শিবজ্ঞানী অতিবর্ণাশ্রমী শৈবদের কাছে চণ্ডাল ব্রাহ্মণ সব সমান
শিবজ্ঞানী অতিবর্ণাশ্রমী শৈবদের কাছে চণ্ডাল ব্রাহ্মণ সব সমান
চণ্ডালগেহে বিপ্রাণাং গৃহে বা পরমার্থবিৎ ।
ভক্ষ্যভোজ্যাদিবৈষম্যং ন কিঞ্চিদপি পশ্যতি ॥ ৬৬
যথেষ্টং বর্ততে যোগী শিবং সর্বং বিচিন্তয়ন্ ।
তাদৃশো হি মহাযোগী কো বা তস্য নিবারকঃ ॥ ৬৭
[তথ্যসূত্র — স্কন্দমহাপুরাণ/সূতসংহিতা/যজ্ঞবৈভবখণ্ড/উপরিভাগ/সূতগীতা/অধ্যায় ৫]
🪷 অর্থ — একজন পরমার্থবেত্তা শিবজ্ঞানী অতিবর্ণাশ্রমী শৈব ব্যক্তি কখনোই চণ্ডালের গৃহে বা ব্রাহ্মণের গৃহে যাওয়াকে এবং তাদের গৃহে আহার করবার জন্য ভক্ষ-ভোজ্য খাদ্যবস্তু গ্রহণ করবার মধ্যে কোনো ভেদ দেখেন না ॥ ৬৬
সবকিছুই শিব — এমনভাবে সর্বদা চিন্তা করতে থাকা শৈবযোগী ব্যক্তি পরমেশ্বর শিবের মতোই উদার সমানভাব রেখে সকলের সাথে ব্যবহার করেন ।
যিনি এইরকম চিন্তাধারার পরমপবিত্র শৈব মহাযোগী ব্যক্তি, তাকে কে আটকাতে পারে ? ॥ ৬৭
🔥 ব্যাখ্যা - যে ব্যক্তি পরমেশ্বর শিবের শৈবমার্গ অবলম্বন করে শৈবরীতিনীতি পালন করেন ও শৈবজ্ঞানের ভিত্তিতে সবকিছুকে প্রভু শিবেরই স্বরূপ বলে মানেন, তিনি সকল বর্ণাশ্রমের বিধিনিষেধের নিয়মের ঊর্ধ্বে উঠে যান, সেই ব্যক্তিকেই পরমার্থবেত্তা অতিবর্ণাশ্রমী শৈব বলে। প্রভু শিবের কাছে যেমন কেউ ছোট বড় নয়, সবাই সমান, অতিবর্ণাশ্রমী শৈবব্যক্তিও ব্রাহ্মণ, শুদ্র বা চণ্ডাল সবাইকে পরমার্থতঃ সমান দৃষ্টিতে দেখেন, সনাতন ধর্মের শাস্ত্রে এই আত্মজ্ঞানী অতিবর্ণাশ্রমী শৈবদেরই সর্বশ্রেষ্ঠ ঘোষণা করা হয়েছে। যে কেউ শিবজ্ঞান লাভ করে অতিবর্ণাশ্রমী শৈব হতে পারেন । জ্ঞানী শৈবব্যক্তিকে কোনো অধার্মিক ব্যক্তি কোনোভাবেই আটকাতে বা পরাজিত করতে পারেনা ।
টীকা - পরমেশ্বর শিবের ভক্ত শৈব রা সর্বদা সকল বিধি নিষেধের থেকে মুক্ত, দেখুন -
স্বতন্ত্রঃ খলু শংকরঃ ।। ৪৬
মহাদেবস্য ভক্তাশ্চ তদ্ভক্তা অপি দেহিনঃ ।
স্বতন্ত্রতা বেদবিচ্ছ্রেষ্টাঃ কিং পুনঃ স মহেশ্বরঃ ।। ৪৭
[স্কন্দমহাপুরাণ/সূতসংহিতা/যজ্ঞবৈভবখণ্ড/উপরিভাগ/(সূতগীতা) ৩ অধ্যায়/ ৪৬-৪৭ নং শ্লোক]
অর্থ - পরমেশ্বর শিব সকল বিধি নিষেধের থেকে মুক্ত, স্বতন্ত্র। যখন পরমেশ্বর শিবের অদ্বৈতবাদী অতিবর্ণাশ্রমী ভক্তশৈবরাই স্বতন্ত্র, তখন মহেশ্বরের স্বতন্ত্রতার বিষয়ে আর কি বলব ?।
©শ্রী নন্দীনাথ শৈবাচার্য জী (ISSGT)
COPYRIGHT ও প্রচারে — International Shiva Shakti Gyan Tirtha
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন