পরমশৈব শ্রীকৃষ্ণজীর পূজা বিধি (শৈবমতানুসারে)


ISSGT (International Shiva Shakti Gyan Tirtha) – এর পক্ষ থেকে শৈব মত অনুসারে শ্রীকৃষ্ণ জীর সহজ সরল অর্চনা বিধি প্রকাশিত হল। শিবভক্তগণ নিজ আরাধ্যের প্রতি নিষ্ঠা প্রর্দশিত করার জন্য পরমশিবভক্ত শ্রীকৃষ্ণের সেবা করতে তৎপর। তাই শৈবদের নিজস্ব মতানুসারে এই পূজা বিধি প্রকাশ করা হল। শ্রীকৃষ্ণজী একজন শৈবপরম্পরার অন্তর্ভুক্ত শিবমন্ত্রে দীক্ষিত শৈব সাধক। তার পরম্পরার নাম পাশুপত শৈব পরম্পরা। তিনি নিজ অঙ্গে ভস্ম বিভূষিত করে পরমেশ্বর শিবের সাধনা করেছিলেন। তার দীক্ষাগুরু ছিলেন চিরঞ্জীবী মহর্ষি উপমন্যু। তাই সেই সুবাদে মহা আনন্দের সহিত ভক্তশৈবগণ পাশুপত সম্প্রদায়ভুক্ত শ্রীকৃষ্ণ জী মহারাজের ন্যায় পরম শিবভক্তের পূজা করে নিজেদের আধ্যাত্মিক পথের উন্নতি করতে তৎপর হয়েছে। তাই শৈব রূপে শ্রীহরির পূজা করে শৈবসেবা দ্বারা মহাদেবের কৃপা ও প্রসন্নতার অভিলাষী সমস্ত শিবভক্ত শৈবগণ। সেই শৈবসেবার একটি দৃষ্টান্ত হল এই শৈবমতে শ্রীকৃষ্ণের অর্চনা। আসুন আমরা সকলে পরমশৈব শ্রীকৃষ্ণের সেবা করে পরমেশ্বর শিবের সান্নিধ্য লাভ করি।

🛑উপকরণ🛑

১. শ্রীকৃষ্ণের বিগ্রহ বা চিত্র অথবা গোপালের বিগ্রহ
(কেউ চাইলে সাধারন শিবলিঙ্গে বা বাণলিঙ্গেও কৃষ্ণের পূজা করতে পারেন)

২. শুদ্ধ জল এবং গঙ্গাজল

৩. অভিষেক পাত্র

৪. ত্রিপুন্ড্র ধারণের জন্য ভস্ম বা খড়িমাটি

৫. রুদ্রাক্ষের মালা(কৃষ্ণের জন্য)

৬. কুশাসন অথবা কম্বলের আসন

৭. পঞ্চামৃত (দধি, দুগ্ধ, ঘৃত, মধু ও শর্করা)

৮. ধূপ, ঘিয়ের দীপ ও কর্পূর

৯. পানীয় জল (শিব ও কৃষ্ণের জন্য আলাদা আলাদা গ্লাসে)

১০. কৃষ্ণের জন্য নৈবেদ্য প্রসাদ – মাখন, মিছরি, নাড়ু, ননী, ক্ষীর, রাবরি, মালাই, ইত্যাদি

১১. শিবের জন্য নৈবেদ্য প্রসাদ – যেমন নকুলদানা, বাতাসা, মিষ্টান্ন। চাইলে কেউ অন্নভোগ সাথে পরমান্ন(পায়েস) দিতে পারেন। পাকা ফল

১২. শ্বেতচন্দন , বেলপাতা ও গন্ধপুষ্প


✅সকালে নিদ্রাভঙ্গ করে শিবগৌরীর স্মরণ করুন হাত জোড় করে। মন্ত্র –

কর্পূর গৌরং করুণাবতারং সংসার সারম্ ভুজগেন্দ্রহারম্ ।

সদা বসন্তং হৃদয়ারবিন্দে ভবং ভবানী সহিতম্ নমামি ।।


তারপর স্নান সেরে কপাল সহ দেহের পাঁচ স্থানে ত্রিপুণ্ড্র অঙ্কিত করুন এবং গলায় রুদ্রাক্ষ ধারণ করুন এবং নিত্যদিনের পূজার্চনা করুন। পূজার উক্ত সারাদিন উপবাস করতে হয়, সন্ধ্যার সময় পুনরায় শুদ্ধ হয়ে পরিষ্কার বস্ত্র ধারণ করতে হবে। পুনরায় কপাল সহ দেহের পাঁচ স্থানে ত্রিপুণ্ড্র অঙ্কিত করুন এবং গলায় রুদ্রাক্ষ ধারণ করুন। এবার পূজা স্থানে এসে কুশের অথবা কম্বলের আসনে বসুন।


✅প্রথমে শিবস্মরণ করুন। মন্ত্র –

কর্পূর গৌরং করুণাবতারং সংসার সারম্ ভুজগেন্দ্রহারম্ ।

সদা বসন্তং হৃদয়ারবিন্দে ভবং ভবানী সহিতম্ নমামি ।।



✅তারপর ভগবান গণেশ প্রণাম করুন। গণেশ মন্ত্র – ॐ গাং গণেশায় নমঃ ।।


✅নিজ গুরুকে প্রণাম করুন এই মন্ত্রে – অখণ্ড মণ্ডলা কারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরম। তদপদং দর্শিতং যেন তস্মৈ শ্রী গুরুবে নমঃ।।


✅এবার গঙ্গাজল ছিটিয়ে নিন ॐ নমঃ শিবায় মন্ত্র উচ্চারণ করে। এবার ধূপ দীপ জ্বেলে নিন।


✅এবার হাতজোড় করে বলুন

হে পরমেশ্বর শিব

হে ভক্তবৎসল

হে আমার আরাধ্য প্রভু সদাশিব

আমি আপনার‌ই পালনহার স্বরূপ সাক্ষাৎ হরির অবতার পরমশৈব শ্রীকৃষ্ণের শুভ অনুষ্ঠান করার সংকল্প করেছি, আপনার কল্যাণে যেন আমার দ্বারা কৃত এই শৈবসেবা অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হয়।


✅এবার সর্বপ্রথমে এক এক করে পরমেশ্বর শিবের উদ্দেশ্যে প্রদান করা প্রসাদপূর্ণ পাত্রটি এবং প্রভুর পানীয় জলপূর্ণ গ্লাসটি শিবের সম্মুখে তুলে ধরে বলুন – শিবার্পণমস্তু ।।


✅এবার পরমেশ্বর শিবকে জল দ্বারা অভিষেক করান ভক্তিযুক্ত মনে এই মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র পাঠ করে ।


☘️মহামৃত্যুঞ্জয় মহামন্ত্র –


ত্রয়ম্বকং যজামহে সুগন্ধিং পুষ্টিবর্ধনম্।

উর্বারুকমিব বন্ধনান মৃত্যোর্মুক্ষীয় মামৃতাৎ ॥

এবার সমগ্র জলটি শিবলিঙ্গ ঢেলে দিন।


✅এবার শ্বেতচন্দন সহ ফুল বেলপাতা পরমেশ্বর শিবকে অর্পণ করুন এই মন্ত্র পাঠ করতে করতে – ॐ নমঃ ভগবতে শ্রীসাম্বসদাশিবায় সচন্দন গন্ধপুষ্প বিল্বপত্রাঞ্জলী সমর্পয়ামি ।।


✅এবার হাতজোড় করে শিব প্রনামমন্ত্র পাঠ করুন।


☘️শিব প্রনামমন্ত্র – ॐ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয় হেতবে ।

নিবেদয়ামি চাত্মানং ত্বং গতিঃ পরমেশ্বর ।।


🛑অতপর হরির শৈবসেবা শুরু করুন।


✅শ্রীকৃষ্ণের চিত্র বা প্রতিমা অথবা গোপালের প্রতিমার সম্মুখে হাতজোড় করে বলুন –


হে বাসুদেব তুমি আমার গুরু স্বরূপ, তোমার চরণের স্পর্শে ধন্য হয়েছে এই ধরনী, তুমি সুদর্শনচক্র ধারণ করে ধর্মের রক্ষা করেছ, তোমার কৃপায় সেই পরম দূর্লভ শিবজ্ঞান অর্জুন তথা সমস্ত বিশ্ববাসীর কাছে বোধগম্য হয়েছে। তুমি বিষ্ণু রূপে, নারায়ণ রূপে, পরশুরাম রূপে, রামচন্দ্ররূপে এবং কৃষ্ণ রূপে শিবারাধনা করেছ। তুমি পাশুপত দীক্ষা গ্রহণ করে ভস্মধারণ পূর্বক শিবমন্ত্রে তপস্যা করে শিবকৃপা লাভ করেছ। তাই তোমার ন্যায় মহান শৈবের সেবা যত্ন করে তোমার আশীর্বাদে শিবপ্রাপ্ত করার মার্গ প্রশস্ত করতে ব্রতী হয়েছি। হে ভক্ত শিরোমণি দেবকীনন্দন আমার উপর কৃপা দৃষ্টি দিন, আমার প্রেমসম্পন্ন এই সেবা গ্রহণ করে নিন।

ॐ কেশবায় নমঃ ॥

ॐ নারায়ণায় নমঃ ॥

ॐ মাধবায় নমঃ ॥


✅এবার কৃষ্ণের/গোপালের প্রিয় খাবারগুলি মাখন, মিছরি, ননী,নাড়ু, তালের বড়া,ক্ষীর, রাবরি, মালাই , মালপোয়া ইত্যাদি সাধ্যমত সাজিয়ে সামনে ভোগ হিসেবে নিবেদন করুন ৷ পানীয় জলপূর্ণ গ্লাস নিবেদন করুন।


✅এক এক করে শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে প্রদান করা প্রসাদপূর্ণ পাত্র গুলি – ॐ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায়, নৈবেদ্য সমর্পয়ামি ।।


✅এবং পানীয় জলপূর্ণ গ্লাসটি শ্রীকৃষ্ণের সম্মুখে তুলে ধরে বলুন – ॐ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায়, পানার্থ পয়ঃ সমর্পয়ামি ।।


✅এবার গোপালকে পঞ্চামৃত দ্বারা স্নান করাবেন। দুধ দ‌ই ঘী মধু এবং শর্করা হিসেবে আঁখেররস বা চিনিজল এই সব বস্তু গুলো একসাথে মিশিয়ে নেবেন একটি ঘটিতে। এবার গোপাল প্রতিমাকে একটি অপেক্ষাকৃত বড় পাত্রে বসিয়ে দিয়ে পঞ্চামৃত দিয়ে স্নান করান এই মন্ত্র পাঠ করতে করতে – স এস রুদ্র ভক্তশ্চ কেশবো রুদ্রসম্ভবঃ। ॐ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায় ॥


(শ্রীকৃষ্ণ জীর চিত্র তে পূজার ক্ষেত্রে উক্ত পঞ্চামৃত খুবই সামান্য পরিমাণ মতো নিয়ে জলে গুলে নিন। কয়েকটি দূর্বা সেই জলে স্পর্শ করে কৃষ্ণ চিত্রে ছিটিয়ে দিন এই মন্ত্র পাঠ করতে করতে – স এষ রুদ্র ভক্তশ্চ কেশবো রুদ্রসম্ভব। ॐ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায় ॥ )


[এছাড়া গোপালের বিগ্রহ না থাকলে শিবলিঙ্গতে কৃষ্ণকে স্মরণ করে পঞ্চামৃত দিয়ে স্নান করান এই মন্ত্র পাঠ করতে করতে – স এষ রুদ্র ভক্তশ্চ কেশবো রুদ্রসম্ভব। ॐ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায় ॥]


