পরমশৈব শিবভক্ত মহর্ষি কণাদ হলেন — অনু-পরমাণু বিজ্ঞান প্রকাশের জনক
🔶🔶আজ আমরা জানতে চলেছি একজন পরমশৈব শিব ভক্তের সম্পর্কে যিনি ছিলেন প্রাচীন কালের অনু-পরমাণুর বিজ্ঞানের জনক🔶🔶—
🔶৩০০০ হাজার বছর আগে জন্ম নিয়েছিলো অনু-পরমাণু বিজ্ঞানের জনক "মহর্ষি কণাদ"। তিনি "বৈশেষিক দর্শন" শাস্ত্রের জনক।
🔶আগুনের উপরে উঠা, চৌম্বকীয় গতিবিধি, বৃষ্টিপাত, বজ্রপাত, ঘাসের বর্ধন ইত্যাদি সম্পর্কে তার "বৈশেষিক দর্শন" শাস্ত্রে প্রাকৃতিক ব্যাখ্যা দেন।
🔶মহর্ষি কণাদ এর আরেকটি নাম হলো— "মহর্ষি উলূক", যিনি কাশ্যপ বংশীয় ছিলেন। যিনি পরমেশ্বর শিবের পরমভক্ত ছিলেন, এবং মহাদেবের আরাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেন। সেই সিদ্ধির ফলে এই অপূর্ব শাস্ত্র প্রণয়ন করেন বিদায় দর্শন শাস্ত্রে " কণাদ" নামে প্রসিদ্ধ হন।
➡️ মহাভারতে মহর্ষি কণাদ (উলুক ঋষি) এর নাম পাওয়া যায়—
👉উলূকঃ পরমো বিপ্রো মার্কণ্ডেয় মহামুনিঃ।।১১
[মহাভারত, শান্তিপর্ব্ব, অধ্যায় ৪৬]
🔶মহর্ষি কণাদ ছিলেন একজন শৈবাচার্য। তিনি শিবাবতার সোমশর্ম্মার শিষ্য ছিলেন। অক্ষপাদ প্রথম ও উলূক (মহর্ষি কণাদ) তৃতীয় শিষ্য।
➡️ লিঙ্গপুরাণে এর প্রমাণ পাওয়া যায় —
👉জাতুকর্ণো যদা ব্যাসো ভবিষ্যতি তপোধনঃ।
তদাপ্যহং ভবিষ্যামি সোমশর্ম্মা দ্বিজোত্তমঃ।।
অক্ষপাদ কুমারশ্চ উলূক এব চ।
তত্রাপি মম তে শিষ্যা ভবিষ্যন্তি তপোধনঃ।।
[লিঙ্গপুরাণ, অধ্যায় ২৪]
🔶প্রাচীন গ্রীসে যখন দর্শনের ফুলঝুরি ঝড়াচ্ছিলেন এরিস্টটল সেই সময়ে প্রাচ্যে তার স্নিগ্ধ বাতাস বইয়ে দিচ্ছিলেন জগতবিখ্যাত এই ঋষি। সর্বপ্রথম আলাদাভাবে অভিকর্ষ শক্তি(গুরুত্ব,Gravity) এর কথা বলার জন্য তিনি অমর হয়ে আছেন। পদার্থের গঠন নিয়ে তাঁর আবিষ্কার ও অবদান অপরিসীম।
🔷নিউটন আপেল গাছের তলায় বসে আপেল পড়াতে যে সূত্র গুলো আবিষ্কার করেছিলেন, তারও বহু বহু বছর পূর্ব্বে মহর্ষি কণাদ তার বৈশেষিক দর্শন শাস্ত্রে তা উল্লেখ করেছিলন।
🔶এর থেকেই তো সনাতন যে সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক তার প্রমাণ পাওয়া যায়। এবং বিজ্ঞানের আবিষ্কার ও সনাতন থেকে তার ও প্রমাণ মেলে।
👉চলুন এবার দেখে নিই সেই সূত্র প্রমাণ গুলো —
➡️ কণাদ-
“সংযোগাভাবে গুরুত্বাত্ পতনম্”
বাইরের কোন শক্তির প্রভাব ব্যাতিত একটি বস্তুর পতন হতেই থাকবে।
(বৈশেষিক সূত্র,অধ্যায় ৫,আহ্নিক ১,সূত্র ৭)
👉নিউটনের প্রথম সূত্রঃ-
বাইরে থেকে কোন বল প্রয়োগ না করলে স্থির বস্তু স্থির এবং গতিশীল বস্তু সুষম গতিতে চলতেই থাকে।
➡️ কণাদ-
“নোদনবিশেষাভাবাত্নো উর্ধ্বং ন ত্রিয়েজ্ঞমনম্”
(বৈশেষিক সূত্র,অধ্যায় ৫,আহ্নিক ১,সূত্র ৮)
বাইরে থেকে বিশেষ শক্তি(নোদন বিশেষ) না থাকলে বস্তু উপরে,নিচে বা কোন পাশে(তিনদিকের কোন দিকেই) যেতে পারেনা।
👉নিউটনের দ্বিতীয় সূত্রঃ-
কোন বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং
“বল যে দিকে ক্রিয়া করে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তন সেদিকেই ঘটে।” অর্থাৎ বলের প্রভাবেই বস্তু নির্দিষ্ট দিকে গতিশীল হয়।
➡️ কণাদ-
“প্রযত্ন বিশেষত্নোদন বিশেষঃ”
(বৈশেষিক দর্শন,অধ্যায় ৫,আহ্নিক ১,সূত্র ৯)
বিশেষ বলে কাজ হলে(প্রযত্ন বিশেষ) তার বিপরীত কাজও(নোদন বিশেষ) ঘটিত হইবে।
👉নিউটনের তৃতীয় সূত্রঃ-
প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
🔷 এবার আশা করে সবাই বুঝেছেন, আইজ্যাক নিউটনের সময়কালের চেয়েও বহু আগে প্রাচীনকালে মহর্ষি কণাদ অভিকর্ষ-মহাকর্ষ -এর বিষয়ে বহু আগেই আমাদের শাস্ত্রে তা উল্লেখ করে গেছেন।
শুধু তাই নই, প্রাকৃতিক আরও বহু কিছু নিয়ে উনি তার দর্শন শাস্ত্রে উল্লেখ করেছেন।
শিবভক্ত শৈবরাই যুগে যুগে মহানতম আবিষ্কার করে গিয়েছেন, এই সত্য চাপা পড়ে গেলেও, আমরা ISSGT থেকে শৈব রা সেই পরমসত্য তুলে ধরে সনাতন ধর্মের সম্মান, মহানতা ও আদর্শকে সর্বদা শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাবো।
ॐ দক্ষিণামূর্তয়ে নমঃ 🙏
ॐ সাম্বসদাশিবায় নমঃ 🙏
শৈব সনাতন ধর্ম সদা বিজয়তে 🚩
হর হর মহাদেব
লেখনীতে — শ্রী অন্তিক ভট্টাচার্য্য শৈব
সম্পাদনায় - শ্রীনন্দীনাথ শৈবাচার্য জী
কপিরাইট ও প্রচারেঃ- International Shiva Shakti Gyan Tirtha (আন্তর্জাতিক শিব শক্তি জ্ঞান তীর্থ)।
👉 বিঃদ্রঃ- লেখাটি কপি করতে চাইলে সম্পূর্ণ'ই কপি করবেন। কোনো রকম এডিট বা কাটাছেঁড়া করা যাবে না।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন