদের এত বাড় বাড়ত না। সেই কারণেই দক্ষিণ ভারতের শঙ্করপন্থীরা শৈবদেরকে আর শৈব আগম গুলিকে সমীহ করে চলত, চলছে, চলবে। যে যার মত পারছে বকে যাচ্ছে আর শৈব বলে দাবী করছে, শৈব আগম, শৈব দর্শন এসব জানার, মানার, চর্চার আর বালাই নেই।


5. " ISSGT হল শৈবাস্কনী, ইস্কনী টাইপের শৈব " - এই সব কথা আরো হাস্যকর। ISSGT যদি অচিন্ত্যভেদাভেদ দর্শনের অনুগামী হত, তবেই তাদের এই দাবী মানাত। নিজেরাই যে খিচুড়ি খেয়ে, মেখে, হেগে, তার উপরেই শুয়ে অভ্যস্ত, সে আর কি জানবে ISSGT এর ব্যাপারে। ISSGT কোনো দেবতার মধ্যে ভেদ জ্ঞান করেনা, বরং সমস্ত দেবতাদের সেই এক পরমশিবেরই স্বরূপ, বিভূতি হিসেবে মানা হয়, কারণ দেহধারী প্রত্যেক প্রমাতা রূপে সেই এক পরশিবই ক্রীড়া করছেন, তাই শিবের কোনো স্বরূপ, অপর কোনো স্বরূপের থেকে ছোট বা বড় নয়, কারণ জগতের সব কিছুই শিব, যা "সর্বো বৈ রুদ্রঃ" প্রভৃতি শ্রুতিবাক্য দ্বারা সিদ্ধ।‌‌‌‌‌‌‌‌ তবে  যে সকল মত সেই শিবকে ছোট করবার চেষ্টা করে প্রতিনিয়ত, সেই সব মতের খণ্ডন করা অবশ্যই একজন শৈবের মৌলিক কর্তব্য। আর যতদূর ভেদের কথা, পারমার্থিক ব্রহ্ম এবং মল দ্বারা, মায়াপাশ দ্বারা, অজ্ঞানতার দ্বারা বদ্ধ জীব এর মধ্যে যে রূপ ব্যবহারিক ভেদ বিদ্যমান , সেই রূপ ভেদই নির্গুণ পরশিব এবং অন্যান্য সগুণ, সাকার দেহ ধারী জীব, দেবতা - যেমন ব্রহ্মা, বিষ্ণু, ইন্দ্র, অগ্নি ইত্যাদি  অসুর ইহাদের মধ্যে বিদ্যমান। কিন্তু পরমার্থত সকলেই সেই পরশিব, যা " শরীর কঞ্চুকিত জীব নিষ্কঞ্চুকিত পরশিব " ইত্যাদি সূত্র দ্বারা সিদ্ধ। 

6. আর সংস্কৃত পণ্ডিতদের কথা বাদই দিলাম। কারণ সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিতদের অভাব নেই শৈব মহলে। তবুও ইঁদুরের মত ' পণ্ডিত মহল ', ' পণ্ডিত মহল ' এসব কথার আঁচলে মুখ লুকোবার স্বভাব আমাদের নেই। ত্রিক দর্শনকে  গিলতে যেখানে বড় বড় পণ্ডিতদের ঘাম ঝরে যায়, সারাটা জীবন লেগে যায়, সেখানে বাংলার কে কি বললো তার উপর কিছুই নির্ভর করবে না। বরং 'পণ্ডিত পণ্ডিত' করে খ্যাঁকশিয়ালের মত ঝোপের পেছনে ল্যাজ গুটিয়ে বসে হুক্কাহুয়া করা ছাড়া এরা আর কিছুই করতে পারেনি, আর পারবেও না, পেছনে ভয় আছে যে।

7. আর অদ্বৈতবাদ আমরা খণ্ডাবো কেন ? ISSGT নিজেই তো অদ্বৈত ব্রহ্মবাদে বিশ্বাসী, যা শৈবাদ্বৈতবাদ। আর কেবলাদ্বৈত মতের জড় (পূর্ণ নিষ্ক্রিয়) ব্রহ্মবাদ, শৈব আগমের উপর কটাক্ষ - এই সব মতের খণ্ডন শৈব আচার্যরাই করে গিয়েছেন। সাহস থাকলে শিবদৃষ্টি, ঈশ্বর প্রত্যভিজ্ঞা, বিদ্যাস্থানবিনির্ণয়, ব্রহ্মসূত্র শ্রীকর ভাষ্য, ব্রহ্ম সূত্র শাঙ্করী বৃত্তি এসব শাস্ত্র অধ্যয়ন করে দেখুন। যেই দর্শন এর প্রতিপাদন হেতু দেবী নিজে আদি শঙ্কর আচার্যকে শিক্ষা দিয়ে গিয়েছেন, সেই দর্শনের আর নতুন করে কি খণ্ডন করবো আমরা। তবে, যে যে জায়গায় তারা শৈব মতের বিরুদ্ধে কথা তুলেছে, সেই সেই জায়গার অবশ্যই খণ্ডন করবো আমরা, যেটা আমরা অলরেডী করে রেখেছি, ব্লগেই দেওয়া রয়েছে । 

8. " শঙ্কর মতে শৈব মত, বৈষ্ণব মতের" মিলন হচ্ছে - এটা আরো বড় হাস্যকর দাবী। শিবভক্ত, বিষ্ণু ভক্ত হলেই যদি শৈব, বৈষ্ণব হওয়া যেত তাহলে তাদের আর আলাদা আলাদা শাস্ত্র, পরম্পরা, দর্শন এসব আর থাকত না। সঠিক পরম্পরাগত কোনো বৈষ্ণব বা শৈব কদাপি কদাপি এই মতের সমর্থন করেন নি, করবেনও না। দশনৌকায় পা দিয়ে হাঁটার স্বভাব শৈবদের নেই, আর যারা হাঁটে তারা কোনো শৈব নয়। তাই শৈব আগম গুলির বিরোধিতা করে, শৈব আচার্যদের সিদ্ধান্তকে নানা প্রকারের কটূক্তি করে শৈব সাজার চালিয়াতি অন্য জায়গায় দেখিও, ISSGT এর সামনে নয়।

9. শিবপুরাণ এর অনুবাদ কেন দেবো না ? যেখানে শিবপুরাণ থেকে একাধিক শ্লোক স্বপক্ষ মণ্ডন এর নিমিত্তে শব্দ প্রমাণ হিসেবে শৈব আচার্যরা ব্যবহার করেছে, সেখানে আপনার মতো গবেটের কথায় কোনো কিছু নির্ধারিত হবে না।  

আর 'মীমাংসক' বানানটি আগে ঠিক করে লিখতে শিখুন, নিজেকেই তো একটা আস্ত রামছাগল প্রমাণ করলেন দেখছি। আর কোন মীমাংসক শিবপুরাণের উক্ত শ্লোকগুলির কোন অর্থ করেছেন, কিভাবে সেগুলির মীমাংসা করেছেন সেটি শাস্ত্র প্রমাণ সহ দেখাবেন, যদি নিজে রামছাগল না হন তো। যদিও উক্ত শ্লোকগুলির  জগৎগুরু শ্রীকণ্ঠ শিবাচার্য কর্তৃক যথার্থ ব্যাখ্যা পূর্বের পোস্টেই আমরা দেখিয়েছি যা শক্তিবিশিষ্ট নির্গুণ ব্রহ্মবাদেরই প্রতিপাদন করে, যার ব্যাখ্যা ৩৬ তত্ত্ব এবং পঞ্চকলার ভিত্তিতে আচার্যরা করে গিয়েছেন। তাই মীমাংসার নামে জোর করে শাস্ত্রের মৌলিক অর্থকে বিকৃত করার চেষ্টা বৃথা।

10. আমাদের লেখা দেখা পাপ তো হবেই, কুকুরের পেটে কি আর ঘি সহ্য হয়, তার উপরে যদি সে পাগলা কুকুর হয়। আর ISSGT  এক ছুঁচও কোনো মনগড়া লেখা লেখেনি। প্রাচীন  শৈব আচার্যরা যা যা সিদ্ধান্ত দিয়ে গিয়েছেন, তাঁরা যে যে সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে শৈব মতকে প্রতিষ্ঠিত করে গিয়েছেন, সেই সব সিদ্ধান্তই ISSGT এর সিদ্ধান্ত। ছাগুদের কথাবার্তার ধরণ এমন যে ISSGT যেন কোনো নব্য সিদ্ধান্ত, দর্শন এর সূচনা করে বসে আছে। তাই দুধের বোতল ধরতে না শেখা এবং চোদ্দ দুয়ারে ঠোকর খেয়ে ঘুরে বেড়ানো টুকলিবাজ  পাবলিকদের মুখে নার্সারী, প্রাইমারি এসব কথা মানায় না। নিজের অপদার্থতা আর হিংসুটে স্বভাব এর জন্য ISSGT কে কটূক্তি করার আলোকে এরা প্রাচীন আচার্য জগৎগুরু রেণুকাচার্য, শ্রীপতি, শ্রীকণ্ঠ, অভিনবগুপ্ত, শ্রীসোমানন্দ এনাদেরকেই অপমান করছে, শিবের বাক্যকেই অপমান কটাক্ষ করে বসছে, যা জগতের সব চেয়ে ঘৃণ্য পাপ, বলদামি এর সীমা এরা অতিক্রম করে গিয়েছে ।


11. এবার আসবো শেষের Point এ। অদ্বৈতবেদান্তবাদী-রা করবে নাকি সেই অনাদি শিবসূত্র ভিত্তিক প্রত্যভিজ্ঞাবাদীদের বিচার, যেখানে সারাজীবন অধ্যয়ন করেও বড় বড় পণ্ডিতরা 'তন্ত্রালোক' কে সম্পূর্ণ বুঝতে পারে না , ছেলে করবে বাবার বিচার ! 

" ব্রহ্ম পরশিব সূক্ষ্ম চিৎশক্তি বিশিষ্ট হওয়া সত্ত্বেও যে নির্গুণ " - শৈব আচার্যরা ৩৬ তত্ত্ব এবং আগমান্ত এর উপর ভিত্তি করে যে এই সিদ্ধান্তের প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছেন, সেই সিদ্ধান্ত ও যুক্তিকে কে সরাসরি খণ্ডন করতে না পেরে, শেয়াল ফণ্ডিত বহু কষ্ট করে বাংলা কোনো পুঁথি হতে 'প্রত্যভিজ্ঞা' শব্দের অর্থ এবং উহার দুচারটে সিদ্ধান্ত জোগাড় করেছে, (নিজের তো এক শব্দও লেখবার হিম্মত নেই, বলদামি করতে পারলেই হল।) 

এরা যখন দেখল যে শক্তিকে মায়া বানিয়ে চালানোর চেষ্টা বৃথা, কারণ এনাদের আচার্য অপ্পয় দীক্ষিত-ই শ্রীকণ্ঠ ভাষ্যের টীকায় এনাদের সেই চাটুকারিতায় জল ঢেলে দিয়েছেন অনেক আগেই তাও আবার আগমের (শ্রুতি) উপর ভিত্তি করে, তাই পাছে খণ্ডিত হওয়ার লজ্জায় এরা নতুন চালাকির আশ্রয় নেয় । সে সেখানে প্রমাণ করার চেষ্টা করে যে,  জ্ঞান স্বরূপ ব্রহ্মে  ক্রিয়া শক্তি থাকতে পারে না, নচেৎ তা দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, কিন্তু ব্রহ্ম তো সর্বদা আনন্দময়, তাই ব্রহ্মে কোনো শক্তিই থাকতে পারে না।  ঘরামী হয়ে রাজমিস্ত্রির কাজে হাত দিলে যা হয় আর কি।

 এদের দাবী যে

i. ব্রহ্মের নির্বিকারত্ব ও বিকারত্ব একসাথে অসম্ভব। 

ii. জ্ঞান এবং ক্রিয়া একই সাথে উপস্থিত থাকতে পারে না।

iii. ব্রহ্মে নিস্তরঙ্গতা এবং স্পন্দ যুগপৎভাবে উপস্থিত থাকতে পারে না।

iv. ক্রিয়া সাক্ষাৎ দুঃখের কারণ , তাই ব্রহ্ম আনন্দময় হতে পারে না, যা স্বসিদ্ধান্ত বিরোধী।

(সাক্ষাৎ শিবের চেয়েও বেশি জ্ঞানী কোন অদ্বৈতবেদান্তবাদী প্রত্যভিজ্ঞা দর্শন-কে আরো উন্নত করতে বলছেন , তার শাস্ত্র প্রমাণ দেখানোর দাবী জানানো হল।)

দাবীর খণ্ডন -

যারা কোনোদিন স্পন্দশাস্ত্র, প্রত্যভিজ্ঞা শাস্ত্র এসব তো দূর শিবসূত্রও একপাতা খুলে দেখেনি, তারা এরকম ভাট বকবেই, কারণ অদ্বৈত শৈব দর্শন সম্পর্কে এক বিন্দুও ধারণা নেই যে এদের। কথা না বাড়িয়ে ওনার দাবীর খণ্ডনে আসবো।

i. ব্রহ্মে বিকার হচ্ছে এই কথা ছাগুরা প্রত্যভিজ্ঞা দর্শনের কোথায় পেয়েছে কে জানে। কারণ অদ্বৈত শৈব দর্শন পরিণামবাদে নয় বরং ব্রহ্মের অবিকৃত পরিণামবাদ (ভাস্কররায়) তথা আভাসবাদে (উৎপলদেব) বিশ্বাসী। ব্রহ্মের আবার পরিণামও রয়েছে আবার তা অবিকৃতও থাকছে! কিভাবে তা সম্ভব ?  অবশ্যই সম্ভব। " তৎসৃষ্ট্বা তদেবানুপ্রাবিশাৎ " - ইত্যাদি শ্রুতিবাক্য ব্রহ্মের বিশ্বোত্তীর্ণ ও বিশ্বময় উভয় অবস্থাকেই দর্শায়। 

কিভাবে? তাঁর ব্যাখ্যা ও যুক্তি নিম্নে উপস্থাপিত হল -

" শিবশক্তিরিতি খ্যাতং নির্বিকল্পং নিরঞ্জনম্ | অনিষ্কলং চ সকলং নীরূপং নির্বিকল্পম্ | নির্দ্বন্দ্বং পরমংতত্ত্বং শিবাখ্যং পরমং পদম্ ||পরশিবরবিকরনিকরে প্রতিফলতি বিমর্শদর্পণে বিশদে | প্রতিরুচিরুচিরে কুণ্ড্যে চিত্তময়ে নিবিশতে মহাবিন্দুঃ || ”  --- ইত্যাদি আগম বাক্যই কারণ এর সপক্ষে শব্দপ্রমাণ । সেই নির্বিকল্প, নিরঞ্জন ব্রহ্মই শিব যিনি নিজ অভিন্না শক্তির সাথে যুক্ত।  তিনি একাধারে সকল, নিষ্কল আবার নিষ্কলেরও অতীত, দ্বন্দ্ব রহিত, তিনিই সাক্ষাৎ শিব, সাক্ষাৎ পরমপদ।  পরমশিবঅনুত্তর ভট্টারক যখন সূর্যকিরণতূল্য নিজের প্রকাশময়তাকে (সৎ) নিজেরই বিমর্শময়ী হৃদয়-দর্পণে বা চিত্তে (চিৎ)প্রতিফলিত করেন তখন সেই দর্পণচিত্তে মহাবিন্দুর (আনন্দ) অবির্ভাব হয়। এই প্রতিবিম্বিত মহাবিন্দুই ৩৬ তত্ত্বাত্মক জগতে হিসেবে ভাসিত হয়। সুতরাং ব্রহ্মের অভ্যন্তরেই তাঁর কুটস্থ পরাচিৎ শক্তি স্বরূপ দর্পণে জগৎ ভাসিত হচ্ছে, প্রতিবিম্বিত হচ্ছে, ব্রহ্ম মূলত অবিকৃতই থাকছে

এই সমগ্র বিশ্ব বিশ্বনাথ ভৈরবের (অর্থাৎ শিবের) চিৎ-তত্ত্বাত্মক চিদাকাশরূপি স্বচ্ছ অম্বরে ( আকাশ বা পরমাকাশ বা বিমর্শ পরাচিৎ দর্পণ) প্রতিবিম্ব হিসেবেই প্রতিভাত হয়।  প্রতিবিম্ব যেমন দর্পণে কোনো কলঙ্ক বা রেখার দাগ ফেলে না তাই জীব ও জগৎ দ্বারাও সেই পরমশিবের উপর কোনো কলঙ্ক বা প্রভাব পড়ে না শিবকে জগৎসৃষ্টির জন্য শুধু তাঁর ইচ্ছাশক্তির প্রয়োগ করতে হয় মাত্র, কোনো গৌণ কারনের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না - যা " ইত্যং বিশ্বমিদং নাথে ভৈরবীয়চিদম্বরে | প্রতিবিম্বমলং স্বচ্ছে ন খল্বন্যপ্রসাদতঃ ||" -- ইত্যাদি আগম বাক্য দ্বারা সিদ্ধ।


" তস্য ভাসা সর্বমিদং" - উক্ত শ্রুতি বাক্যেই তো আভাসবাদের উল্লেখ পাওয়া যাচ্ছে। 'ভাসা' অর্থাৎ আভাস, সমগ্র জগৎ সেই শিবেরই আভাস, মিথ্যে অধ্যাস বা বিবর্ত নয়। ত্রিক দর্শনের অন্যতম সিদ্ধান্তই হচ্ছে আভাসবাদ

ব্যবহারিক জগৎ সেই পরমেশ্বর শিবেরই বিমর্শ হৃদয় দর্পণে অবভাসন মাত্র। পরমশিব তাঁর স্বাতন্ত্র্য শক্তি স্বরূপা এই হৃদয়েই যখন নিজেকে দেখবার ঈক্ষণ/সিসৃক্ষা প্রকাশ করেন - " একো অহং বহু স্যাং " , তখনই সেই দর্পণে ৩৬ তত্ত্বময় সমগ্র জগৎ প্রতিবিম্বিত হয়, অবভাসিত হয়। আর আনন্দ স্বরূপ প্রতিবিম্ব সেই চিত্র (জগৎ) আসলেই, প্রকৃতপক্ষে সেই চিৎ-দর্পণ হতে ভিন্ন অপর কিছু নয়, তাই সেই প্রতিবিম্বও সত্য কারণ উহা মূলত দর্পণই, তাই এই জগৎ সাক্ষাৎ শিবের সেই স্বাতন্ত্র্য শক্তিই মূলত। এই সূক্ষ্ম বিমর্শ - চিৎ শক্তির থেকে পরমেশ্বর আলাদা নন , তাই ব্যবহারিক জগৎও সেই পরমেশ্বরের থেকে ভিন্ন নন, বরং পরমেশ্বরের হৃদয় দর্পণেই তা প্রতিবিম্বিত , যা " বিশ্বং ভূতং ভুবনং চিত্রং বহুধা জাতং জায়মানশ্চ যৎ | সর্বো হ্যেষ রুদ্রস্তস্মৈ রুদ্রায় নমো অস্তু || " ইত্যাদি শ্রুতি দ্বারা সিদ্ধ।


পরমশিবে যখন জগৎ সৃষ্টির সিসৃক্ষা জন্মায়, তথন‌‌ তিনি একাধারে বিশ্বোত্তীর্ণ, অবিকৃত থেকেও, একই সাথে নিজ শক্তির দ্বারা বিশ্বময় অবস্থায় ভাসিত হচ্ছেন ইহাই ' আভাসবাদ'। এই আভাস মিথ্যে হিসেবে প্রতীয়মান হলেই আসলেই সত্য। এই 36 তত্ত্বময় জগৎ সেই অবিকৃত পরমশিবের অভ্যন্তরেই অবস্থিত আভাস হিসেবে, শক্তির প্রতিবিম্বিত পরিণাম/প্রসারণ হিসেবে, যা মূল দর্পণকে অবিকৃতই রাখছে। তাই জগৎ বস্তুত সত্য।

ii. " জ্ঞান ও ক্রিয়া যুগপৎভাবে  ব্রহ্মে উপস্থিত থাকতে পারে না " - পূর্বপক্ষের উক্ত দাবী জ্ঞান ও ক্রিয়া শক্তির পৃথক পৃথক সত্ত্বা এর নির্বাহক। কিন্তু প্রত্যভিজ্ঞা মতে পরমার্থত চিৎ শক্তি, আনন্দ শক্তি, ইচ্ছা শক্তি, জ্ঞান শক্তি ও ক্রিয়া শক্তি কোনো পৃথক শক্তিই নয়, বরং এক শক্তিরই বিভিন্ন পর্যায়গত নাম মাত্র যা, " সুসূক্ষ্মশক্তিত্রিতযসামরস্যেন বর্ততে "(শিবদৃষ্টি), "চিদ্রুপাহ্লাদপরমো নির্বিভাগঃ", (শিবদৃষ্টি), "পরাঽস্য শক্তির্বিবিধৈব জ্ঞানবলক্রিযা চ " (শ্বেতাঃউঃ) প্রভৃতি বাক্য দ্বারা সিদ্ধ। পরমেশ্বরের সেই এক স্বাতন্ত্র্য পরাশক্তিই যেহেতু ব্যবহারিকে ইচ্ছা, জ্ঞান, ক্রিয়া, আনন্দ ইত্যাদি স্বরূপে ভাসিত হন, তাই মূল সেই এক পরাশক্তিই ইচ্ছা, জ্ঞান, ক্রিয়া স্বরূপ, আর যেহেতু পরমেশ্বর পরমশিব নিজের সেই পরাশক্তি এর থেকে অভিন্ন, তাই ব্রহ্মও সেই অর্থে ইচ্ছা-জ্ঞান-ক্রিয়া লক্ষণ যুক্ত ঠিক যেমন একটি সুপ্ত বীজেও উদ্ভিদাকারে স্ফুরিত হওয়ার লক্ষণ বিদ্যমান এবং সেই উদ্ভিদই একসময় বিভিন্ন শাখা প্রশাখায় বিভক্ত হয় , যা ব্যবহারিক পর্যায়কেই দর্শায়।।

iii. সেই এক ব্রহ্মে স্পন্দতা ও নিস্তরঙ্গতার উপস্থিতি কিভাবে একসাথে সম্ভব ? সম্ভব, পর্যায়ভেদে। এর জন্য স্পন্দ দর্শন সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকাটা দরকার, যা ওপার বাংলার ছাগমুণ্ড ধারণকারী পশুদের নেই। স্পন্দবাদ মতে ব্রহ্মের পারমার্থিক নিস্তরঙ্গতাও এক ধরণের স্পন্দ, যা 'সামান্য স্পন্দ ' অবস্থা বা ' পরং বিশ্রান্তি স্থান ' অবস্থা হিসেবে অভিহিত, ইহাই আচার্য জয়রথের অভিমত। এই অবস্থাই " মহাকাশে প্রলীনশশিভাস্করে সৌষুপ্তপদবন্মূঢ়ঃ প্রবুদ্ধঃ " ইত্যাদি স্পন্দসূত্র দ্বারা ব্যক্ত হয়েছে। ইহাই পরমেশ্বরের বিশ্বোত্তীর্ণ স্বরূপ। তাঁর মনে জগৎ সৃষ্টির নিমিত্তে সেই সুপ্ত চিৎ শক্তির যখন ইচ্ছাশক্তি রূপে যখন জাগরণ ঘটে ("একো অহং বহু স্যাং প্রজাযতি" - ইত্যাদি শ্রুতি বাক্য সেই ইচ্ছাসৃষ্টিবাদের প্রতিপাদক), সেই উল্লাস হল - 'বিশেষ স্পন্দ' বা 'ঔন্মুখ স্পন্দ' বা 'বিমর্শ সম্বিৎ স্পন্দ'। সাগরের উর্মিই বিশেষ স্পন্দ অবস্থা এবং সাগরের প্রশান্ত নিস্তরঙ্গতাই সামান্য স্পন্দ অবস্থা, তাই সাগরে যেই রূপ একই সাথে উভয় অবস্থাই বিদ্যমান সেই রূপ পরমশিবেও।

iv. ক্রিয়াশক্তি অর্থাৎ ব্রহ্মের ক্রিয়া স্বাভাবিক হলে, তা দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, যা নাকি " ন দুঃখং " ইত্যাদি স্বসিদ্ধান্ত এর বিরুদ্ধ হয়ে পড়ে। আসলে স্পন্দকারিকা, স্পন্দকারিকাবৃত্তি, স্পন্দপ্রদীপিকা, স্পন্দসন্দোহ, স্পন্দসর্বস্ব, স্পন্দবিবৃতি এসব শাস্ত্র না অধ্যয়ন করেই,  বাংলায় ছাপা দুপাতা পুঁথি অধ্যয়ন করে স্পন্দ-প্রত্যভিজ্ঞাবাদী-দের বিচার করতে আসলে এরকমই ল্যাজে গোবরে অবস্থা হয়ে দাঁড়াবে।  

দেখে নেই স্পন্দকারিকা আসলেই কি ব্যক্ত করছে -

" ন দুঃখং ন সুখং যত্র ন গ্রাহ্যো গ্রাহকো ন চ |

ন চাস্তিমূঢ়ভাবোঽপি তদস্তি পরমার্থতঃ || (স্পন্দকারিকা/১/৫)

পারমার্থিক ব্রহ্মে যদি সুখ বিদ্যমান না থাকে, তবে তা আনন্দময় কি করে হবে ? এটাও প্রশ্ন উঠতে পারে বিরোধী মহল অর্থাৎ পূর্বপক্ষ থেকে। 

এখন আলোচ্য সূত্রের অর্থ ও ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে আসা যাক - 

সামান্য স্পন্দস্বরূপ (নিস্তরঙ্গ) সেই পারমার্থিক ব্রহ্মে কোনো রূপ সুখ, দুঃখ, গ্রাহ্য, গ্রাহক, মূঢ়তা এসব থাকতে পারে না। এক্ষেত্রে জাগতিক সুখ, দুঃখের কথা বলা হয়েছে এবং ব্রহ্ম সর্বদাই জাগতিক সুখ, দুঃখ এসবের উর্ধ্বে। কারণ আচার্য ভট্ট কল্লট তাঁর স্পন্দকারিকাবৃত্তি তে উপরিউক্ত কারিকার ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে স্পষ্টভাবেই বলছেন - "সুখাদযঃ পুনঃ সংকল্পোৎথাঃ ক্ষণভঙ্গুরা আত্মস্বরূপবাহ্যা" - সুখ, দুঃখ ইত্যাদি  জীবের মানসিক সংকল্পের দরুণ সৃষ্ট, ইহা ক্ষণভঙ্গুর , ইহা আত্মার বাস্তবিক স্বরূপ হতে বাহ্য। পরমেশ্বরের স্বাতন্ত্র্য শক্তি মূলত একাধারে অবিকৃত থেকেই, নিজের মধ্যেই ৩৬ তত্ত্বাত্বক জগৎ রূপে ভাসিত হন (যার ব্যাখ্যা পূর্বেই করা হয়েছে), এই ব্যবহারিক জগতে সেই শক্তি অবরোহণ ক্রমে মায়া, প্রকৃতি, অন্তঃকরণ স্বরূপে ভাসিত হন। এই অন্তঃকরণ জীবের সুখ, দুঃখ এসবের কারণ। 

এ প্রসঙ্গে প্রত্যভিজ্ঞাবাদী আচার্য্যগণ বলেন - 

" ক্রীড়যা দুঃখবেদ্যানি কর্মকারিণী তৎফলৈঃ | ... তথা নরকার্ণবগহ্বরে নিবাসীনি শরীরাণি গৃহ্ণাতি পরমেশ্বরঃ | যথা নৃপঃ সার্বভৌমঃ প্রভাবামোদভাবিতঃ | ক্রীডন্ করোতি ... প্রভুঃ প্রমোদাত্মা ক্রীডত্বেবং তথা তথা || শিবো বোধমযঃ স এব পরনির্বৃতিঃ পূর্ণো নিরপেক্ষ আনন্দাত্মা সদৈব |সৈব চোন্মুখতাং যাতি সেচ্ছাজ্ঞানক্রিযাৎমতাম্ |সৈব শাক্তশরীরাদিনারকান্তং হি ভূততা | পদার্থত্বেন ভগবান্ সর্বত্রৈব তদাৎমতা | " 

অর্থাৎ পরমশিব ব্রহ্ম সর্বদাই নিরপেক্ষ, অখণ্ড, জ্ঞানস্বরূপ, পরনির্বৃতি অর্থাৎ আনন্দস্বরূপ। সেই পরমশিবেরই ক্রীড়াস্বভাব অভিব্যক্তি এই বিশ্বপ্রপঞ্চ। জগতে দুঃখ ভোগকারী, বেদনাদায়ক কর্মকারী এবং কর্মফল এর ভোক্তা স্বরূপে নরকাদি লোকে নিবাসকারী, পাপাত্মক শরীর এর ধারণকারী প্রত্যেকেই সেই পরমেশ্বরই বটে। সমস্ত আনন্দ ও ঐশ্বর্য এর ভোগকারী  রাজা যেরূপ নিজ আনন্দময় ভাবনার দ্বারা প্রেরিত হয়ে  হেঁটে চলা সাধারণ পথিকের ন্যায় আচরণ করে থাকেন, সেই রূপ আনন্দময় ব্রহ্ম পরমশিব আনন্দোল্লাস এর কারণ নিজে একাধারে অবিকৃত থেকেই নিজের ই মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন প্রমাতা তথা জীব স্বরূপ ধারণ করে ভাসিত হন এবং তৎরূপ আচরণ করেন, সুখ, দুঃখ আদি ভোগ করেন। কিন্তু পরমার্থত সব কিছুই সেই এক শিবই - " স এব আত্মা সর্বদেহব্যাপকত্বেন বর্ততে |", জাগতিক বিকৃতি প্রতিবিম্বের ন্যায়, যা দর্পণে কোনরূপ বিকৃতি আনতে পারে না, তাই পরমশিবের আনন্দৈক্যঘনতা-র কোনোরূপ বিচ্যূ্তি ঘটে না, যা " সুখাসুখযোর্বহির্মননম্ " ইত্যাদি শিবসূত্র দ্বারা প্রমাণিত।

তাই পরমার্থত ব্রহ্মের আনন্দময়তা, হর্ষতাই ক্রীড়ার নিমিত্ত, যা " হর্ষানুসারী স্পন্দ ক্রীড়াঃ " প্রভৃতি সূত্র দ্বারা সিদ্ধ। 

প্রত্যভিজ্ঞাবাদী শৈব আচার্যরাও তাই শক্তিহীন জড়-শান্ত ব্রহ্মবাদী-দের দর্শনকে উন্নত করার নিমিত্তে তাঁদের উদ্দ্যেশে বলেছেন - " সংবিত্তি শূণ্য ব্রহ্মত্ববাদিনাং জড়তৈব সা "- ব্রহ্মে যদি সম্বিৎ বা চিৎশক্তি না থাকে, ব্রহ্ম যদি পূর্ণত নিষ্ক্রিয় হয়, তবে সেই ব্রহ্ম জড় ব্রহ্ম হিসেবে পরিণত হবে। আর এই জড় নিষ্ক্রিয় ব্রহ্মবাদ কদাপি কোনো শৈব দর্শনে মান্য নয়, যা " নর্তক আত্মা ", " রঙ্গোঽন্তরাত্মা " ইত্যাদি শিবসূত্র অর্থাৎ শিব বাক্য বিরুদ্ধ এবং  " তদৈক্ষত বহুস্যাং প্রজাযেযেতি ", " স ঈক্ষত লোকান্নু সৃজা ইতি ", " স ঈক্ষাংচক্রে স প্রাণমসৃজৎ " ইত্যাদি শ্রুতি বাক্য বিরুদ্ধও বটে।

সুতরাং প্রত্যভিজ্ঞা শৈব দর্শনকে বিচার করতে আসার আগে এরা যেন সঠিক ভাবে শাস্ত্র অধ্যয়ন করে আসে। আর প্রত্যভিজ্ঞা দর্শনকে একমাত্র অদ্বৈত শৈব আগমের এবং শিবসূত্রের ভিত্তিতেই বিচার করা সম্ভব কারণ ইহা সাক্ষাৎ শ্রীকণ্ঠনাথ শিব প্রতিপাদিত দর্শন।


তাহলে এতকাল ধরে যে বা যারা নিজেদের শৈব, শৈব অথবা বীরাশৈব অথবা পাশুপত বলে দাবী করছিল তাদের মুখোশধারী চরিত্র অবশেষে সকলের সামনে উন্মোচিত হলএরা তাহলে দিনের শেষে বলেই বসলো যে, " প্রত্যভিজ্ঞা শৈব দর্শন একটি ভ্রান্ত দর্শন, তারা প্রত্যভিজ্ঞা দর্শন বা বিশিষ্টাদ্বৈত শৈব দর্শন অর্থাৎ পাশুপত দর্শন মানে না", এরা নিজেরাই বলছে " বিশিষ্টাদ্বৈত শৈব মহলে অনেক সমস্যা রয়েছে " । পাঠকবৃন্দ, আপনারাই বিচার করুন - যারা শৈব মত, শৈব দর্শনকে ভ্রান্ত বলে বেড়ায় অর্থাৎ পরোক্ষভাবে শৈব আচার্য, শৈব আগমের, শিব বাক্যের বিরোধিতা করে, তারা আদৌ কি শৈব? এবার আপনারা বুঝলেন তো ISSGT কেন এদের অশৈব বলে, শৈব মত বিরোধী বলে। নিজেরাই ভাবুন, ভাবতে শিখুন,  ছদ্মবেশীদের চিনতে শিখুন, পুনরায় একবার সবার উপরে দেওয়া স্ক্রীনশট গুলোর মধ্যে শেষের ছবিটিতে চোখ বুলিয়ে নিন। এইসব ছদ্মবেশী ভণ্ডদের জন্যই আজ বাংলায় শৈব ধর্মের এই হাল, এর জন্য আপনারা বাংলার শৈবরা, শিবভক্তরা যারা এসবকে জেনে বা না জেনেই ক্রমাগত প্রশ্রয় দিয়ে এসেছেন, তারাই অনেকাংশে দায়ী।  বাংলার কোনো শিবভক্ত- কে যখন কৌশলে নিজ ইষ্ট শিব কর্তৃক প্রতিপাদিত দর্শন থেকে পথ ভ্রষ্ট করে দেয়া হয়, নিজ ইষ্ট শিব কর্তৃক প্রকাশিত আগম গুলিকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে মনগড়া রীতিনীতি তে বিশ্বাসী করে তোলা হয়, নিজ ইষ্ট শিবের আশীর্বাদপুষ্ট শৈব আচার্যদের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো অশৈব মতের অনুসারী করে তোলা হয়, সেই মুহূর্তটা পুরো শৈব সমাজের কাছে লজ্জার। আপনারা শৈব হয়ে শৈব সমাজের ক্ষতির জন্য দায়ী। বাংলার শিবভক্তরা তাই নিজের অজান্তেই অশৈব মতে কনভার্ট হয়ে যাচ্ছে, কারণ বাংলার বাইরে যে বৃহত্তর শৈব সমাজ রয়েছে, তাদের রীতিনীতি, দর্শন, জ্ঞান, শাস্ত্র সম্পর্কে বাংলার শিবভক্তরা অনভিজ্ঞ, আর এই সুযোগেরই সদব্যবহার করছে ভেকধারী এইসব পাষণ্ডরা। এদের থেকে সাবধান থাকুন। এদের ভাষা দেখুন আপনারা সকলে -


এরা নিজেরাই বলছে কাশ্মীর শৈব দর্শন নাকি ভ্রান্ত দর্শন, সাথে এদের মুখের ভাষা দেখুন।  গায়ে সাদা ধুতি জড়ালেই যে বিশাল ধার্মিক হওয়া যেত, বিশাল আচার্য হওয়া যেত, তাহলে বড় বড় University গুলো থেকে ধুতি বিক্রি করা হত শুধু, আচার্য পরম্পরা, শাস্ত্র, আগম এসবের আর দরকার পড়ত না। আর এদের যা ভাষা, তাতে এদের এসব ছদ্মবেশধারী চরিত্রের মুখোশ উন্মোচিত হতে আর বেশি দেরি লাগবে না। 

মনে রাখবেন, শিব ও শক্তি এক অভেদ, ব্রহ্ম ও শক্তি অভেদ । কারণ শক্তির অবস্থান শিবের হৃদয়েই, শক্তি শিবের থেকে অভিন্না। এটাই সমস্ত শৈব দর্শন গুলোর মান্যতা, ISSGT এর মান্যতা, শৈব আগমের মান্যতা, বেদের মান্যতা, শৈব আচার্যদের মান্যতা, সাক্ষাৎ শিবের মান্যতা। অদ্বৈতবেদান্ত মতে শক্তি মাত্রই মায়া, সেই কারণেই এরা বলছে যে, পরম ব্রহ্মে শক্তি থাকতে পারে না কোনোভাবেই, কারণ শক্তি বা মায়া সাক্ষাৎ ব্রহ্ম নন, অর্থাৎ অদ্বৈতবেদান্ত মতে শিবকে ব্রহ্ম ধরলে তাঁর শক্তিকে অর্থাৎ কালীকে  মায়া ধরে নিতে তারা বাধ্য, যা তন্ত্র অর্থাৎ শিব বাক্য বিরুদ্ধ। আর যদি শক্তি বা কালী নিজেই সাক্ষাৎ ব্রহ্ম হন, তাহলে শিবটা কে?  পরাশক্তি মা কালীর পায়ের নীচে যিনি শুয়ে রয়েছেন  তিনি কে? মায়া? সেই শিব যদি মায়া হন, তবে পুরো বেদান্ত আর তন্ত্র মিথ্যা হয়ে পড়বে । এই কালী, পরাশক্তি, দুর্গা  - তন্ত্রে এনাদের যে নির্গুণ নিরাকার ব্রহ্মস্বরূপিণী বলে স্তুতি করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ শৈব অদ্বৈত দর্শনের উপর আধার করেই করা হয়েছে, এসবের ব্যাখ্যা ৩৬ তত্ত্ব ভিত্তিক শিবাদ্বৈত বেদান্ত বা শক্তিবিশিষ্ট বেদান্ত ভিত্তিক করা গেলেও ২৪ তত্ত্ব ভিত্তিক শাঙ্করবেদান্ত বা বৈষ্ণবদের বেদান্ত ভাষ্য দ্বারা করা সম্ভব নয়

আর বিশেষ একদল ভণ্ড, মূর্খ রয়েছে যারা তন্ত্র, বেদান্ত, দর্শন, পরম্পরা, আচার্য কোনো কিছু সম্পর্কেই বিন্দুমাত্র জানে না। এরা এটাও জানে না যে শিব তত্ত্ব, শক্তি তত্ত্ব কি ? মায়া কি? কোন দর্শনে শিব ও শক্তি এক এবং কোন দর্শনে তারা আলাদা। এদের জীবনে একটাই লক্ষ্য কিছু জানুক না জানুক ক্ষ্যাপা ষাঁড়ের মত ISSGT এর পেছনে লাগাই এদের জীবনের মূল লক্ষ্য। নমুনা নিচেই প্রদর্শিত হল -

এরা যারা বাংলাটাও ঠিকঠাক পড়তে, বলতে পারে না , ISSGT এর একটি পোস্টও হয়তো যারা ঠিকভাবে পড়ে দেখেনি কোনোদিন, তারা এসেছে শৈব মতের বিচার করতে। এ নিজেই বলছে যে শক্তি নির্গুণ যা শৈব মতের সিদ্ধান্ত আবার পরক্ষণেই বলছে যে ISSGT নাকি ভণ্ড, ISSGT নাকি শিবে আর শক্তিতে ভেদ করে। কতবড় বলদ এরা আপনারাই দেখুন এবং ভাবুন। যারা শক্তি আর ব্রহ্মের মধ্যে ভেদ করছে, তাদের পদলেহন করে এইসব পাগল, ছাগল, গর্দভের দল উল্টে ISSGT কে শিব - শক্তির বিভেদকারী বলছে, এদের অতি সত্ত্বর জনক  মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ এর সাথে যোগাযোগ করা দরকার। যেখানে, শ্রীরামকৃষ্ণদেব, স্বামীবিবেকানন্দ থেকে আরম্ভ করে স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ পর্যন্ত কাশ্মীর অদ্বৈত শৈব দর্শন এর মর্ম উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছিলেন, সেখানে ওপার বাংলার কিছু মূর্খ, বাচাল, রামকৃষ্ণমিশন পন্থী রা আসবে ISSGT কে ধোলাই দিতে, যে নিজেই এক ভণ্ড। ফাঁকা মাঠে গোল ISSGT দেয় না, ISSGT মিড ফিল্ড থেকে তোমাদের গোল পোস্টে গোল দিয়ে আসবে, আগেও এসেছে, তোমরা কিছুই করতে পারনি শুধুমাত্র দাঁত কেলানো আর নিজেদের পেজ বন্ধ করে পালানো ছাড়া। তাই বিন্দুমাত্র লজ্জা শরম থাকলে এসব কথা বলতে না। হাঁদারা fake fb প্রোফাইল খুললেই যে তাদের আমরা ধরে পারবো না সেটা তাদের মূর্খতাপূর্ণ ভাবনা ছাড়া আর কিছুই নয়, সরাসরি সামনে এসে তর্ক করার আর দম নেই।

রামকৃষ্ণমিশন এর পণ্ডিতরা, স্বামীজিরা কাশ্মীর শৈব অদ্বৈত দর্শন সম্পর্কে কি মত পোষণ করছেন, স্বয়ং রামকৃষ্ণদেবের কি অভিমত সেটি নিম্নে রামকৃষ্ণ মিশন এর থেকেই প্রকাশিত বই থেকে নিম্নে তুলে ধরা হল  - 

এইসব ভণ্ডদেরকে ISSGT এর পক্ষ থেকে LIVE এ আসার ওপেন চ্যালেঞ্জ জানানো হল -শৈব মত সম্পর্কে এরা কি জানে? শৈব দীক্ষা কারা দিতে পারবে আর কারা পারবে না ? কোন মত ভ্রান্ত আর কোন মত ভ্রান্ত নয় ? কারা শিব- শক্তির মধ্যে বিভেদ করছে আর কারা নয় ? ISSGT এর বিরুদ্ধে এদের কি কি অভিযোগ সব কিছুই শোনা হবে এবং বাকি বিচার জনগণই করবেন। আর আমরা কোনো ভণ্ড কাউকে এক্সপোজ করতে ফেব্রুয়ারি, মার্চ এরকম কোনো মাসের অপেক্ষার বাহানায়  থাকি না। আর আমরা ধরতে শুরু করলে, জগতের কোনো পণ্ডিত মহলই ধোলাই খাওয়া থেকে আপনাকে বাঁচাতে পারবে না। তাই  শৈব দর্শনের উপর আঙ্গুল তোলার দুঃসাহস  কোনোদিন যেন আর না দেখতে পাই, নিজের ঢাক নিজের জায়গায় পেটান, সামনে না এসে অন্যের পিঠ পেছনে কাঠি করা কাপুরুষ আর ম্লেচ্ছ ভণ্ডদের স্বভাব।

দক্ষিণামূর্তযে নমঃ |

👉জবাব প্রদানে - RohitKumarChoudhury (ISSGT)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমবার ব্রত বিধি ও মাহাত্ম্য (শৈবপুরাণোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ১ (মূলপূজা)

বৃহৎ শিবার্চন বিধি পুস্তক (শৈব আগমোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ২ (প্রহরপূজা)

ত্রিপু্রোৎসব দীপপ্রজ্জ্বলন রীতি – স্কন্দমহাপুরাণোক্ত