দয়ানন্দ সরস্বতীর অশ্লীল বেদ ভাষ্যের খণ্ডন পর্ব - ৪

 

[দয়ানন্দ সরস্বতীর হিন্দি যজুর্বেদ ভাষ্যের ছবি]


मुखम् सद्स्य शिर ऽ इत् सतेन जिह्वा पवित्रम् अश्विनासन्त् सरस्वती । चप्यं न पायुर् भिषग् अस्य वालो वस्तिर् न शेपो हरसा तरस्वी ॥ - यजुर्वेद (१९/८८}


হিন্দি ভাষায় দয়ানন্দ সরস্বতী যেভাবে লিখেছেন সেটি এখানে প্রথমে দেখানো হল 👇

दयानंद इसका अर्थ अपने यजुर्वेदभाष्य में यह लिखते हैं कि- "हे मनुष्यो! जैसे जिससे रस ग्रहण किया जाता है वह वाणी के समान स्त्री, इस पति के सुन्दर अवयवों से विभक्त शिर के साथ शिर करें तथा मुख के समीप पवित्र मुख करें इसी प्रकार गृहाश्रम के व्यवहार में व्याप्त स्त्री पुरूष दोनों ही वर्तें तथा जो इस रोग से रक्षक वैद्य और बालक के समान वास करने का हेतु पुरूष उपस्थेन्द्रिय (लिंग) को बल से करनेहारा होता है वह शान्ति करने के समान वर्तमान मे सन्तानोत्पत्ति का हेतु होवे उस सबको यथावत करे"


🟣 বাংলায় দেখুন👇

মুখম্ঁ সদ্ স্য শিরঽ ইৎ সতেন জিহ্বা পবিত্রম্ অশ্বিনাসন্ত্ সরস্বতী ।

চপ্যং ন পায়ুর্ ভিষগ্ অস্য বালো বস্তির্ ন শেপো হরসা তরস্বী ॥ 

 [যজুর্বেদ/১৯/৮৮]

⬛ এবার হিন্দিভাষায় দয়ানন্দ সরস্বতী বেদমন্ত্রের ভাষ্য করতে গিয়ে কি অর্থ বের করেছেন সেটি বাংলা ভাষায় দেখুন 👇

হে মনুষ্য ! যেমনভাবে যার থেকে রস খাওয়া হয় সেই বানীর সমান স্ত্রী, এই পতির সুন্দর অবয়বের থেকে বিভক্ত মাথার সাথে মাথা দিয়ে তথা মুখের সাথে পবিত্র মুখ লাগিয়ে এই প্রকারে গৃহাশ্রমের

 ব্যবহারে ব্যপ্ত স্ত্রী পুরুষ উভয়েই বৃদ্ধিপ্রাপ্ত তথা যা এই রোগের থেকে রক্ষক বৈদ্য আর বালকের সমান বাস করার হেতু পুরুষ উপস্থেন্দ্রিয়(শিশ্ন) কে শক্তির দ্বারা ক্রিয়া করার যোগ্য হয়ে থাকে, ইহা শান্তি করার সমান বর্তমান সন্তানোৎপত্তির হেতু হবে এমন ভাবেই সেই সবকিছু (স্ত্রীপুরুষ সঙ্গম) যথাযথ ভাবে করবে ।


কিন্তু পরবর্তীতে স্বামীজি ভেবেছিলেন হয়তো তার নিয়োগী চেলারা তার এই অর্থ বোধগম্য করতে পারবেনা এই জন্য নিজের শিষ্যের বোঝার স্বার্থে অর্থটিকে আরও একটু সহজতর বাড়ানোর জন্য স্বামীজি ভাবার্থতে এটি লিখলেন যে —


স্ত্রী পুরুষ গর্ভাধানের সময়ে পরস্পর মিলিত হয়ে প্রেম দ্বারা প্রেরিত হয়ে মুখের সাথে মুখ, চোখের সাথে চোখ মনের সাথে মন শরীরের সাথে শরীর অনুসন্ধান করে গর্ভকে ধারণ করবে, যাতে করুক আর বিকলাঙ্গ সন্তান না হয় ।


কিন্তু এখানেও স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী জীর অশ্লীল বুদ্ধি এখানেও থামেনি, দয়ানন্দ সরস্বতী জী তার লেখা সত্যার্থ প্রকাশের চতুর্থ সমুল্লাসে তার নিজের এই কামশাস্ত্রের বিস্তারিত বর্ণনা করতে গিয়ে নিজের আহ্লাদের শিষ্যের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন যে —

যখন বীর্যের গর্ভাশয়ের মধ্যে পতিত হওয়ার সময় হয় সেই সময় স্ত্রী আর পুরুষ দুজনেই স্থির হয়ে আর নাসিকার সামনে নাসিকা, নেত্রের সামনে নেত্র অর্থাৎ সুধা শরীর আর অত্যন্ত প্রসন্ন চিত্ত থাকবে, বিচলিত হবে না। পুরুষ নিজের শরীর কে হালকা করে ছেড়ে দেবে আর স্ত্রী বীর্যপ্রাপ্তির সময় অপান বায়ুকে উপরে টানবে, যোনীদ্বার দিয়ে (শিশ্ন টেনে) উপরে সংকুচিত করে বীর্য উপরে টেনে নিয়ে গর্ভাশয়ে স্থিত করবে, এর পশ্চাতে দুজল শুদ্ধ জল দিয়ে স্নান করবে ।


সমীক্ষা : 

বাহ রে এই কামশাস্ত্র কে তৈরি করা দয়ানন্দ সরস্বতী আপনাকে আর কি বলবো ?

এই দয়ানন্দ সরস্বতীর এই ভাষ্য কি পড়ে এটি বলা মুশকিল যে আনন্দ বিধান লিখছিল নাকি নিজের অন্তর্বাসনা, নাকি দয়ানন্দ সরস্বতী ঈশ্বর প্রদত্ত জ্ঞানকে কে এতটাই তুচ্ছ আর অশ্লীল ভেবে রেখেছে যেমনটা এই কামানন্দ প্রকট করেছে নিজের লেখায় ।


যতদূর পর্যন্ত গর্ভাধান বিধির প্রশ্ন রয়েছে, সেখানে এটা তো একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। 

এটি তো না শুধু নিরক্ষর মানুষ, বোকা মনুষ্য‌ও জানে, এমনকি পশুপাখিরাও জানে, পশুপাখিরা কোন শাস্ত্রের জ্ঞান বোঝে ?

তাদেরকে এইসব শিখিয়েছে ?

এই কারণে দয়ানন্দ সরস্বতীর করা এই বেদভাষ্য অশুদ্ধ, বেদের মধ্যে এমন কথা কোথাও নেই ।

এইসব শিক্ষা করার জন্য তো সাধারণ মানুষের বানানো পুস্তক‌ই যথেষ্ট, তাই এসব কারণে এই দয়ানন্দ সরস্বতীর বের করা অর্থ কখনোই বেদের উক্ত মন্ত্রের অর্থ নয় ।

🌷 এই বেদ মন্ত্রের প্রকৃত অর্থ হল এটি —

ইন্দ্রদেবের এই বিরাট শরীরের মধ্যে মুখ আর মস্তক সত্য দ্বারা পবিত্র, মুখের মধ্যে স্থিত জিহ্বা সত্য বাণী আর সত্য স্বাদের দ্বারা পবিত্র, দুই অশ্বনীকুমার আর দেবী সরস্বতীর দ্বারা এই অঙ্গের সঞ্চালনের মাধ্যমে পবিত্রতা ব্যাপ্ত হয়ে থাকে। চপ্য পায়ু ইন্দ্রিয় হয়েছে। কেশ শারীরিক দোষগুলিকে বাইরে নির্গতকারী ভিষক্(উপচারকর্তা) হয়েছেন, আর বস্তি তথা বির্য দ্বারা জননেন্দ্রিয় হয়েছে ।

 এই শ্রুতিমন্ত্রে তো শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের সৃষ্টি কিভাবে কিভাবে হয় সেটিই বলা হয়েছে আর এই মন্ত্রের পূর্ববর্তী মন্ত্রে এবং পরবর্তী মন্ত্রেও এক‌ই কথা বলা হয়েছে ।


কল্পিত অশ্লীল অর্থ কোথা থেকে বের করেছে দয়ানন্দ সরস্বতী ?

এই বেদ শ্রুতি তে এরকম কোন পদ নেই, যার ফলে স্বামী কামানন্দের লিখিত এই অর্থ যে মূলত কল্পিত অর্থ তা স্পষ্ট।

দয়ানন্দ সরস্বতী এরকম অশ্লীল অর্থ বের করবার পূর্বে কি একবারও ভাবলো না‌ যে বিদ্বান ব্যক্তিরা যখন তার লিখিত এই অর্থ পড়বে তখন তারা দয়ানন্দ সম্পর্কে কি ভাববে ?

একবার বিচার করে দেখুন পাঠক বৃন্দ, 

ঐশ্বরিক জ্ঞান কি এতটা তুচ্ছ হতে পারে ?

এটাই কি বেদবিদ্যা ?

দয়া নন্দ সরস্বতী যে অর্থ বার করেছে সেটি কি বেদের সার ?

দয়ানন্দ সরস্বতী বেদ বিচার এই অর্থের যে অনর্থ্য করেছে এরকম অনর্থ আগে কেউ কখনো হয়তো করেনি ।

আমি তো এটা বুঝতে পারিনা যে দয়ানন্দের দ্বারা করা এই অশ্লীল ভাষ্য আর্যসমাজীদের কেন চোখে পড়ে না ?

এই ধূর্ত সামাজীরা কেন দয়ানন্দ সরস্বতীর এই অশ্লীল ভাষ্যের বিরোধ করে না ? 

এগুলি আর্য সমাজীদের দ্বিচারিতা নয় তো আর কি ?

যখনই দেখো তখনই এই আর্যসমাজীরা এখানে ওখানে অশ্লীলতা খুঁজে বেড়ায়... অথচ দয়ানন্দের রচিত এই অশ্লীল বেদভাষ্য তাদের চোখে ধরা পড়ে না, দেখেও না দেখার ভান করে আর্যমসমাজীরা।

সুতরাং নিয়োগীদলের দ্বিচারিতা এখানেই সিদ্ধ হয় ।


হে সনাতনীগণ !

দয়ানন্দ সরস্বতী ও তার আর্যসমাজ কে ত্যাগ করুন, এরা বেদবিকৃতকারী । এরকম ঠগ বাজীদের জন্য বেদের অপমান হচ্ছে। 

এরা পুরাণকে অশ্লীল বলতে বলতে সনাতনীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে, অথচ এদের বানানো বেদভাষ্য‌ই অশ্লীল ও অর্থহীন। এদের ত্যাগ করুন। 

 এছাড়াও 

পাঠক বৃন্দ দেখুন !

 প্রথমে তো স্বামী কামানন্দ সরস্বতী জী নিজের আহ্লাদের শিষ্যদের উদ্দেশ্যে গর্ভাধানের জন্য উপদেশ করেন এই ভাবে —

স্ত্রী পুরুষ গর্ভাধানের সময়ে পরস্পর মিলিত হয়ে প্রেম দ্বারা প্রেরিত হয়ে মুখের সাথে মুখ, চোখের সাথে চোখ মনের সাথে মন শরীরের সাথে শরীর অনুসন্ধান করে গর্ভকে ধারণ করবে, যাতে করুক আর বিকলাঙ্গ সন্তান না হয়


অথচ দয়ানন্দ সরস্বতী নিজের এই লেখার বিরুদ্ধেই যজুর্বেদের অধ্যায় ২৮ -এর ৩২নং মন্ত্রের ভাষ্য করতে গিয়ে স্ববিরোধী যা লিখেছেন তা পরবর্তী আর্টিকেলে দেখতে পাবেন শীঘ্রই।



সুতরাং বেদকে স্ববিরোধী বানিয়ে বিভ্রান্তকারী আর্যসমাজী দের ত্যাগ করুন।

পরমেশ্বর শিবের কৃপায় সনাতন ধর্মের নামে মিথ্যাচার করা অসনাতনীদের এভাবেই দমানোর কার্য চলতে থাকবে ।

হর হর মহাদেব 🙏

অপপ্রচার দমনে — শ্রীনন্দীনাথ শৈব

কপিরাইট ও প্রচারে — International Shiva Shakti Gyan Tirtha - ISSGT


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমবার ব্রত বিধি ও মাহাত্ম্য (শৈবপুরাণোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ১ (মূলপূজা)

বৃহৎ শিবার্চন বিধি পুস্তক (শৈব আগমোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ২ (প্রহরপূজা)

ত্রিপু্রোৎসব দীপপ্রজ্জ্বলন রীতি – স্কন্দমহাপুরাণোক্ত