আল্লাহ মালিক বলতে থাকা মুসলিম ফকির সাই বাবা হয়ে বসেছে সনাতনী হিন্দুদের ভগবান
নমস্কার
শ্রীগুরুবে নমঃ
নমঃ শিবায়
হর হর মহাদেব
বর্তমানে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, সাইবাবা নামের একজন বৃদ্ধ বয়সী ব্যক্তি কে কিছু সনাতনী হিন্দু রা সনাতন ধর্মের ভগবান বা গুরু ভেবে নিয়ে পূজা করা শুরু করেছে।
যে সাইবাবা আসলেই একজন মুসলিম ফকির । তিনি মাথায় মুসলিমদের মতোই টুপি পড়তেন, কফনী আচ্ছাদিত করতেন। ইসলামের গ্রন্থ কোরান শরীফ পুস্তকের “কলমা” পাঠ করবার কট্টর সমর্থক ছিলেন ।
এছাড়াও তিনি ছিলিমে গাঁজা ভরে টান দিয়ে নেশা করতেন ও অন্যদেরকেও নেশা করবার জন্য নেশার বস্তু মুখের সামনে এগিয়ে ধরতেন।
অথচ
সনাতন ধর্মেরই বেশ কিছু সনাতনী ব্যক্তি এসব ঘূর্ণাক্ষরেও টের পাচ্ছে না যে, ভক্তির নামে সনাতনী দের সাথে কত বড় ছলনা করা হচ্ছে।
এবার সবার আগে জেনে নিন 👇
• ফকির সম্প্রদায় কোথা থেকে এলো ?
উত্তর : ভারতে মোগল-মুসলমানদের প্রবেশের পর তারা সনাতনী দের জোর করে মেরে ধরে অত্যাচার করে জিহাদ -এর মাধ্যমে ইসলাম গ্রহণ করাতে বাধ্য করতে থাকে।
এর মধ্যে বহু রূপান্তরিত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই সনাতন ধর্মের শাস্ত্রের মধ্যে থাকা “অদ্বৈত” দর্শনের পরিপন্থী ছিলেন, সাধারণ মানুষ অদ্বৈতবাদ সম্পর্কে অবগত নয়, তাই সকলের এ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত ধারণার জন্য অদ্বৈতবাদ নিয়ে অল্প কিছু বর্ণনা করছি।
পরমেশ্বর পরমব্রহ্ম শিব নিজেই মায়াপ্রকাশ করে নিজেকে মায়ায় জড়িয়ে একাধারে জীব(উদ্ভিদ/পশুপাখি-কীটপতঙ্গ/মনুষ্য) হয়েছেন, ঐ জীব যখন আধ্যাত্মিক জ্ঞানের দ্বারা নিজের অন্তরে থাকা আত্মাকেই প্রকৃত ‘আমি’ বলে জানতে পারে, দেহকে খোসা বলে জেনে ফেলেন, তখন তিনি এটাও বুঝতে পারেন যে, আমার অস্তিত্ব হল আত্মা, আর এই আত্মার পরমাত্মা পরমব্রহ্ম শিবের সহিত অভিন্ন। এই অভিন্ন দৃষ্টিতে জীব যখন আধ্যাত্মিক জ্ঞানের দ্বারা নিজের আত্মাকে শিব বলে জেনে নেন একেই বলে অদ্বৈতবাদ, অর্থাৎ অদ্বিতীয় । শিব ছাড়া দ্বিতীয় অন্য কিছু ই নেই, পরমেশ্বর শিবই বিভিন্ন রূপে রয়েছেন মাত্র। এই ভাবনাই অদ্বৈতবাদী শৈব সনাতনী দের ভাবনা।
এই ভাবনা প্রত্যেক শৈবনাথযোগী সাধুদের মধ্যে রয়েছে, অতীত কালে রূপান্তর হওয়া মুসলমানেরা এই শৈবনাথযোগীদের বা অনান্য অঘোরী শৈব সাধুদের কাছে অথবা অনান্য দশনামী পরম্পরার সাধুদের কাছে এসে এই অদ্বৈতবাদের ধারণাকে জানতে পারেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ নিজের লোভ ও স্বার্থ পূরণ করবার জন্য দীক্ষাও গ্রহণ করে নেন, শৈব অঘোরী সাধুগণ কালো বস্ত্র পরিধানকারী হয়ে থাকেন, এই কারণে ফকির দের মধ্যেও বেশিরভাগ কালো বস্ত্র ধারণকারী ফকির দেখা যায়।
এই ফকিরেরাই সনাতন ধর্ম থেকে “শৈবদের অদ্বৈতবাদ” দর্শনকে নকল করে ইসলামের উপাস্য আল্লার নামে প্রচার করতে শুরু করে।
এই ফকিরেরাই প্রচার করতে শুরু করে যে, আল্লাহ আর তার মুমিনগণ অভিন্ন, কোনো ভেদ নেই। এখান থেকে সুফিবাদের জন্ম ।
ইসলামের দৃষ্টিতে চরমতম অপরাধ হল আল্লাহকে কারোর সাথে শরিক করা, অর্থাৎ আল্লাহ আর অন্য কোনো চরিত্র বা ব্যক্তিবিশেষ কে এক বললে, এটি ইসলাম কখনোই মান্যতা দেয় না। যারা নিজেদের মুসলমান বলে দাবি করবার পরেও কোরানের নির্দেশ না মেনে আল্লাহকে অন্য কাউকে সমান বলছে তারা কখনোই প্রকৃত মুসলমান হিসেবে গণ্য হয় না ইসলামের দৃষ্টিতে।
এমন ভাবনা প্রচার কারী ব্যক্তিকে ইসলাম সর্বদাই মৃত্যু দণ্ড দেবার নির্দেশনা দেয়।
এ কারণেই, বহু ফকির বা সুফিবাদীরা আল্লাকে মান্য করবার পরেও তাদের হত্যাও করেছে ইসলামের প্রকৃত মুমিন মুসলমানেরা। কারণ ইসলামের দৃষ্টিতে আল্লাহকে যেভাবে মানা উচিত, সুফিবাদী বা ফকিরেরা সেই ইসলামের দেখানো পথে আল্লাহ কে মানবার পথ অনুসরণ না করে অন্য মার্গ অবলম্বন করে ইসলামের নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে আল্লাকে নতুনভাবে মানবার চেষ্টা করেছিলেন, এ কারণেই তাদের বহুবার হত্যা করা হয়েছিল। সুফিবাদ বা ফকিরদের ইতিহাস পড়লে আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন। সুফিবাদিরা বা ফকিরেরা মাজহারে থাকেন, অনেকে ঝাড়ফুঁক তুকতাক করেন। ইসলামের দৃষ্টিতে প্রকৃত মুমিনেরা কখনোই এসব নব্য মুসলিমদের প্রকৃত মুমিন(অর্থাৎ প্রকৃত মুসলমান) বলে মানেন না।
আশা করি, ফকির বা সুফিবাদীদের সম্পর্কে আপনি অল্প বিস্তর জানতে পেরেছেন।
সাঁই বাবা ছিলেন সেই আল্লাহকে সবার সাথে এক বলে প্রচার করা মুসলিম ফকির ।
তার কাছে আল্লাহ হল মূল। বাকি রাম শ্যাম সবাই নাকি তারই রূপ, সনাতন ধর্মের কোনো শাস্ত্রে কি বলা আছে এমনটা ? নাকি কোরাণে কোথাও বলা আছে ?
তাহলে সাঁই বাবা এসব ভ্রান্তমতবাদ কোথায় পেয়েছেন ।
মূলত তিনি হিন্দু সনাতনী দের অর্ধ যবন বানাবার জন্য কখনো কখনো রাম, দুর্গা বা প্রভু পরমেশ্বর শিবের আরাধনা করবার বা সম্প্রীতি দেখাবার ভান করতেন মাত্র। যা দেখে সনাতনী রা ভাববে, আরে ঐ তো সাঁইবাবা আমাদের দেবতাদেরও মানছে...
ওরে বাছা অন্ধ ভক্তেরা!!
মরুভূমির মরীচিকা যেমন সত্য হয় না, এসব অর্ধযবনদের লোকদেখানো সমতা, একতা, পূজার্চনা এক হয় না। এরা যেভাবে প্রচার করছে সেটি এরকম — এক বাটি দুধের মধ্যে এক চামচ বিষ মিশিয়ে দিয়ে তোমাকে খাওয়াচ্ছে ।
তুমি ভাবছো দুধ খাচ্ছো, কিন্তু তুমি খেয়াল করোনি যে ওতে বিষ মিশিয়ে দেওয়া আছে। আর ভেতরে গিয়ে তোমার অজান্তেই তোমার প্রাণ নেবে। সাই ভক্তরা যে রাম দুর্গা শিবের ছবির সাথে সাইবাবাকে বসিয়ে প্রচার করছে, সেটা দেখানোর উদ্দেশ্য হলো এভাবে যত বেশি তারা মানুষের কাছে প্রচার করতে পারবে ততই বেশি সাধারণ মানুষেরা সাই বাবাকে হিন্দুদের দেবতা হিসেবে গভীর বিশ্বাস করতে শুরু করবে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ভ্রান্ত ধারণা বসিয়ে দিয়ে সাঁইবাবার অনুসারী বৃদ্ধি করবার মস্ত বড় ফাঁদ পেতেছে এই অর্ধযবন সাঁই বাবার প্রচারকেরা ।
শাস্ত্র না জানা সাধারণ সনাতনীরা ঘূর্ণাক্ষরেও টের পাচ্ছে না যে তারা কত বড় বিপদের মধ্যে পড়ে যাচ্ছে।
জেনে রাখুন,
সাইবাবা ছিলেন মসজিদে বসবাসকারী এবং তিনি সর্বদা বলতেন “আল্লাহ মালিক” ।
প্রমাণ দেখুন
“শ্ৰী সাই সৎচরিত্র” পুস্তকের অধ্যায় ৫ -এর
‘মোহিদ্দীন তম্বোলীর সাথে কুস্তি ও জীবন পরিবর্তন' প্রসঙ্গ তে বলা হয়েছে —
সারাদিন বাবা ভক্তদের দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে থাকতেন ও রাতে জীর্ণ-শীর্ণ মসজিদে বিশ্রাম করতেন। এই সময় বাবার কাছে ছিলিম, তামাক, একটি বড় গেলাস, একটি লম্বা কী, মাথায় বাঁধবার কাপড় এবং একটি ছোট ডান্ডা ছিল যেটি তিনি সর্বদা নিজের কাছে রাখতেন। মাথায় একটা সাদা কাপড়ের টুকরো এমনভাবে বাঁধতেন যে কাপড়ের একটা দিক তাঁর বাঁ কাঁধ দিয়ে পিঠে পড়ে থাকত, যেন চুলের একটি খোঁপা।
সর্বক্ষণ ‘আল্লাহ মালিক’ উচ্চারণ করতেন।
মজিদে থাকতে শুরু করার আগে বাবা তাকিয়াতে (ফকিরদের বাসস্থান) থাকতেন।
প্রদীপ জ্বালিয়ে মসজিদ সাজাতেন।
[তথ্যসূত্র: “শ্ৰী সাই সৎচরিত্র” পুস্তক/অধ্যায় ৫/
‘মোহিদ্দীন তম্বোলীর সাথে কুস্তি ও জীবন পরিবর্তন' প্রসঙ্গ]
ঐ পুস্তকের পৃষ্ঠার চিত্র দেখুন 👇
🟥আরো দেখুন,
ঐ “শ্ৰী সাই সৎচরিত্র” পুস্তকের অধ্যায় ৪ -এর
‘পবিত্র তীর্থ শিরডী' প্রসঙ্গ তে বলা হয়েছে,
“আল্লা”-র নাম সব সময় ওঁর জিভে ঘুরে বেড়াত। তিনি প্রতিদিন মসজিদের দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসে থাকতেন।
উক্ত পৃষ্ঠার চিত্র দেখুন — 👇
তাহলে এবার সনাতনীরা ভেবে দেখুন এই সাইবাবা যদি হয় সনাতনীদের পূজার অধিকারী, তাহলে সনাতনীদের কত বড় দূর্গতি হয়ে চলেছে অবিরত.....?! ভাবুন....
সমগ্র “শ্ৰী সাই সৎচরিত্র” পুস্তকের মধ্যে মোট ১৪বার আল্লাহ মালিক শব্দটি উল্লেখিত হয়েছে।
ইসলামের কোরাণ হাদিস অনুযায়ী মুসলিমদের “আল্লাহ” -র সাথে অন্য কাউকে “শরিক” অর্থাৎ এক বলা অপরাধ বলে গণ্য হয়। এ কারণে কোনো প্রকৃত মুসলিম ব্যক্তি কখনোই কোরআন হাদিসের নির্দেশের বিরুদ্ধে গিয়ে আল্লাহকে অন্য কারোর স্রষ্টার সাথে এক বলে ঘোষণা করে না। কারণ এক বলে ঘোষণা করা ইসলামের দৃষ্টিতে চরমতম অপরাধ।
তাহলে ভাবুন এই সাই বাবার মার্গ অনুসরণ করলে আপনি না সনাতনী হতে পারবেন আর না পুরোপুরি মুসলিম হতে পারবেন। আপনি অর্ধ মুসলিম ফকিরের অনুসারী হয়ে থেকে যাবেন চিরকাল। এরপর জিহাদী দের পাল্লায় পড়ে সম্পূর্ণ রূপে মুসলিমে রূপান্তরিত হতে পারেন।
কোনো মুসলিম ব্যক্তি সাইবাবার পূজা অর্চনা করেন না, কারণ কোনো ব্যক্তিকে বা তার প্রতিমাকে পূজা করা ইসলামের দৃষ্টিতে চরমতম অপরাধ ও নিষিদ্ধ।
অথচ আমাদের সনাতনী ভাই-বোনেরা অন্ধ ভক্তির ফাঁদে পড়ে সাইবাবার অর্ধ-যবন মতবাদের পরিপন্থী হয়ে জীবন কাটাচ্ছেন। এভাবে নতুন নতুন নকল সাধুরা উদয় হয়ে সনাতন ধর্মের নীতি নিয়মকে নকল করে নিজেদের মতবাদ প্রচার করে সনাতনীদেরকে নিয়ে অসনাতনী বানিয়ে ফেলছে ভক্তির দোহাই দিয়ে। যেহেতু আস্থা বিশ্বাস এবং ভক্তি আমাদের সকলের একটি দুর্বল স্থান, তাই এইসব নকল সাধুরা আমাদেরকে সনাতন ধর্ম থেকে বিচ্যুত করবার জন্য বিভিন্ন রকম অসাধু মার্গ প্রচার করছেন, যাতে আমরা আমাদের ভক্তি ও বিশ্বাস সঠিক জায়গায় না লাগিয়েই , অন্য জায়গায় ভক্তি ও বিশ্বাস লাগাই। এতে সনাতনীরা সনাতন ধর্মের মূল সিদ্ধান্ত আচার নিয়ম থেকে ছিটকে যাচ্ছে। তারা অন্ধভক্তিতে নিমজ্জিত হয়ে সাইবাবা সাইবাবা করে চলেছে, আর আমাদের মহান ঐতিহ্য পড়ে আছে এক কোণায়।
একটু বিচার করুন, যদি বিচার করেন তাহলে আপনি এই অসাধু মার্গ থেকে উদ্ধার পাবেন, আর আপনার সন্তান নাতি ও আগাম প্রজন্ম সকলেই ধর্ম বিচ্যুতি থেকে নিস্তার পাবে।
যারা সাইবাবাকে নিজেদের ভগবান বা আরাধ্য ভেবে ঘরে তার ছবি বা প্রতিমা রেখে পূজা করছেন, তারা জেনে রাখবেন, একজন অসনাতনী অসাধু ব্যক্তি কে ঘরে পূজা করবার ফলে, আপনার গৃহে বাস্তুদোষ লাগবেই, বাস্তুদেবতা অপ্রসন্ন হয়ে যাবেন, আপনর পিতৃপুরুষেরা ক্রোধিত হবেন, কারণ এইসব অধার্মিক ব্যক্তিদের আরাধনা করলে বংশের পূর্বপুরুষেরা নরকে যান, ফলে তারা সেই দুঃখে ক্রোধ করেন , এতে আপনার ভবিষ্যৎ জীবন মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেই হবে।
তাই আপনি আপনার ঘর থেকে, মন্দির থেকে সাঁইবাবা নামক এই মুসলিম ফকিরের ছবি বা মূর্তি বের করে দিন।
যদি নিজেকে প্রকৃত সনাতনী মনে করেন, তাহলে সনাতন ধর্মের মধ্যে ভেজাল মেশাচ্ছে যে সাই বাবা , তাকে ত্যাগ করুন, তিনি জন্মানোর হাজার হাজার বছর আগে থেকে আমাদের সনাতন ধর্ম ছিল, এখনো আছে, তাই নশ্বর দেহধারী সাইবাবার পূজা না করে পরমেশ্বর শিবের ভজনা করুন, তিনি সাক্ষাৎ পরমব্রহ্ম পরমাত্মা। তিনি আপনার এতদিনের সকল পাপ মোচন করবেন।
শৈব সনাতন ধর্ম সদা বিজয়তে 🚩
হর হর মহাদেব 🚩
অপপ্রচার দমনে — শ্রী নন্দীনাথ শৈব আচার্য জী
কপিরাইট ও প্রচারে — International Shiva Shakti Gyan Tirtha - ISSGT
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন