সত্যার্থ প্রকাশ পুস্তকের অন্তর্গত “ প্রথম সমুল্লাস” -এর খণ্ডন — মিথ্যার্থ প্রকাশ

Satyartha Prakash first Samullas Exposed

আর্যসমাজের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর লেখা সত্যার্থ প্রকাশ পুস্তকের খণ্ডন —

সনাতন ধর্মের সর্বপ্রাচীন এক ও অদ্বিতীয় গুরুপরম্পরা হল মহাপাশুপত পরম্পরা, সেই মহাপাশুপতের ধারা শৈব অবধূত পরম্পরার বর্তমান মহামান্য আচার্য শ্রী নন্দীনাথ শৈবাচার্যের অনুপ্রেরণায় ও সহযোগীতায় International Shiva Shakti Gyan Tirtha — ISSGT শৈব সংগঠনের পক্ষ থেকে মহামান্য শ্রীসোমনাথ শৈব জী দ্বারা লিখিত আকারে সমগ্র বাংলাতে এই সর্ব প্রথমবার প্রকাশ করা হল “সত্যার্থ প্রকাশ পুস্তকের খণ্ডন” সমন্বিত — মিথ্যার্থ প্রকাশ

অথ মিথ্যার্থ প্রকাশ — সত্যার্থ প্রকাশের অন্তর্গত প্রথম সমুল্লাস ও তার খণ্ডন 

 ॥ ॐ গণেশায় নমঃ । ॐ শ্রীগুরুভ্যো নমঃ । ॐ নমঃ শিবায় ॥

🟪 (১) দয়ানন্দ সরস্বতীর প্রথম দাবী (১) 🟪

"ও৩ম্‌ শন্নো মিত্রঃ শং বরুণঃ শন্নো ভবত্বর্য্যমা । শন্নঽইন্দ্রো বৃহস্পতিঃ শন্নো বিষ্ণুরুরুক্রম ।।নমো ব্রহ্মণে নমস্তে বায়ো ত্বমেব প্রত্যক্ষং ব্রহ্মাসি । ত্বামেব প্রত্যক্ষং ব্রহ্ম বদিষ্যামি ঋতং বদিষ্যামি সত্যং বদিষ্যামি । তন্মামবতু তদ্বক্তারমবতু । অবতু মামবতু বক্তারম্‌ । ও৩ম্‌ শান্তিশ্‌ শান্তিশ্‌ শান্তি ।


অর্থঃ- 'ওম্‌' এই ওঙ্কার শব্দ পরমেশ্বরের সর্বোত্তম নাম । কারণ ইহাতে অ, উ এবং ম্‌ এই তিন অক্ষর মিলিয়া এক 'ওম্‌' সমুদায় ইয়াছে। এই একটি নাম হইতে পরমেশ্বরের অনেক নাম সূচিত হয়, যথা 'অ'কার হতে বিরাট, অগ্নি এবং বিশ্ব প্রভৃতি; 'উ'কার হতে হিরণ্যগর্ভ, বায়ু, তৈজস প্রভৃতি; 'ম'কার হইতে ঈশ্বর, আদিত্য এবং প্রাজ্ঞ প্রভৃতি নাম সূচিত হয় ও গৃহীত হয়। প্রকরণানুসারে এই সকল যে পরমেশ্বরেরই নাম তাহা বেদাদি সত্য শাস্ত্রে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যাত রয়েছে।

Satyartha Prakash Om fake Meaning Khandan
সত্যার্থ প্রকাশ পুস্তক থেকে উক্ত দাবীর চিত্র 


দয়ানন্দের প্রথম দাবীর খণ্ডন (ISSGT)

বেদ মন্ত্রের এরকম আকাশকুসুম অর্থ স্বয়ং গাঁজা সেবনকারী স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী জীর নিজের মস্তিষ্কের কল্পনার দ্বারা তৈরী, যা কিনা ভাং সেবনের দ্বারা রচনা করেছেন, স্বামীজী মনে মনে ঠিক করে নিয়ে ছিলেন যে এই সত্যার্থ প্রকাশ নামক পুস্তকের মাধ্যমে কেবলমাত্র মিথ্যাকথা প্রচার করবেন, কাউকে কোন সঠিক তথ্য জানতে দেবেন না, তা না হলে ওনার মতবাদ অন্যদের থেকে ভিন্ন কি করে হবে ?

✅ উক্ত উপনিষদের সঠিক অর্থ দেখে নিন —


ॐ  শং নঃ মিত্র শং বরুণঃ। শং নঃ ভবতু অর্যমা। শং নঃ ইন্দ্রঃ বৃহস্পতিঃ। শং নঃ বিষ্ণুঃ উরুক্রমঃ। নমঃ ব্রহ্মণে। নমঃ তে বাযো। ত্বম্‌ এব প্রত্যক্ষং ব্রহ্ম অসি। ত্বাম্‌ এব প্রত্যক্ষং ব্রহ্ম বদিষ্যামি। ঋতং বদিষ্যামি। সত্যং বদিষ্যামি। তত্‌ মাম্‌ অবতু। তত্‌ বক্তারম্‌  অবতু। অবতু মাম। অবতু বক্তারম্‌। ॐ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ। 

                                                        - কৃষ্ণ যজুর্বেদ (তৈত্তিরীয় উপনিষদ) (শিক্ষা বল্লী, প্রথম অনুবাক)


প্রকৃত অর্থ — প্রাণ বৃত্তি এবং দিবসের অভিমানসম্পন্ন দেবতা যিনি মিত্র তিনি আমাদের জন্য কল্যাণকারী হোক, অপান বৃত্তি এবং রাত্রির অভিমানী দেবতা যিনি বরুণ, তিনি আমাদের জন্য কল্যাণকারী হোক, চক্ষুর বিষয়ক বা সূর্য বিষয়ের অভিমানী যে অর্যমা তিনি আমাদের কল্যাণ করুক, বল বিষয়ে অভিমানী যে ইন্দ্র এবং বাণী ও বুদ্ধি বিষয়ে অভিমানী যে বৃহস্পতি তিনি আমাদের কল্যাণ করুক, উরুক্রম বলি রাজা হতে তিন পাদের যাচনার দ্বারা সর্ব রাজ্য গ্রহন অর্থাৎ বিষ্ণুরূপ ধারণ করে বিস্তীর্ণ পাদ(চরণ)-এর র ক্রম এবং পাদ(চরণ)-এর অভিমানী যে বিষ্ণু তিনি আমাদের কল্যাণ করুক, ব্রহ্ম রূপ যে বায়ু আছে তার অর্থ নমস্কার করা, তুমি চক্ষু আদির উপেক্ষা করে বাহ্য সমীপ এবং অন্তরায় হতে রহিত প্রত্যক্ষ ব্রহ্ম এই কারণে আমি আপনাকে প্রত্যক্ষ ব্রহ্ম বলে অভিহিত করি এবং যেরকম শাস্ত্রে বর্ণিত আছে এবং যেরকম করার যোগ্য এরকম বুদ্ধি বিষয়ে সম্যক নিশ্চয়কারী যে অর্থ ঋত বলে অভিহিত, যা আপনার অধীন এইজন্য আপনাকে ঋত বলা হয়, বাণী এবং শরীর দ্বারা সম্পাদিত হয়েছে যে সত্য তাও আপনার অধীন, এই কারণে আপনাকে সত্য বলি, তাই সর্বাত্মা বায়ু নামক ঈশ্বর আমার রক্ষা করুন, তিনি বক্তার রক্ষা করুক, আমার রক্ষা করুক, ॐ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ তিনবার শান্তি বলার দ্বারা আধ্যাত্মিক, আধিভৌতিক এবং আধিদৈবিকরূপে যে বিদ্যার প্রাপ্তি বিষয়ে বিঘ্ন আছে তার থেকে নিবৃত্তি প্রাপ্তি হোক ।

           —— এই হলো মন্ত্রটির প্রকৃত অর্থ । এখানে ত্বাম্‌ এব প্রত্যক্ষং ব্রহ্ম — পরিস্কার ভাবে বলা হয়েছে “ হে ব্রহ্ম আপনি প্রত্যক্ষ — আপনাকে দেখা যায় অর্থাৎ ব্রহ্ম সাকার হয়ে প্রত্যক্ষরূপে দেখা দেন। এটিই বেদমন্ত্রের প্রকৃত অর্থ।

কিন্তু দয়ানন্দ তার সত্যার্থ প্রকাশে এই মন্ত্রের কাল্পনিক ব্যাখ্যা অনুবাদ করেছেন ও তার‌ই সাথে ব্রহ্মের সাকারবাদকে চাপা দেবার অপপ্রয়াস করেছেন, এর দ্বারা স্বামী দয়ানন্দের বুদ্ধির ঘাটতি থাকার পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে পরিষ্কার ভাবে

এখন ॐ -কার প্রকরণ বিষয়ে আলোচনা করা যাক-


স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী লিখেছেন-

'ওম্‌' এই ॐ কার শব্দ পরমেশ্বরের সর্বোত্তম নাম । কারণ ইহাতে অ উ এবং ম্‌ এই তিন অক্ষর মিলিয়া এক ওম্‌ সমুদায় হইয়াছে। এই একটি নাম হইতে পরমেশ্বরের অনেক নাম সূচিত হয়, যথা 'অ'কার হতে বিরাট, অগ্নি এবং বিশ্ব প্রভৃতি; 'উ;'কার হতে হিরণ্যগর্ভ, বায়ু, তৈজস প্রভৃতি; 'ম'কার হতে ঈশ্বর, আদিত্য এবং প্রাজ্ঞ প্রভৃতি নাম সূচিত হয় ও গৃহীত হয়। প্রকরণানুসারে এই সকল যে পরমেশ্বরেরই নাম তাহা বেদাদি সত্য শাস্ত্রে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যাত রয়েছে


 উপরোক্ত অর্থ দেখে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর বেদজ্ঞতা এই কার এর অর্থ নিরূপন দ্বারা জ্ঞাত হয়ে যায়, ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে "প্রণব(ॐ)" - এর ব্যাখ্যা বিস্তৃতভাবে বেদাদি শাস্ত্রে প্রসিদ্ধ আছে, কিন্তু দয়ানন্দ নিজের অর্থের স্বপক্ষে কোন প্রমাণ দেননি, এরকম কোন মন্ত্র রয়েছে যেখানে দয়ানন্দের লেখা ভাবার্থের উল্লেখ রয়েছে তার উল্লেখও নিজের পুস্তকে করেন নি,কারের এই অর্থ না বেদের সংহিতায়, না ব্রাহ্মণে, না আরণ্যকে, না উপনিষদে আর না পুরাণের কোথাও পাওয়া যায় । কোথাও এইরকম অর্থ নেই।


দেখুন প্রকৃতপক্ষে ঋগবেদে এই প্রকার কথন আছে-

ঋচো অক্ষরে পরমে ব্যোমন্যস্মিদেবা অধি বিশ্বে নিষদূঃ ।

যস্তন্ন বেদ কিমচা করিষ্যতি য ইত্তদ্বিদুস্ত ইমে সমাসতে ॥

   (তথ্যসূত্র — ঋগবেদ ১/১৬৪/৩৯)

ভাষ্য -

ইতি বিদুষঃ উপদিশতি কতমত্তদেতদক্ষরমোমিত্যেষা বাগিতি শাকপূণির্ধচোহ্মক্ষরে পরমে ব্যবনে ধীযন্তে নানাদেবতেষু চ মন্ত্রেষ্বতদ্ধবা এতদক্ষরং যতসর্বো ত্রযীং বিদ্যানং প্রতি প্রতীতি চ ব্রাহ্মণম্‌ নিরুক্ত ১৩/১০, পরিশিষ্ঠ প্র ভাষ্যম্‌ কতমত্‌ তদক্ষরম্‌ ইতি ম্‌ ইত্যেষা বাক্‌ ইতি শাকপূণেঃ অভিপ্রাযঃ কারমৃতেন হ্মর্চযন্তি তস্যা অক্ষরে পরমে ব্যোমন্‌ ব্যোম বিবিধমস্মিন্‌ শব্দজাতমোতমিতি ব্যোম তস্মিন্‌ নিসৃপু মাত্রাসু অকারোকারমকারলক্ষণাসূপশান্তাসু যদবশিপ্যতে তদক্ষরং পরমং ব্যোম শব্দসামান্যমভিব্যক্তমিত্যভিপ্রাযঃ যস্মিন্দেবাঃ অধিনিষিণ্ণাঃ‌ সর্বে, ঋগাদিষু যে দেবাঃ তে মন্ত্রদ্বারেণাক্ষরে নিষিণ্ণাঃ‌ তস্য শব্দকারণত্বাত্‌ অথবা প্রথমাযাং মাত্রাযাং পৃথিবী আগ্নেঃ ঋগবেদঃ পৃথিবীলোকানিবাসিন ইত্যেবং দ্বিতীযাযাং মাত্রাযাং অন্তরিক্ষম্‌ বাযুঃ যংজূষি তকনিবাসিনী জনা ইতি বিজ্ঞায়তে ইতি তৃতীযাযাং মাত্রাযাং দ্যৌঃ অদ্বিত্যঃ সামানি তঌকনিবাসিনী জনা ইতি বিজ্ঞাযতে হী কার এবেদং সর্বম্‌ ইতি য স্তন্ন বেদ অনযা বিভূত্যাক্ষরম্‌ কিমসৌ ঋচা ঋগাদিভিমৈত্রৈঃ করিষ্যতি যস্তম্রাক্ষরাত্মনা পশ্যতি য ইত্তদ্বিদুস্ত ইমে সমাসতে ইতি বিদুষ উপদিশতি তে হি তত্‌পরিজ্ঞানাত্‌ তাদ্ভাব্যমুপগতাঃ প্রণববিগ্রহমাত্মানমনুপ্রবিশ্য সমীকৃতা নির্বান্তি শান্তাচিষং ইবানলা ইতি।


ভাবার্থঃ- অবিনাশী ঋচা পরম ব্যোম  দ্বারা পূর্ণ এর মধ্যে সম্পূর্ণ দেব শক্তির নিবাস, যে এই তথ্য অবগত নয় তার জন্য এই ঋচার কোন কার্যকরীতা নেই, আর যে এই তথ্য সম্বন্ধে অবগত সে এই ঋচার সদুপযোগ করে। এই মন্ত্রের ব্যাখ্যান ॐকারপরত্ব, আদিত্যপরত্ব তথা আত্মতত্ত্ব পরতা এর মধ্যে প্রথম শাকপূণি নামক নিরুত্তকারের মতে ॐকার পরতা নির্ণয় করে।


(প্রশ্ন) ঃ- যে পরম ব্যোম সংজ্ঞক অক্ষরে দেবাদি স্থিত, সেই অক্ষর কি?

(উত্তর) ঃ-  কার এই বাক নাম শব্দ পরম উৎকৃষ্ট (ব্যোমন্‌) নাম, সবাইকে রক্ষাকারী যে ॐ কার , তার দ্বারাই সমগ্র ঋগবেদের মন্ত্র অধ্যয়ন করা হয়, এবং অন্যান্য সমস্ত দেবতা সর্ব মন্ত্রে স্থিত, মন্ত্রের কারণ হওয়ার জন্য এই অক্ষর ব্যাপ্ত আছে, কারণ সর্ব বেদ ত্রয়ী বিদ্যার প্রতি এই অক্ষর ব্যাপ্ত আছে, এরকম ভাবে ব্রাহ্মণ ও প্রতিপাদিত করেন না।ॐ কার বিনা ঋগাদি মন্ত্রের উচ্চারণ হয় না, এরমধ্যে ব্যোম সংজ্ঞক যে অক্ষর আছে তার মধ্যে নানাবিধ ব্যোম সংজ্ঞক যে অক্ষর আছে তার মধ্যে নানাবিধ শব্দ সমূহ স্থিত আছে।


(প্রশ্ন) ঃ- মন্ত্র তথা ॐ কার শব্দরূপ, এবং এই দুইই আকাশে স্থিত রয়েছে, এই শব্দ সমূহॐ কারে স্থিত কিভাবে বলতে পারো?

(উত্তর) ঃ- ॐ কার নাম এখানে অকারাদি মাত্রার শান্ত হওয়ার পর যা পরিশেষ থাকে সেই শব্দ সামান্য ব্যোম নামক অক্ষর। এর দ্বারা ওই অক্ষর সামান্য নাদরূপ ॐকারে মন্ত্র স্থিত আছে, এবং এতে সমস্ত দেবতা স্থিত, যেহেতু মন্ত্রে সমস্ত দেবতা স্থিত এবং এর মধ্যে সমস্ত দেবতা স্থিত আছে, কারণ মন্ত্রে দেবতা স্থিত আছে এবং পূর্বোক্ত মন্ত্র নাদ নামক অক্ষরে স্থিত আছে, এই মন্ত্র  দ্বারা সমস্ত দেবতাও মন্ত্রে স্থিত অথবা প্রথম মাত্রায় পৃথ্বীলোক, অগ্নি, ঋগবেদ এবং পৃথ্বীলোক নিবাসী জন স্থিত আছে, এবং দ্বিতীয় মাত্রায় অন্তরিক্ষ, বায়ু, যজুমন্ত্র এবং অন্তরিক্ষ লোক নিবাসী জন স্থিত আছে, এবং তৃতীয় মাত্রায় দ্যৌলোক, আদিত্য, সাম মন্ত্র এবং স্বর্গলোক নিবাসীজন স্থিত আছে, এই কারণে মাণ্ডূক্য উপনিষদে (ॐ কার এবেদং সর্ব) এই কথা বলা হয়েছে, যে এই বিভূতি সহিত অক্ষর কে জানতে পারে না, সে ঋগবেদ মন্ত্র দ্বারা কি করবে? অর্থাৎ বিনা ॐ কার কে না জেনে ওই মন্ত্রের অর্থ জানলেও ওই মন্ত্র ফল প্রদান করে না, এবং যে পুরুষ উক্ত রূপ নাদ বিভূতি সহিত সেই অক্ষর জানতে সক্ষম, ওই মনুষ্য প্রণব জ্ঞান দ্বারা অক্ষর ভাবকে প্রাপ্ত হয় এবং নিজ আত্মাকে প্রণব স্বরূপ উপলব্ধি করে প্রণবে প্রবিষ্ট হয়ে সমতাকে প্রাপ্ত হয়ে শান্ত জ্বালা অগ্রিবত (নির্বান্তি নাম নির্বাণ পদং মোক্ষং প্রাপ্তবন্তি) নির্বাণ অর্থাৎ মুক্ত হয়ে আদিত্য পক্ষে এই অর্থ বর্ণিত আছে যে ওই ব্যোম রূপ পরম অক্ষর রূপ আদিত্যের মধ্যে সমস্ত দেবতা স্থিত, মন্ত্র দ্বারা ওই আদিত্যকে যে জানতে সক্ষম নয়, সেই ব্যাক্তি ঋগবেদাদি মন্ত্রের কি করবে? যে এই নাম এবং আদিত্যকে জানতে সক্ষম সেই মনুষ্য বিদ্বজ্জন ভূমিতে সুখ পূর্বক রোগাদি রহিত ভোগ সম্পন্ন চিরকাল অতিবাহিত করেন, মাণ্ডূক্য উপনিষদে এই প্রকার কথন আছে, শ্রবন করুন —

"ॐ মিত্যেতদক্ষরমিদং সর্বং তস্যোপব্যাখ্যানভূতং ভবদ্ভবিষ্যদিতি সর্বমোঙ্কার এব ।

যচ্চান্যত্ত্রিকালাতীতং তদপ্যোঙ্কার এব ॥ ১

সোঽযমাত্মাধ্যক্ষরমোঙ্কারোঽধিমাত্রং পাদা মাত্রা মাত্রাশ্চ পাদা অকার উকারো মকার ইতি ॥ ৮                            

জাগরিতিস্থানো বৈশ্বানরোঽকারঃ প্রথমা মাত্রাঽঽপ্তেরাদিমত্ত্বাদ্বাপ্নোতি হ বৈ সর্বাঙ্কামানাদিশ্চ ভবতি য এবং বেদ ॥ ৯  

স্বপ্নস্থানস্তৈজস উকারো দ্বিতীয়া মাত্রোত্‌কর্ষদুভযত্বাদ্বোত্‌ক্ররষতি হ বৈ জ্ঞানসংততিম্‌ সমানশ্চ ভবতি নাস্যাব্রহ্মবিত্‌কুলে ভবতি য এবং বেদ ॥ ১০

সুষুপ্তস্থানঃ প্রাজ্ঞো মকারস্তৃতীযা মাত্রা মিতেরপীতের্বা মিনোতি হ বা ইদং সর্বমপীতিশ্চ ভবতি য এবং বেদ ॥ ১১    

অমাত্রশ্চতুর্থোঽব্যবহার্যঃ প্রপঞ্চোপশমঃ শিবোঽদ্বৈতঃ এবমোঙ্কার আত্মৈব সংবিশত্যাত্মনাত্মানং য এবং বেদ ॥ ১২        

(মাণ্ডূক্য উপনিষদ)

অর্থ ঃ- কার অবিনাশী ব্রহ্ম, তার মহিমাকে প্রত্যক্ষ উপলব্ধকারী হল এই সম্পূর্ণ বিশ্ব, ভূত, ভবিষ্যত, বর্তমান আদি তিন কাল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এই সংসার কারময় এবং তিন কালের উর্দ্ধে যে তত্ত্ব আছে তাহাও কার, যা বাচ্যের প্রধানতা কার চার পাদ ধারী আত্মা, এরকম পুর্বে ব্যাখ্যান বলা হয়েছে, (সর্বং হ্যোতিদ্ব্র‌হ্মাযমাত্মা ব্রহ্ম সোঽযমাত্মা চতুষ্পাত) সর্ব (কারণ এবং কার্য) ই ব্রহ্ম, সর্ব যা কার মাত্রা, তা শ্রুতি বলছে, তাই ইহাই ব্রহ্ম এবং ব্রহ্মই আত্মা, তাই আত্মাই অক্ষর দৃষ্টি দ্বারা কার , তা মাত্রার বিষয়ে স্থিত আছে, এই আত্মাই অধ্যক্ষর, অক্ষরের আশ্রয় নিয়ে যার অভিধান (বাচক) এর প্রধানতার বর্ণনা করা যায়, তাকে অধ্যক্ষর বলা হয়, এই আত্মা চার পাদধারী, আত্মার যে পাদ আছে তা কারের মাত্রা, এবং কারের যে মাত্রা আছে তা আত্মার পাদ স্বরূপ, 'অ' কার 'উ' কার এবং 'ম' কার এই তিন কারের মাত্রা ।

কারের প্রথম মাত্রা 'অ' কার ব্যাপ্ত এবং আদি হওয়ার কারণে জগত রহিত স্থানরূপ বৈশ্বানর নামক প্রথম চরণ, যেরকম 'অ' কার নামক অক্ষর আদিমান, সেরকম বৈশ্বানর ও, এই সমানতার কারণে বৈশ্বানরই 'অ' কারের রূপতা, 'অ' কার নিশ্চয়ই সম্পূর্ণ বানী, শ্রুতির অনুসারে সমস্ত বানী ব্যাপ্ত।

কার এর দ্বিতীয় মাত্রা 'উ'কার শ্রেষ্ঠ এবং দ্বিভাবাত্মক হওয়ার কারণ স্বপ্ন স্থান রূপ তৈজস নামক দ্বিতীয় চরণ উৎকর্ষ এর কারণ যে প্রকার 'অ'কার হতে 'উ'কার উৎকৃষ্ট, ওই প্রকার 'উ'কার 'অ'কার এবং 'ম'কার এর মধ্যে স্থিত, সেই প্রকার বিশ্ব এবং প্রজ্ঞা এর মধ্যে তৈজস স্থিত, সুষুপ্তি যার স্থান এবং প্রজ্ঞা মান ও লয়ের কারণ কার এর তৃতীয় মাত্রা 'ম'কার, মাপক ও বিলীন কর্তা হওয়ার জন্য সুষুপ্ত স্থান নামক প্রাজ্ঞ নামক তৃতীয় চরণ, এই প্রকার কার এর উচ্চারণ করার দ্বারা 'অ'কার এবং 'উ'কার এবং অন্তিম অক্ষরে একীভূত হয়ে ওই প্রকার সুষুপ্তি এর সময় বিশ্ব এবং তৈজস প্রজ্ঞাতে লীন হয়ে যায়। 'অ'মাত্র অর্থাৎ মাত্রা রহিত কার অব্যবহার্য, প্রপঞ্চাতীত এবং অদ্বৈত শিবরূপ, তাহাই ব্রহ্মের চতুর্থ চরণ, যে এই প্রকার জ্ঞাত হন, সে আত্মজ্ঞানী এবং আত্মার দ্বারা পরব্রহ্মতে লীন হয়ে যায়।


এছাড়াও, এই প্রকার অন্য উপনিষদেও বর্ণনা আছে-


উপুরস্তাদ্‌ব্রহ্মণস্তস্য বিষ্ণোরদ্‌ভুতকর্মণঃ ।

রহস্যং ব্রহ্মবিদ্যাযা ধৃতাগ্নিং সংপ্রচক্ষতে ॥১

ওমিত্যেকাক্ষরং ব্রহ্ম যদুক্তং ব্রহ্মবাদিভিঃ ।

শরীরং তস্য বক্ষ্যামি স্থানকালত্রযং তথা ॥২

তত্র দেবাস্ত্রযঃ প্রোক্তা লোকা বেদাস্ত্রযোঽগ্নযঃ ।

তিস্রো মাত্রার্ধমাত্রা চ প্রত্যক্ষস্য শিবস্য তত্‌ ॥৩

ঋগ্বেদো গার্হপত্যং চ পৃথিবী ব্রহ্ম এব চ ।

অকারস্য শরীরং তু ব্যাখ্যানং ব্রহ্মবেদিভিঃ ॥৪

যজুর্বেদোঽন্তরিক্ষং চ দক্ষিণাগ্নিস্তথৈব চ ।

বিষ্ণুশ্চ ভগবান্‌ দেব উকারঃ পরিকীতির্তঃ ॥৫

সামবেদস্তথা দ্যৌশ্চহবনীযস্তথৈব চ ।

ঈশ্বরঃ পরমো দেবো মকারঃ পরিকীর্তিতঃ ॥৬

সূর্যমন্ডলমাভাতি হ্যকারশ্চন্দ্রমধ্যগঃ ।

উকারশ্চন্দ্রসংকাশস্তস্য মধ্যে ব্যবস্থিতঃ ॥৭

মকারশ্চাগ্নিসংকাশো বিধূমো বিদ্‌যুতোপমঃ ।

তিস্রো মাত্রাস্তথা জ্ঞেযাঃ সোমসূর্যাগ্নিতেজসঃ ॥৮

শিখা চ দীপসংকাশা যমিন্নু পরিবর্ততে ।

অর্ধমাত্রা তথা জ্ঞেযা প্রণবস্যোপরি স্থিতা ॥৯

(ব্রহ্মবিদ্যা উপনিষদ)


উক্ত শ্রুতির দ্বারাও সিদ্ধ হচ্ছে যে অমাত্র অর্থাৎ মাত্রা রহিত এক অক্ষরই ঈশ্বরের সর্বোত্তম নাম, এছাড়া ভগবত গীতার অধ্যায় ৮/১৩ এ পরমশৈব ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলছেন —


ॐ মিত্যেকাক্ষরং ব্রহ্ম ব্যাহরন্মামনুস্মরন্‌ ।

যঃ প্রযার্ত ত্যজন্দেহং স যাতি পরমং গতিম্‌ ।। 

(শ্রীমদ্ ভগবতগীতা ৮/১৩)

ভাবার্থ ঃ- যে ব্যাক্তি এই একক্ষর স্বরূপ ব্রহ্মকে উচ্চারণ করে, এবং এর অর্থ স্বরূপ আমাকে ব্রহ্মরূপ চিন্তন করে শরীর ত্যাগ করে, সেই ব্যক্তি পরমগতি প্রাপ্ত হন ।। ১৩ ।।

কিন্তু দয়ানন্দ দ্বারা অনুমদিত (কল্পিত) অর্থ কোন সনাতনী ধর্মগ্রন্থের সাথে মিল পাওয়া যায় না, এই কারণে সত্যার্থ প্রকাশে এই কারের অর্থ মিথ্যা এবং বিকৃত এটা বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের বোঝা উচিত।


🟪 (২) দয়ানন্দ সরস্বতীর দ্বিতীয় দাবী (২) 🟪


সত্যার্থ প্রকাশ প্রথম সমুল্লাস, পৃষ্ঠা ৩


"স ব্রহ্মা স বিষ্ণুঃ স রুদ্রস্‌ স শীরস্সোঽঅক্ষরস্‌ স পরমঃ স্বরাট্‌ ।

স ইন্দ্রস্‌ স কালাগ্নিস্‌ স চন্দ্রমাঃ ।। ৭ ।।  -- কৈবল্য উপনিষৎ


অর্থঃ- তিনি সমস্ত জগৎ সৃষ্টি করিয়াছেন বলিয়া 'ব্রহ্মা', সর্বত্র ব্যাপক বলিয়া 'বিষ্ণু', দুষ্টদিগকে দণ্ড দিয়া রোদন করান বলিয়া 'রুদ্র', মঙ্গলময় এবং সকলের কল্যাণকারী বলিয়া 'শিব'

'অক্ষর' যিনি সর্বত্র ব্যাপ্ত এবং অবিনাশী 'স্বরাট', স্বয়ং প্রকাশস্বরূপ এবং 'কালাগ্নি' প্রলয়কালে সকলের কাল এবং কালেরও কাল, এইজন্য পরমেশ্বরের নাম 'কালাগ্নি'।

Satyartha Prakash Khandan Upnishad


এরপরের পৃষ্ঠা ৬এ লিখছেনঃ-

এজন্য মনুষ্যগণ পরমেশ্বরেরই স্তুতি, প্রার্থনা এবং উপাসনা করিবে, তদ্ভিন্ন অন্য কাহারও কখনও করিবে না। কারণ ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহাদেব নামক পূর্ব পুরুষ মহামনা, বিদ্বদ্‌গণ, দৈত্য-দানব প্রভৃতি নিকৃষ্ট মনুষ্যগণ এবং অন্য সাধারণ মনুষ্যগণও পরমেশ্বরেই বিশ্বাস স্থাপন করিয়া তাহারই স্তুতি, প্রার্থনা এবং উপাসনা করিতেন, তদ্ভিন্ন অপর কাহারও করিতেন না। আমাদের সকলেরও সেইরূপ করা উচিৎ।

Satyartha Prakash exposed



❌ দয়ানন্দ সরস্বতীর দ্বিতীয় দাবীর খণ্ডন (ISSGT) —

সমীক্ষাঃ- ধন্য স্বামীজী আপনি , ধূর্ত যদি হতে হয় তাহলে মনে হয় আপনার মতোই হওয়া উচিত, অনেক বড় বড় ধূর্ত দেখেছি, কিন্তু আপনার মতো ধূর্ত দ্বিতীয় আর অন্য কেউ নেই, আপনি তো ১০ টি উপনিষদকে মান্যতা দিয়েছেন সত্যার্থ প্রকাশ পুস্তকের ৩য় সমুল্লাসে, প্রমাণ👇

Ten upnishad arya samaj exposed

 

কিন্তু আজ কেবলমাত্র নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য ১১তম উপনিষদ হিসেবে আমাদের শৈবদের মান্য কৈবল্য উপনিষদকেও মেনে নিলেন। যদিও কৈবল্য উপনিষদের ৮নং মন্ত্রে আপনার উল্লেখ করা এই মন্ত্রটি রয়েছে, এটি কৈবল্য উপনিষদের ৭নং মন্ত্র নয়। দয়ানন্দ সরস্বতী জী ভাঙের নেশায় হয়তো মন্ত্রের সংখ্যা কত সেটিও নির্ণয় করতে অক্ষম হয়ে গিয়েছিলেন। যাই হোক

দয়ানন্দ সরস্বতী জী আপনি বললেন যে, পরমাত্মার গুণবাচক নাম হল - রুদ্র, শিব। দুষ্টদিগকে দণ্ড দিয়া রোদন করান বলিয়া 'রুদ্র', মঙ্গলময় এবং সকলের কল্যাণকারী বলিয়া 'শিব'

অথচ, আপনিই আপনার তথাকথিত ত্রৈতবাদ দর্শনের ভিত্তিতে দাবী করে বলেছেন যে - পরমাত্মা কখনোই কোনো জীবকে দুঃখ থেকে উদ্ধার করে না, পরমাত্মা জীবের কল্যান বা মঙ্গল‌ও করেন না। জীব শুধু মাত্র নিজের কর্মফল অনুযায়ী দুঃখ পায় বা সুখ পায়। পরমাত্মা জীবকে দুঃখ বা সুখ কোনো কিছুই দেন না বা উদ্ধার‌ও করেন না, শুধু কর্মফলটুকুই দিতে পারেন, ঈশ্বর স্বাধীন ভাবে জীবকে সুখ দুঃখ দিতে পারেন না(অষ্টম সমুল্লাস/তৃতীয় নাস্তিকের প্রশ্নের উত্তরে দয়ানন্দ সরস্বতী জী এটিই বলেছেন)।

তাহলে দয়ানন্দ সরস্বতী জী, আপনি এবার বলুন কৈবল্য উপনিষদের মন্ত্র উল্লেখ করে কেন বললেন যে, “দুষ্টদিগকে দণ্ড দিয়া রোদন করান বলিয়া 'রুদ্র', মঙ্গলময় এবং সকলের কল্যাণকারী বলিয়া 'শিব'।” — এটা কেন বললেন ?

পরমেশ্বরের কাছে বেদমন্ত্র কেন পাঠ করা হয় ? যাতে তিনি আমাদের জীবেদের মঙ্গল করেন, দুঃখ থেকে উদ্ধার করেন, কিন্তু সুখ দুঃখ সবটাই যদি জীবের নিজের কর্মফলের উপরেই নির্ভর করে তাহলে আপনার কথা অনুযায়ী তো মনে হচ্ছে, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে লাভ কি ? সম্পূর্ণটাই তো জীবের নিজের শক্তির উপর নির্ভরশীল, আলাদা করে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে তো কোনো লাভ ই নেই। সুতরাং দয়ানন্দ সরস্বতী জী বেদমন্ত্রের প্রার্থনাকেও নিরর্থক প্রমাণ করে দিয়েছেন।  আর অন্য দিকে নিজের‌ই মতবাদের বিরুদ্ধে গিয়ে দয়ানন্দ সরস্বতী জী বলেছেন যে, পরমাত্মার গুণবাচক নাম হল - রুদ্র, শিব। দুষ্টদিগকে দণ্ড দিয়া রোদন করান বলিয়া 'রুদ্র', মঙ্গলময় এবং সকলের কল্যাণকারী বলিয়া 'শিব'। — যা চরম হাস্যকর ও স্ববিরোধী বক্তব্য।

আপনি যে চরম মিথ্যাবাদী ! ও স্ববিরোধী বক্তব্যের দোষে দুষ্ট তা দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।


এছাড়া কৈবল্য উপনিষদের প্রমাণ সহিত ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং শিবকে ঈশ্বর বানালেন এবং সঙ্গে সঙ্গে ওনাদের পূর্বজ বিদ্বান বানিয়ে দিলেন, আপনার বুদ্ধির নমুনা তো এখান থেকেই পাওয়া যাচ্ছে, 

 হে দয়ানন্দ সরস্বতী! আপনার কথা অনুযায়ী “ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং শিব যে মনুষ্য ছিল,” এর প্রমাণ কোথায় ❓

 যদি প্রমাণ নাই ছিল তবে কোনো উল্টো পাল্টা সংস্কৃত শ্লোক লিখে দিতেন, তাতে আপনার মন্দ বুদ্ধির নিয়োগী চ্যালারা একেই লক্ষণরেখা বলে মেনে নিতেন, এসব চতুরামি আপনার দ্বারাই সম্ভব, ব্রহ্মা আদির নাম ঈশ্বরের বলে স্বীকার করে নেবার পরেও ওনাদের পূর্বজ বিদ্বান বানিয়ে দেওয়া এবং আপনার এই ভাবার্থ ও অশুদ্ধ ছিল, কৈবল্য উপনিষদের এই মন্ত্রের সঠিক অর্থ এই প্রকার —

স ব্রহ্মা স বিষ্ণুঃ স রুদ্রস্‌স শিবস্‌সোঽক্ষরস্‌স পরমঃ স্বরাট্‌ ।

স ইন্দ্রস্‌স কালাগ্নিস্‌স চন্দ্রমাঃ ॥ ৭       ---কৈবল্য উপনিষদ


♦️প্রকৃত অর্থ - ওই ব্রহ্মা রূপই জগতের রচনা কর্তা, বিষ্ণু রূপই জগতের পালনর্কতা, রুদ্র রূপই দুষ্টদেরকে তাদের কর্মফল অনুসারে দণ্ড দানের মাধ্যমে রোদন প্রদানকারী শিবই মঙ্গলকারী, তিনিই স্বরাট ইন্দ্র, চন্দ্রমা এবং কালাগ্নিরূপ ধারণ করে প্রলয় করেন।

এই সমস্ত দেবতা তারই স্বরূপ, না হলে আপনি বলুন এখানে কোন ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহাদেবের কথা বলেছেন, এই তিন বিদ্বান কার পুত্র ? 

বলুন... তারা কি স্বয়ং নিজে থেকেই উৎপন্ন হয়ে গিয়েছেন ? এমনটা যদি হয় তাহলে তো আপনার নিজের সৃষ্টি ক্রমের মান্যতার বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে। আপনার মান্যতা অনুসারে মাতা পিতা ছাড়া তো মনুষ্য উৎপন্ন হবে না।

দয়ানন্দ সরস্বতী জী নিজেই উল্টোপাল্টা লিখে বসে আছেন।

 আসলে এটাই আপনার ভাঙ্গের তরঙ্গ, যা আপনার আত্মচরিতে লেখা আছে, আপনি নিজেই বলেছেন যে 'আমার ভাঙ্গ পানের এরকম নেশা হয়ে গিয়েছিল যে, কখনো কখনো সেই কারণে আমি সর্বক্ষণ বেহুশ হয়ে পড়ে থাকতাম, একদিন পর হুশ আসত।

 স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী জী কখনোই আমাদের পৌরাণিকদের মান্যতা অনুসারে ১০৮টি উপনিষদকে মানতেন না। দয়ানন্দ সরস্বতী জী “কৈবল্য উপনিষদ” কে প্রামাণিক বলে কোথাও উল্লেখ করেননি, তার অনুসারী আর্যসমাজীরাও কৈবল্য উপনিষদ কে মান্য উপনিষদ বলে স্বীকার করে না।

অথচ নিজের কাল্পনিক মতবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য দয়ানন্দ সরস্বতী “কৈবল্য উপনিষদ” কে প্রামাণ্য হিসেবে ব্যবহার করেছেন তার সত্যার্থ প্রকাশে। দয়ানন্দ সরস্বতী তথা আর্যসমাজ পরমেশ্বরের সাকারবাদে বিশ্বাসী নন, অথচ কৈবল্য উপনিষদে পরমেশ্বর শিবের সাকার রূপের পরিষ্কার ভাবে বর্ণনা রয়েছে, 

 সেই কৈবল্য উপনিষদের ৭নং শ্লোক থেকে পরমব্রহ্মের সাকার হবার পরিষ্কার বর্ণনা দেখে নিন 👇

তমাদিমধ্যান্তবিহীনমেকং বিভুং চিদানন্দমরূপমদভুতম্।

তথাদিউমাসহাযং পরমেশ্বরং প্রভুং ত্রিলোচনং নীলকণ্ঠং প্রশান্তম্।

ধ্যাত্বা মুনির্গচ্ছতি ভূতযোনিং সমস্তসাক্ষিং তমসঃ পরস্তাৎ  ॥৭॥

অর্থ — এইভাবে যিনি অচিন্ত্য, অব্যক্ত তথা অনন্তরূপে যুক্ত, কল্যাণকারী, শান্ত-চিত্ত, অমৃত, যিনি নিখিল ব্রহ্মান্ডের মূল কারণ, যার আদি, মধ্য এবং অন্ত নেই, যিনি অনুপম, বিভু(বিরাট্) এবং চিদানন্দ স্বরূপ, অরূপ এবং অদ্ভুত, এভাবে সেই উমা সহিত পরমেশ্বরকে , সম্পূর্ণ চর-অচরের পালনকর্তাকে, শান্তস্বরূপ, ত্রিনেত্র স্বরূপ, নীলকণ্ঠকে যিনি সমস্ত ভূত সমূহ তথা প্রাণীদের মূল কারণ, সবকিছুর সাক্ষী এবং অবিদ্যা রহিত প্রকাশিত হচ্ছে, এভাবে সেই(প্রকাশপুঞ্জ পরমাত্মা) কে যোগীজন ধ্যানের মাধ্যমে গ্ৰহণ করেন ॥৭


 কৈবল্য উপনিষদের শ্লোক থেকে পরিষ্কার ভাবেই বোঝা যাচ্ছে যে পরমেশ্বর শিবের সাথে উমা অর্থাৎ মাতা পার্বতী রয়েছেন, শিবের ত্রিনেত্র, কণ্ঠ নীল বর্ণের । সুতরাং দয়ানন্দ সরস্বতীর নিজের মান্যতা দেওয়া বক্তব্য থেকে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর‌ই দাবী খণ্ডিত হয়ে গেল। 

😬 গোঁজামিল (১) — কোনো কোনো আর্যসমাজী কৈবল্য উপনিষদের বিষয়টি এড়িয়ে যাবার জন্য বলতে পারে যে, স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী জী পৌরাণিকদেরকে 'সব‌ই ঈশ্বরের নাম' বোঝাবার জন্য পৌরাণিকদের মান্য কৈবল্য উপনিষদ থেকে এই লাইটি উদ্ধৃতি দিয়ে ব্যবহার করেছেন। 

😏 জবাব — আমি সেই আর্যসমাজী কে বলছি, আপনি যে দাবীটা করলেন এটি দয়ানন্দ সরস্বতী জী কি আপনার কানে কানে এসে বলে গিয়েছেন ? তিনি যদি পৌরাণিকদের জন্য‌ই কৈবল্য উপনিষদের মন্ত্র ব্যবহার করতেন তাহলে তিনি সত্যার্থ প্রকাশে সেই কথাটি উল্লেখ করলেন না কেন ? দয়ানন্দ সরস্বতী জী যা বলেননি সেটি আপনি কি করে বলছেন ? আপনি কি দয়ানন্দ সরস্বতী জীর ঐ সত্যার্থ প্রকাশ পুস্তক লেখার সময় উপস্থিত ছিলেন ? নাকি আপনি CCTV CAMERA লাগিয়ে Time Machine এ Time Travel করে দয়ানন্দ সরস্বতী জীর কাছ থেকে এই গোঁজামিল দেবার তাজা তাজা গল্প জেনে এসেছেন ?

😬 গোঁজামিল (২) — আবার কোনো কোনো আর্যসমাজী বলতে পারে যে, কৈবল্য উপনিষদের যেটুকু অংশ বেদসম্মত দয়ানন্দ সরস্বতী জী ততটুকুই মেনেছেন, আমরা আর্যসমাজীরাও যেকোনো গ্রন্থের যেখানে যেখানে বেদসম্মত অংশ আছে ততটুকুই মানি।

😏 জবাব — আমি সেই সব আর্যসমাজী কে বলছি, আপনি যে দাবীটা করলেন এই নিয়ম মানলে তো ১৮টা পুরাণকেও ত্যাগ করতে পারবেন না আপনারা, কেননা পুরাণেও পরমেশ্বরকে নিরাকার বলা হয়েছে আবার সাকার বলা হয়েছে। তাহলে আপনারা সমগ্র পুরাণকে ত্যাগ করতে বলেন কেন ? আমাদের পৌরাণিকদের মান্য শাস্ত্র ব্যবহার করবেন আবার সেখানে কোনটা বেদসম্মত আর কোনটা বেদসম্মত নয় সেটিও আরোপ করবেন। এটাকে তো নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য যা ইচ্ছে তাই ব্যবহার করবার মতো ধূর্তামি বলেই আখ্যা দেওয়া যায় । আচ্ছা তাহলে বলুন তো প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে বাইবেলে আর আপনারাও বেদ অনুযায়ী প্রার্থনা করেন। তাহলে কি আপনাদের বিচার বিবেচনা অনুযায়ী বাইবেল‌ও বেদসম্মত ?

আপনাদের জন্য দুঃখের বিষয় হল - দয়ানন্দ সরস্বতী শুধুমাত্র ১০টা উপনিষদ মানতে বলেছেন। এর অতিরিক্ত অন্য কোনো উপনিষদ মানতে বলেননি। তাই নিজেদের গুরু দয়ানন্দ সরস্বতীর বচনের বিরুদ্ধে গিয়ে এসব বলাটা আপনাদের স্ববিরোধী দোষে দুষ্ট করে কলঙ্কিত করে। 



🟪 (৩) দয়ানন্দ সরস্বতীর তৃতীয় দাবী (৩) 🟪


সত্যার্থ প্রকাশ প্রথম সমুল্লাস, পৃষ্ঠা ৯

"আপো নারা ইতি প্রোক্তা আপো বৈ নরসূনবঃ ।

তা যদস্যাযনং পূর্বং তেন নারায়ণঃ স্মৃতঃ ।।"                         -- মনু (১/১০)


জল এবং জীবগণের নাম 'নারা', সেই অয়ন অর্থাৎ নিবাস স্থান যাহার। অতএব সর্ব জীবে ব্যাপক পরমাত্মার নাম "নারায়ণ"


❌ দয়ানন্দ সরস্বতীর তৃতীয় দাবীর খণ্ডন (ISSGT) —

সমীক্ষাঃ- আপনার এই মনুসংহিতার শ্লোকের অর্থও অশুদ্ধ , সঠিক অর্থ এই প্রকার — "আপ্ত তত্ত্বের এক নাম 'নার' কারণ ওই নর অর্থাৎ ব্রহ্ম হতে উৎপন্ন হয়েছে, ব্রহ্মার রূপের উৎপত্তি এই নার হতে হয়েছে, এই কারণে পরমাত্মার এক নাম 'নারায়ণ'


🟪 (৪) দয়ানন্দ সরস্বতীর চতুর্থ দাবী (৪) 🟪


সত্যার্থ প্রকাশ প্রথম সমুল্লাস পৃষ্ঠা ১১ লেখা আছে-


"(গৃ শব্দে) এই ধাতু হতে 'গুরু' শব্দ সিদ্ধ হয়, 'যো ধর্ম্যান্‌ শব্দান্‌ গৃহ্নাত্যুপদিশতি স গুরুঃ' 'স পূর্বেষামপি গুরুঃ কালেনানবচ্ছেদাৎ'।                                 --- যোগ০।

যিনি সত্য, ধর্ম প্রতিপাদক এবং সর্ববিদ্যাযুক্ত বেদের উপদেষ্টা, যিনি সৃষ্টির আদিতে অগ্নি, বায়ু, আদিত্য, অঙ্গিরা এবং ব্রহ্মাদি গুরুজনেরও গুরু এবং যাহার কখনও নাশ হয় না, এই কারণে সেই পরমেশ্বরের নাম 'গুরু'।


❌ দয়ানন্দ সরস্বতীর চতুর্থ দাবীর খণ্ডন (ISSGT)  —

সমীক্ষাঃ- "ব্রহ্মাদি গুরুদের ও গুরু" এই পদ দয়ানন্দের ঘর থেকে বানানো। এটা স্বামীজীর মন্দ বুদ্ধির উদাহরণ, তাই বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের এটা মিথ্যা বলে মানা উচিৎ, কারণ বেদাদি গ্রন্থে এরকম কোথাও লেখা নেই, কিন্তু এটা অবশ্যই লেখা আছে যে ওই পরমাত্মার প্রকৃতি যুক্ত নামই ব্রহ্মা। নীচে প্রমাণ স্বরূপ দওয়া হল।


তদণ্ডমভবদ্ধৈমং সহস্রাংশুসমপ্রভম্‌ ।

তস্মিঞ্জজ্ঞে স্বযং ব্রহ্মা সর্বলোকপিতামহঃ।।             --মনুস্মৃতি (১/৯)

অর্থ — সহস্র সূর্যের সমান উজ্জ্বল অন্ডরূপ প্রকাশযুক্ত জ্যোতি পিণ্ড (হিরণ্যগর্ভ) হতে সমস্ত লোকের সৃষ্টিকারী ব্রহ্মা উৎপন্ন হয়, এর দ্বারা এটা সিদ্ধ হয় যে, আদিতে ব্রহ্মা সর্বপ্রথম উৎপন্ন হন, এবং সমস্ত লোকের উৎপত্তি ব্রহ্মার মাধ্যমে হয়, অর্থব বেদও স্পষ্ট শব্দে তার বর্ণনা করেছে-

ব্রহ্মজ্যোষ্ঠা সম্ভৃতা বির্যাণি ব্রহ্মাগ্রে জ্যোষ্ঠং দিবমা ততান ।

ভূতানাং ব্রহ্মা প্রথমোত জজ্ঞে তেনার্হতি ব্রহ্মণা স্পর্ধিতুং কঃ ।।    - অথর্ববেদ (১৯/২২/২১)

(ভূতানাং ব্রহ্মা প্রথমোত জজ্ঞে) অর্থাৎ সর্ব প্রথম ব্রহ্মা উৎপন্ন হয়, দয়ানন্দ তথা তার অল্পবুদ্ধি সম্পন্ন নিয়োগী চ্যালাদের, প্রমাণ স্বরূপ দেখা উচিৎ এটা বেদ বচন, স্পষ্ট লেখা আছে যে, আদিতে সর্বপ্রথম ব্রহ্মার উৎপত্তি হয়, তিনি সমস্ত লোকের উৎপন্নকারী সর্বশ্রেষ্ঠ, যজুর্বেদও ব্রহ্মার উৎপত্তির ব্যাপারে এই ব্যাপারে এই প্রকার বলা হয়েছে-

হিরণ্যগর্ভঃ সম্‌ অবর্ততাগ্রে ভূতস্য জাতঃপতির্‌ এক ঽ আসীৎ ।

স দাধার পৃথিবীং দ্যাম্‌ উতেমাং কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম ।।     -- যজুর্বেদ (১৩/৪)

অর্থ — সৃষ্টির প্রারাম্ভে হিরণ্যগর্ভ পুরুষ (প্রজাপতি ব্রহ্মা) সম্পূর্ণ ব্রহ্মান্ডের একমাত্র উৎপাদক ও পালক ছিলেন, উনি স্বর্গ, অন্তরিক্ষ এবং পৃথিবীর ধারণকারী, ওই প্রজাপতির জন্য আমি আহূতি সমার্পিত করছি,

 আরো বলেছে-

যত্তত্‌কারণমব্যক্তং নিত্যং সদসদাত্মকং ।

তদ্বিসৃষ্টঃ স পুরুষো লোকে ব্রহ্মএতি কীর্ত্যতে ।।                                 ---মনুস্মৃতি (১/১১)

অর্থ — নিত্য তথা সত-অসতের মূল প্রকৃতির মুখ্য আধার পরমাত্মার প্রকৃতি যুক্ত নাম ব্রহ্মা, অতঃ প্রকৃতি হতে অতীত এবং ভিন্ন ওই পরমাত্মার নাম ব্রহ্ম এবং যিনি পরমাত্মা প্রকৃতি সহিত উনার নাম ব্রহ্মা এবং আরো শুনুন মুণ্ডকোপনিষদে এই প্রকার কথন আছে-


ॐ ব্রহ্মা দেবানাং প্রথমঃ সম্বভূব বিশ্বস্য কর্তা ভুবনস্য গোপ্তা ।

য ব্রহ্মবিদ্যাং সর্ববিদ্যাপ্রতিষ্ঠামথর্বায জ্যেষ্ঠপুত্রায প্রাহ ।। ১ ।।

অথর্বণে যাং প্রবদেত ব্রহ্মাঽথর্বা তাং পুরোবাচাঙ্গিরে ব্রহ্মবিদ্যাম্‌ ।

স ভারদ্বাজায সত্যবাহায প্রাহ ভারদ্বাজোঽঙ্গিরসে পরাবরাম্‌ ।। ২ ।।

অর্থ — সর্ব জগতকে সৃষ্টিকারী ব্রহ্মা সর্বদেবতার মধ্যে সর্বপ্রথম উৎপন্ন হয়, তিনি এই বিদ্যা নিজের জ্যেষ্ঠ পুত্র অথর্ব ঋষিকে পাঠ করায়, অথর্ব এই ব্রহ্মবিদ্যা অঙ্গী ঋষিকে পড়ায়, অঙ্গী ওই বেদবিদ্যা ঋষি ভারদ্বাজ বংশীয় সত্যবাহকে পড়ায় এরপর সত্যবাহ সেই বেদবিদ্যা অঙ্গিরা ঋষিকে পড়ায়, দয়ানন্দ ও তার নিয়োগী শিষ্যদের চোখ মেলে তা দেখা উচিত যে এই বেদ বচন হতে এটা সিদ্ধ হয় যে আদিতে সৃষ্টি রচনার ইচ্ছায় সর্বপ্রথম ব্রহ্মা উৎপন্ন হয়। তার থেকে অগ্নি, বায়ু, সূর্য আদি দেবতাদের সহিত অঙ্গিরা আদি ঋষিরা বেদ  বিদ্যা প্রাপ্ত করেন, এর দ্বারা ব্রহ্মা সমস্ত প্রাণীদের উৎপন্নকারী প্রভু এবং প্রথম বেদবিদ্যা সর্বজনে প্রদানকারী প্রথম গুরু, অর্থাৎ তার কোন গুরু নেই, উনি সমস্ত প্রকার বিদ্যার উৎপাদনকারী, না হলে স্বামীজী আপনি বলুন আপনি এখানে কোন ব্রহ্মার বিষয়ে কথা বলছেন, যদি সে মনুষ্য হয়ে থাকে তো তিনি কার পুত্র ছিলেন?


🟪 (৫) দয়ানন্দ সরস্বতীর পঞ্চম দাবী (৫) 🟪


সত্যার্থ প্রকাশ প্রথম সমুল্লাস পৃষ্ঠা ৭

(বিষ্‌লৃ ব্যাপ্তৌ) এই ধাতুর সহিত 'নু' প্রত্যয় যোগ করে 'বিষ্ণু' শব্দ সিদ্ধ হয়, 'বেবেষ্টি ব্যাপ্নোতি চরাঽচরং জগং স বিষ্ণুঃ পরমাত্মা' চর এবং অচর রূপ জগতে ব্যাপক বলিয়া পরমাত্মার নাম 'বিষ্ণু'


সত্যার্থ প্রকাশ প্রথম সমুল্লাস পৃষ্ঠা ৯

(রুদির্‌ অশ্রুবিমোচনে) এই ধাতুর সহিত 'ণিচ্‌' (রক্‌) প্রত্যয় যোগে 'রুদ্র' শব্দ সিদ্ধ হয়। 'যো রোদযত্যন্যাযকারিণো জনান্‌ স রুদ্রঃ' যিনি দুষ্কর্মকারীদিহকে রোদন করান, এ কারণ সেই পরমেশ্বরের নাম 'রুদ্র' ।


সত্যার্থ প্রকাশ প্রথম সমুল্লাস পৃষ্ঠা ১১

(বৃহ বৃহি বৃদ্ধৌ) সকল ধাতু হইতে 'ব্রহ্মা' শব্দ সিদ্ধ হয়। 'যোঽখিলং জগন্নির্মাণেন বর্হতি (বৃংহতি) বর্দ্ধযতি স ব্রহ্মা ।' যিনি সম্পূর্ণ জগৎ রচনা করিয়া বিস্তৃত করেন, সেই জন্য সেই পরমেশ্বরের নাম ব্রহ্মা ।


সত্যার্থ প্রকাশ প্রথম সমুল্লাস পৃষ্ঠা১২

(গণ সংখ্যানে) এই ধাতু হইতে 'গণ' শব্দ সিদ্ধ হয়, 'ঈশ' বা 'পতি' শব্দ যোগে 'গনেশ' এবং 'গণপতি' শব্দ সিদ্ধ হয়। 'যে প্রকৃত্যাদযো জডা জীবাশ্চ গণ্যন্তে সংখ্যাযন্তে, তেষামীশঃ স্বামী পতিঃ পালকো বা' যিনি প্রকৃত্যাদি জড় এবং সর্ব জীবাখ্যা-পদার্থ-সমূহের পালন কর্ত্তা, এই কারণে সেই ঈশ্বরের নাম 'গনেশ' বা 'গণপতি'


সত্যার্থ প্রকাশ প্রথম সমুল্লাস পৃষ্ঠা১৩

(শ্রিঞ্ সেবাযাম্‌) এই ধাতু হইতে 'শ্রী' শব্দ সিদ্ধ হয়। 'যঃ শ্রীযতে সেব্যতে সর্বেণ জগতা বিব্দভির্যোগিভিশ্চ স শ্রীরীশ্বরঃ, সমস্ত জগৎ, বিদ্বানমন্ডলী এবং যোগীজন, যাহার সেবা করেন, সেই পরমাত্মার নাম 'শ্রী'


সত্যার্থ প্রকাশ প্রথম সমুল্লাস পৃষ্ঠা১৩

(সৃ গতৌ) এই ধাতু হইতে 'সরস্‌' তদুত্তর 'মতুপ' এবং 'ঙীপ্‌' প্রত্যয় যোগে 'সরস্বতী' শব্দ সিদ্ধ হয়। 'সরো বিবিধং জ্ঞানং বিদ্যতে যস্যাং চিতৌ সা সরস্বতী' যাহার বিবিধ বিজ্ঞান অর্থাৎ শব্দ, সম্বন্ধ ও প্রয়োগের যথাযথ জ্ঞান আছে সেই পরমেশ্বরের নাম 'সরস্বতী'


সত্যার্থ প্রকাশ প্রথম সমুল্লাস পৃষ্ঠা১৪

(ডুকৃঞ্‌ করণে) 'শম্‌' পূর্বক এই ধাতু হইতে 'শঙ্কর' শব্দ সিদ্ধ হয়। 'য শঙ্কল্যাণং সুখং করোতি স শঙ্করঃ' যিনি কল্যাণ অর্থাৎ সুখকারী, এইজন্য সেই পরমেশ্বরের নাম 'শঙ্কর'


সত্যার্থ প্রকাশ প্রথম সমুল্লাস পৃষ্ঠা১৫

'মহৎ' শব্দ পূর্বক 'দেব' শব্দ হইতে 'মহাদেব' শব্দ সিদ্ধ হয়। 'যো মহাতাং দেবঃ স মহাদেবঃ'। যিনি মহান্‌ দেবগণেরও দেব, অর্থাৎ বিদ্বান্‌দেরও বিদ্বান্‌, সূর্য্যাদি পদার্থ সমূহের প্রকাশক, এইজন্য সেই পরমাত্মার নাম 'মহাদেব'


সত্যার্থ প্রকাশ প্রথম সমুল্লাস পৃষ্ঠা১৫

(শিবু কল্যাণে) এই ধাতু হইতে 'শিব' শব্দ সিদ্ধ হয়। 'বহুলমেতন্নিদর্শনম্‌ ইহা দ্বারা 'শিবু' ধাতু গ্রহন করা হয়। যিনি কল্যাণকারী এইজন্য সেই পরমেশ্বরের নাম 'শিব'


সত্যার্থ প্রকাশ প্রথম সমুল্লাস পৃষ্ঠা১৫

প্রশ্ন - অন্যান্য গ্রন্থকারেরা যেরূপ আরম্ভে, মধ্য এবং শেষে মঙ্গলাচরণ করেন, আপনি সেইরূপ কিছু লিখেন নাই বা করেন নাই কেন ? -


উত্তর - সেইরূপ করা আমার পক্ষে সঙ্গত নহে। কারণ যে আদি, মধ্যে ও অন্তভাগে মঙ্গল করিবে, তাহার গ্রন্থে আদি, মধ্য ও অন্তের মধ্যস্থলে যাহা কিছু লিখিত হইবে তাহা অমঙ্গলই হইবে। এইজন্য 'মঙ্গলাচরণং শিষ্টাচারাৎ ফলদর্শনাছ্রু তিতশ্চেতি' ইহা সাংখ্য শাস্ত্রের বচন। ইহার অভিপ্রায় এই যে, ন্যায় পক্ষপাতরহিত, সত্য ও বেদোক্ত ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে উহার যথাবৎ সর্বত্র আচরণ করাকে 'মঙ্গলাচরণ' বলে। গ্রন্থের আরম্ভ হইতে সমাপ্তি পর্যন্ত সত্যাচার করাই 'মঙ্গলাচরণ'। কোন স্থলে মঙ্গল, কোন স্থলে অমঙ্গল লেখা মঙ্গলাচরণ নহে।


❌ দয়ানন্দ সরস্বতীর পঞ্চম দাবীর খণ্ডন (ISSGT) —

সমীক্ষাঃ- ধন্য আপনি! ধন্য স্বামীজী আপনার বুদ্ধি, আপনি বিবেচনা করে নিয়েছিলেন যে এই সত্যার্থ প্রকাশ নামক পুস্তকের মাধ্যমে আপনি শুধুমাত্র মিথ্যাভাষণ করবেন। আপনি নিজেই মঙ্গলাচরণ করে বসে আছেন আবার এবিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে মানাও করেছেন। যদি আপনি মঙ্গলাচরণ না করতেন তবে বলুন সত্যার্থ প্রকাশের ভূমিকার প্রথমে " ওম্ । সচ্চিদানন্দেশ্বরায নমো নমঃ ।। 'অথ সত্যার্থ প্রকাশস্য ভূমিকা"এবং "শন্নোমিত্রাদি" সত্যার্থ প্রকাশের প্রারম্ভে ও অন্তিম পৃষ্ঠায় আবার "শন্নোমিত্রাদি" এবং পরমেশ্বরের শতনাম কোন আশায় লিখেছিলেন, তথা আপনি নিজের বেদভাষ্যের প্রত্যেক অধ্যায়ের সূচনায় "বিশ্বানি দেব সাবিতর্দুরিতানি পরাসুব, যদ্ভদ্রংতন্ন আসুব" কেন লিখেছিলেন? এর দ্বারা আপনার লেখানুসারে এই সিদ্ধ হয় যে আপনার "বেদভাষ্য" এবং "সত্যার্থ প্রকাশ" এর মধ্যে মধ্যে অমঙ্গলাচরণই করেছেন, উপরের টীকায় সত্য বেদোক্ত ঈশ্বরের আজ্ঞা পালনই মঙ্গলাচরণ, এবং আপনি যে রান্ড, রান্ড স্নেহী, ধূর্ত, নিশাচর, ভান্ড, মূর্খ, ডঙ্গী, চামার, চতুর, ভঙ্গী, পোপ আদি না জানি কত প্রকারের অপশব্দ ও দুর্বচন পরে পুস্তকে ব্যবহার করেছেন, যা উচ্চারণের আজ্ঞা বেদেও কোথাও পাওয়া যায় না, হয়তো এই কারণে স্বয়ং দয়ানন্দ গ্রন্থের প্রারম্ভে মঙ্গলাচরণ করতে ইতস্তত করেছেন, যদি না করতেন তাহলে ওনার এই তথাকথিত নব্য কাল্পনিক মতবাদ অন্য লোকের থেকে ভিন্ন মনে হবে কি করে ? তাই না ?

🚫দয়ানন্দ সরস্বতী জী নিজেই সত্যার্থ প্রকাশের শুরুতেই মঙ্গলাচরণ করেছেন👇

Satyartha Prakash exposed


পাঠকবৃন্দ দেখুন দয়ানন্দ সরস্বতী নিজেই মঙ্গলাচরণের বিরোধীতা করে নিজেই নিজের লেখা পুস্তকে মঙ্গলাচরণ করে বসে আছেন।


🟪 (৬) দয়ানন্দ সরস্বতীর ষষ্ঠ দাবী (৬) 🟪


সত্যার্থ প্রকাশ প্রথম সমুল্লাস পৃষ্ঠা ১৫ এবং ১৬

এইজন্য আধুনিক গ্রন্থ সমূহে যে 'শ্রীগণেশায নমঃ', 'সীতারামাভ্যাং নমঃ', 'রাধাকৃষ্ণাভ্যাং নমঃ', 'শ্রীগুরচরণারবিন্দাভ্যাং নমঃ','হনুমতে নমঃ', 'দুর্গাযৈ নমঃ', 'বটুকায নমঃ', 'ভৈরবায নমঃ', 'শিবায নমঃ', 'সরস্বত্যৈ নমঃ', 'নারাযণায নমঃ', ইত্যাদি লেখা দেখা যায়। এ সমস্ত বেদ ও শাস্ত্রবিরুদ্ধ বলিয়া বুদ্ধিমান ব্যাক্তিরা মিথ্যা বলিয়াই মনে করেন। কারণ বেদ এবং মুনি ঋষিদের গ্রন্থের কোথাও এইরূপ মঙ্গলাচরণ দেখিতে পাওয়া যায় না। আর্য গ্রন্থ সমূহে 'ওম্‌' এবং 'অথ' শব্দই দেখা যায় দেখুনঃ-

'অথ শব্দানুশাসনম্‌। অথেত্যযং শব্দোঽধিকারার্থঃপ্রযুজ্যতে।' -- ব্যাকরণ মহাভাষ্যে,  'অথাতো ধর্মজিজ্ঞাসা। অথেত্যানন্তর্যে, বেদাধ্যযনানন্তরম্‌' --পূর্বমীমাংসা শাস্ত্রে, 'অথেতি ধর্মকথানানন্তরং ধর্মলক্ষণং বিশেষণ ব্যাখ্যাস্যামঃ'। --বৈশেষিক দর্শন শাস্ত্রে, 'অথ যোগানুশাসনম্‌' ---যোগশাস্ত্রে, 'অথাতো ব্রহ্মজিজ্ঞাসা'। ---বেদান্তসূত্র, 'ওমিত্যেতদক্ষরমুদ্‌গীথমুপাসীত'। --- ছান্দোগোপনিষদের বচন।


সত্যার্থ প্রকাশ প্রথম সমুল্লাস পৃষ্ঠা ১৬

"শ্রীগণেশায নমঃ" ইত্যাদি শব্দ কোথাও নেই। অনেক বৈষ্ণবীয় স্মার্তগণ যে বেদের আরম্ভে 'হরিঃওম্‌' লেখেন এবং পাঠ করেন, তার সেটি পৌরাণিক এবং তান্ত্রিকদিগের মিথ্যা কল্পনা হতে শিখিয়েছে।


❌ দয়ানন্দ সরস্বতীর ষষ্ঠ দাবীর খণ্ডন (ISSGT) —

সমীক্ষাঃ- স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী জীর লেখা পড়ে মনে হয় যে, স্বামীজীর নিকট পরমেশ্বরের কিছু নাম প্রিয়, আবার কিছু নাম অপ্রিয়। দেখুন প্রথমে স্বামীজী গুরু, গণেশ, সরস্বতী, শ্রী, নারায়ণ, ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব আদি পরমেশ্বরের নাম নিলেন আবার এখন বলছেন যে বিদ্বান লোক একে মিথ্যা বলে মান্য করেন, এইরকম প্রবচনকারী তথা কথিত বিদ্বানও দয়ানন্দের ন্যায় পুরুষ ছাগলের দুগ্ধ ঘী সেবন  করে বিদ্বান হয়েছে, যেরকম বিশ্ববিখ্যাত মহান বিজ্ঞানী দয়ানন্দ সরস্বতী তার যজুর্বেদ ভাষ্যে ২১/৪৩ এ (বকরা) পুরুষ ছাগলের দুধ ঘী সেবনের কথা উল্লেখ করেছেন, বিদ্বান ব্যাক্তিরা দয়ানন্দের বুদ্ধির ব্যাপকতা অনুমান করতে পারবেন, কারণ প্রকৃত বিদ্বান ব্যক্তি একে মিথ্যা বলে প্রতিপাদিত করেবন না। স্বামীজী আপনি ভয় কেন পাচ্ছেন? কারণ আপনি নিজে ভাল্লুককে ভয় দেখিয়ে দিয়েছেন। (আত্মচরিতে আপনি লিখেছেন যে আপনাকে দেখে ভাল্লুক ভয়ে পালিয়েছিল)।

এখন আপনি বলুন এইসব নাম পরমেশ্বরের নাম বলে আপনি মানেন না, আর যদি মানেন না তো মিথ্যা কি করে হলো? আর যদি মানেন তবে পরমেশ্বরের শত নামের মধ্যে এই নাম গুলো কেন উল্লেখ করলেন ? এই নাম গুলোও বেদ হতে অপসারণ করুন। যদি আপনার সাধ্যের মধ্যে হতো, তবে আপনি প্রাচীন মহাত্মাদের প্রচলিত বাণী 'সত্য বচন পরম ধর্ম' এটাকেও নিষেধ করেতেন, এবং আপনি যেরকম ভাবে পরমেশ্বরের নাম সিদ্ধ করেলন,  "রম্‌ ক্রিডাযাং" এই ধাতু দ্বারা রাম এবং " হরতি দুঃখানিতিহরিঃ যে সর্বত্র রম অর্থাৎ বিদ্যমান আছে তিনিই রাম, এবং ভক্তদের দুঃখ হরণ করেন বলে পরমেশ্বরের(শিবের) নাম হরি, এবং

         "কৃষির্ভূবাচকঃ শব্দোনশ্চ নির্বৃতিবাচকঃ ।

        "তযোরৈক্যং পরব্রহ্ম কৃষ্ণ ইত্যাভিধীযতে ।।"

এইভাবে কৃষ্ণ শব্দের অর্থ তো ঈশ্বরের প্রকাশিত রূপকে বোঝায় আবার একইভাবে রাম, কৃষ্ণ ও হরি এই নাম পরমেশ্বরের বিভিন্ন নামকে সিদ্ধ করে। হতে পারে পরমেশ্বরের কাছে তার কিছু নাম প্রিয় আবার কিছু নাম অপ্রিয়, যেমন আপনি নিষেধ করেছেন, আপনিই বলুন ঈশ্বরের এই নাম নিলে দেশোন্নতিতে কি ক্ষতি হতে পারে?

যদি বিচার করে দেখা যায়, যেমন প্রাচীন গ্রন্থে পরমেশ্বর শিবের শিবসহস্রনাম রয়েছে, সেই প্রকার আপনিও ঈশ্বরের শতনাম লিখেছেন, গ্রন্থের প্রারম্ভে ঈশ্বরের শতনাম লেখা কি কোনপ্রকার বেদানূকুল? পরিস্কার ভাবে আপনি এটা লিখে দিতে পারতেন যে, শিব সহস্রনামের পরিবর্তে নিজের নিয়োগী চেলাদের জন্য দয়ানন্দ শতনাম পাঠ করার জন্য পুস্তক রচনা করেছিলেন, এত অভিনয়, নাটক ও ভনিতার কোন দরকার ছিল না, আর এটা কিরকম কথা হলো? আপনি নিজেই নিজের রচিত ঈশ্বররের শতনাম মিথ্যা প্রমাণিত করলেন, আপনার বুদ্ধিতে সংশয় রয়েছে, আপনি নিজেই লিখেছেন যে বেদও ঋষিকৃত গ্রন্থে এরকম কোন মঙ্গলাচরণের উল্লেখ পাওয়া যায় না, আবার আপনি লিখেছেন অথও৩ম্ এর উল্লেখ পাওয়া যায়, এবং আপনি নিজেও মঙ্গলাচরণ করলেন। এবার আপনি বলুন আপনার গ্রন্থের আদি, মধ্য ও অন্তে কি লিখেছেন। (মঙ্গল ও অমঙ্গল), মঙ্গলাচরণ করা কোন অপরাধ নয়, কিন্তু আপনি করেছেন দ্বিচারিতা।

Satyartha Prakash Mangala charan exposed


স্বয়ং মঙ্গলাচরণ করে গেলেন, কিন্তু প্রশ্ন করলে তা মানা করলেন, পরমেশ্বরের যে শত নাম লিখেছেন, নিজেই তাকে মিথ্যা বলে প্রমাণিত করলেন, এর থেকে প্রমাণিত হয় যে ইহা স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী জীর নিজের যজুর্বেদভাষ্য অনুসারে পুরুষ ছাগলের দুধ, ঘী মাত্রাতিরিক্ত সেবনের প্রতিফলন।  


পরমেশ্বর শিবের কৃপায়, শৈব আচার্য তথা গুরুদেবের কৃপায় সত্যার্থ প্রকাশের প্রথম সমুল্লাস খণ্ডন করা হল।

তারিখ - 29/01/2024

সময় - 11 : 09 am

 পরবর্তী  ২য় সমুল্লাসের খণ্ডন বিষয়ক প্রবন্ধ টি আসছে.... অপেক্ষা করুন ।

🚩ॐ নমঃ শিবায় 🚩 শ্রীনন্দীকেশ্বরায় নমঃ 🚩 শৈব সনাতনঃ ধর্ম সদা বিজয়তে 🚩 হর হর মহাদেব 🚩

     ------------------------ইতি সত্যার্থপ্রকাশান্তর্গত প্রথম সমুল্লাস খণ্ডন সমাপ্ত----------------------

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমবার ব্রত বিধি ও মাহাত্ম্য (শৈবপুরাণোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ১ (মূলপূজা)

বৃহৎ শিবার্চন বিধি পুস্তক (শৈব আগমোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ২ (প্রহরপূজা)

ত্রিপু্রোৎসব দীপপ্রজ্জ্বলন রীতি – স্কন্দমহাপুরাণোক্ত