✅এবার শুদ্ধ জল দ্বারা গোপালকে স্নান করিয়ে স্বচ্ছ বস্ত্র পরিয়ে দিন।


✅হাতে রুদ্রাক্ষ মালা নিয়ে পাঠ করে এই মন্ত্র টি পরমশিবভক্ত গোপালকে বা শ্রীকৃষ্ণের চিত্রকে এই রুদ্রাক্ষ মালাটি পড়িয়ে দিন। মন্ত্র – ॐ তৎপুরুষায় বিদ্মহে মহাদেবায় ধীমহি তন্নো রুদ্রঃ প্রচোদয়াৎ ।

ॐ নমঃ ভগবতে রুদ্রায় । ॐ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায় রুদ্রাক্ষমাল্য নিবেদয়ামি ।।


অতঃপর, কিছু টা ভস্ম (অথবা খড়িমাটি) নিজের হাতের তিন আঙুলে তুলে নিয়ে এই মন্ত্র পাঠ করে ভস্মটি অভিমন্ত্রিত করুন – ॐ অগ্নিরিতি ভস্ম বায়ুরিতি ভস্ম জলমিতি ভস্ম স্থলমিতি ভস্ম ব্যোমেতি ভস্ম সর্বংহ বা ইদং ভস্ম মন এতানি চক্ষূংষি ভস্মানি যস্ মাদ্ ব্রতমিদং পাশুপতং যদ্ ভস্ম নাঙ্গানি সংস্পৃশেত্ তসমাদ্ ব্রহ্ম তদেতত্ পাশুপতং পশুপাশ বিমোক্ষণায়


✅এবার এই মন্ত্রটি পাঠ করে কিছুটা জল দিয়ে ভিজিয়ে নিন ভস্ম অথবা খড়িমাটিকে –

মা নস্তোকে তনয়ে মা ন আয়ুষি মা নো গোষু মা নো অশ্বেষু রীরিষঃ । মা নো বীরান্ রুদ্র ভাবিনো বধীরহবিষ্মন্তঃ সদমিত্বা হবামহে ॥


এবার হাতের তিন আঙ্গুল দিয়ে সেই ভস্মটির কিছু টা তুলে নিয়ে শৈব শিরোমণি শ্রীকৃষ্ণ জী মহারাজের কপালে ভস্মের ত্রিপুণ্ড্র অঙ্কিত করবেন এই মন্ত্রে কপালে ত্রিপুণ্ড্র আঁকার সময় ॐ নমঃ শিবায় ।ॐ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায়, ত্রিপুণ্ড্র সমর্পয়ামি ।।


✅এবার কিছু চন্দনযুক্ত পুষ্প সহ বেলপাতা হাতে নিয়ে এই মন্ত্র পাঠ করে শ্রীকৃষ্ণ জী কে অর্পণ করুন – ॐ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায় ।।


✅আবার কিছু চন্দনযুক্ত পুষ্প সহ বেলপাতা হাতে নিয়ে এই মন্ত্র পাঠ করে শ্রীকৃষ্ণ জী কে অর্পণ করুন – ॐ বিষ্ণবে নমঃ ।।


✅পুনরায় কিছু চন্দনযুক্ত পুষ্প সহ বেলপাতা হাতে নিয়ে এই মন্ত্র পাঠ করে শ্রীকৃষ্ণ জী কে অর্পণ করুন – ॐ নমো নারায়ণায় ।।


✅এবার পরমেশ্বর শিবকে অর্পণ করা পবিত্র শিবপ্রসাদ পরমশৈব শিবভক্ত শিরোমণি শ্রীকৃষ্ণজী মহারাজকে অর্পণ করুন – শিবনির্মাল্যং নিবেদয়ামি, গৃহাণ ত্বং ময়া দত্তং প্রসন্নো ভব গোবিন্দায়॥

(ইহা শৈবদের কাছে মহাপ্রসাদ স্বরূপ)


✅এবার হাতে একটি ফুল নিয়ে শৈবশিরোমণি কৃষ্ণরূপী বিষ্ণুর ধ্যান মন্ত্র টি পাঠ করে এবং তার অর্থ পাঠ করে ধ্যান করুন। ধ্যান অন্তে ফুল টি নিজের মাথায় রেখে দিন।


🌼পরমশৈব শ্রীকেশব ধ্যানম্ –

তাক্ষ্যার্সনশ্চতুর্বাহুঃ শঙ্খচক্রগদাধরঃ।।৩১।।

শ্যামপীতাম্বরধরো বনমালাবিভুষিতঃ ।

যজ্ঞদেবোন্তমো দেবো মাধবো মধুসূদনঃ।।৩২।।

শিবপ্রণামপরমঃ শিবধ্যানৈক তৎপরঃ।

শিবার্চনপরো নিত্যং বিষ্ণুশান্তিং করোতু মে।।৩৩।।


সরলার্থ – (বিষ্ণু ধ্যান) যিনি গরুড়াসনের উপরে আরোহনকারী এবং নিজের চারহস্তে শঙ্খ চক্র গদা(এবং পদ্ম) ধারণকারী, সেই শ্যামবর্ণ ও পীতাম্বর ধারণকারী, বনমালা বিভূষিত তথা যজ্ঞদেবগণের মধ্যে উত্তম দেবতা হলেন মাধব মধুসূদন শ্রীকৃষ্ণ। তিনি পরমেশ্বর শিবকে প্রণামকারী পরম ভক্ততত্ত্ব এবং তিনি সর্বদা উমাপতি শিবের ধ্যানে তৎপর থাকেন। তিনি নিত্য শিব অর্চনায় রত থাকেন। সেই পরমশৈব ভগবান শ্রীবিষ্ণু আমাকে শান্তি প্রদান করুন ।


✅এবার কৃষ্ণ মন্ত্র জপ করুন ১০৮ বার – ॐ ক্লীং শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ ।।


✅অতঃপর, শৈবশ্রীকৃষ্ণের প্রণাম মন্ত্র পাঠ করে প্রণাম করুন ভগবান কে।

🙏পরমশৈবকৃষ্ণের প্রণামমন্ত্র : 

কেশবঃ পাশুপতপরম্পরাস্য দীক্ষিতনারায়নস্য । অষ্টমাবতারস্তি য়ঃ ইহলোকে দুষ্টশক্তিয়ঃ নাশয়তি ॥

শৈবধর্মস্য স্থাপনাং কৃত্বা ধর্মস্য পুনরুত্থানং কৃত্বা । শিবভক্তস্য শৈবজ্ঞানপ্রদস্য চ শ্রীকৃষ্ণস্য চরণকমলয়োঃ প্রণমামী ॥

নমঃ শ্রীকৃষ্ণায় নন্দনন্দনায় বৈকুণ্ঠাধিপত্যংশভূতায় শৈবায় ।।


🛑এবার পরমশৈব বিষ্ণুরূপী কৃষ্ণের বন্দনা করুন –


অথ বিষ্ণুর্মহেশস্য শিবস্যৈব পরা তনুঃ।

বারিতত্ত্বাধিপঃ সাক্ষাদব্যক্তপদসংস্থিতঃ ॥ ১২৬ 

নিৰ্গুণ সত্ত্ববহুলস্তথৈব গুণকেবলঃ ।

অবিকারাভিমানী চ ত্রিসাধারণবিক্রিয়ঃ ॥ ১২৭

অসাধারণকর্মা চ সৃষ্ট্যাদিকরণাৎ পৃথক্‌ ।

দক্ষিণাঙ্গভবেনাপি স্পর্ধমানঃ স্বয়ম্ভুবা ॥ ১২৮

আদ্যেন ব্রহ্মণা সাক্ষাৎ সৃষ্টঃ স্রষ্টা চ তস্য তু ।

অণ্ডস্যান্তর্বহির্বর্তী বিষ্ণুলোকদ্বয়াধিপঃ ॥ ১২৯

অসুরান্তকরশ্চক্রী শত্রুস্যাপি তথানুজঃ ।

প্রাদুর্ভূতশ্চ দশধা ভৃগুশাপচ্ছলাদিহ ॥ ১৩০

ভূভারনিগ্রহার্থায় স্বেচ্ছয়াবাতরৎ ক্ষিতৌ।

অপ্রমেয়বলো মায়ী মায়য়া মোহয়ঞ্জগৎ ॥ ১৩১

মূর্তিং কৃত্বা মহাবিষ্ণুং সদাবিষ্ণুমথাপি বা।

বৈষ্ণবৈঃ পূজিতো নিত্যং মূৰ্তিত্ৰয়ময়াসনে ॥ ১৩২

শিবপ্রিয়ঃ শিবাসক্তঃ শিবপাদার্চনে রতঃ।

শিবস্যাজ্ঞাং পুরস্কৃত্য স মে দিশতু মঙ্গলম্ ॥ ১৩৩


✅এবার একটা ফুল হাতে নিয়ে হাত জোড় করে পূজার মধ্যে অজান্তে হওয়া ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন এই মন্ত্র পাঠ করে।

মন্ত্র – অজ্ঞানাদ্যদি বা জ্ঞানাজ্জপ পূজাদিকং ময়া ।

কৃতং তদস্তু সফলং কৃপয়া তব কেশব ॥


[বাংলাতে সহজ সরল ভাবেও প্রার্থনা করতে পারেন এটি বলে – হে শৈবশিরোমণি কেশব শ্রীকৃষ্ণ ! আমি না জেনে অথবা জেনে বুঝে যে জপ- পূজা ইত্যাদি সৎ কর্ম করেছি, তা যেন আপনার কৃপায় সফল হয়]


✅এবার কর্পূর জ্বেলে আরতি করুন।


✅এবার পরমশৈব কৃষ্ণজী মহারাজের কাছে হাতজোড় করে শিবভক্তি প্রার্থনা করুন এই মন্ত্র পাঠ করে।

মন্ত্র –

শিবে ভক্তিঃ শিবে ভক্তিঃ শিবে ভক্তির্ভবে ভবে।

ভক্ত্যা ময়ার্চিতো মহ্যং প্রার্থিতং শং প্রয়চ্ছতু ।।


[বাংলাতে সহজ সরল ভাবেও প্রার্থনা করতে পারেন এটি বলে – হে শিবভক্ত গোবিন্দ ! প্রত্যেক জন্মে আমার শিবে ভক্তি হোক, শিবে ভক্তি হোক, শিবে ভক্তি হোক। আমি ভক্তিসহকারে আপনার সেবা অর্চনা করেছি, আপনি আমাকে প্রার্থিত কল্যাণ প্রদান করুন।


🌸শৈব পাশুপত সম্প্রদায়ে শিবমন্ত্রে দীক্ষিত পরমশৈব শিরোমণি শ্রীকৃষ্ণ জীর উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠিত শুভ শৈবসেবা কার্য সম্পূর্ণ হল।🌸


☘️পূজা অন্তে মহাপ্রসাদ গ্রহণ করুন।


।। ॐ নমঃ শিবায় ।।

✒️সংগ্রহে ও লেখনীতে – শ্রীনন্দীনাথ শৈবজী

©️ Copyright এবং প্রচারে – International Shiva Shakti Gyan Tirtha


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমবার ব্রত বিধি ও মাহাত্ম্য (শৈবপুরাণোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ১ (মূলপূজা)

বৃহৎ শিবার্চন বিধি পুস্তক (শৈব আগমোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ২ (প্রহরপূজা)

ত্রিপু্রোৎসব দীপপ্রজ্জ্বলন রীতি – স্কন্দমহাপুরাণোক্ত