প্রতারক বাংলাদেশ অগ্নিবীর ও দয়ানন্দ সরস্বতী — ঋতুমতী নারীকে পবিত্র মানেন ❓

দয়ানন্দ সরস্বতী ও আর্যসমাজ কি ঋতুমতী নারীকে পবিত্র মানেন ?


প্রতারক বাংলাদেশ অগ্নিবীর ও দয়ানন্দ সরস্বতী — ঋতুমতী নারীকে পবিত্র মানেন ❓

উত্তর —

(ভূমিকা)
বর্তমানে সনাতনীদের মধ্যে শাস্ত্রের জ্ঞানের অভাব থাকবার কারণে, সেই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সনাতনধর্মী ব্যক্তির ছদ্মবেশে থাকা আর্যসমাজী ম্লেচ্ছযবনেরা ‘বেদ’ -এর দোহাই দিয়ে সনাতনীদের মধ্যে বিষাক্ত চিন্তাধারা ভরে দিয়ে সনাতনীদের মাঝে বিভাজন করে তৈরি করছে একদম যেন দ্বিতীয় ‘ইসলামিক’ কট্টর পন্থী।
এই আর্যসমাজীরা দেবদেবীর প্রতিমার বিরোধীতা করে, যারা পুরাণ শাস্ত্র মেনে দেবতার প্রতিমাপূজা করে তাদের পৌরাণিক বলে গালিগালাজ করে, পুরাণ শাস্ত্রের মধ্যে কাল্পনিক গালগপ্পো, অশ্লীল কাহিনী ও কুসংস্কার রয়েছে বলে সনাতনীদের কাছে ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে।
পুরাণ শাস্ত্রের সঠিক শিক্ষা না থাকা সেই সব অজ্ঞানী সনাতনীরা আর্যসমাজীদের ফাঁদে পড়ে ভেবে নিচ্ছে যে, সত্যিই পুরাণ শাস্ত্র হল সবচেয়ে খারাপ, তা বর্জন করে দেওয়াই সনাতন ধর্মের জন্য উপকারের।
এভাবে সরল মানুষেরা আর্যসমাজীতে পরীনত হয়ে আর্যসমাজীদের মতো দিনরাত দেবদেবীর পূজার্চনার নিন্দা করে চলেছে, ভগবান শ্রীহরির অবতার রামচন্দ্র ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কে হরির অবতার বলে মানে না, বরং সাধারণ যোগীর মতো মানুষ বলে প্রচার করছে।
মহাদেবের শিবলিঙ্গের নিন্দা করে এরা। বর্তমানের আর্যসমাজীরা মানুষের কাছে দেখাতে চায় যে আর্যসমাজ অনেক বড় যুক্তিবাদী ও কুসংস্কারহীন।
মানুষের সরল মনে বিশ্বাসের জায়গা করে নেবার জন্য এরা সমাজে নিজেদের কুটিল চিন্তাধারার উপরে ছদ্মবেশী ভালো ভালো কথা সাজিয়ে প্রচার করে, যাতে মানুষ আকৃষ্ট হয়ে এদের ফাঁদে পা দিয়ে আর্যসমাজীতে পরিনত হয়।

♦️আর্যসমাজীদের কাছে এমন‌ই একটি ফাঁদের ভয়ংকর চক্রান্তের বৃহৎ প্রসঙ্গ হল — ঋতুকালে ঋতুমতী নারীর রজস্বলা অবস্থা ।

এই বিষয়েই আজকের আলোচনা করা হবে প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে ।
বাংলাদেশে গজিয়ে ওঠা আর্যসমাজীদের যবন সংগঠন বাংলাদেশ অগ্নিবীর -এর এক অন্ধভক্ত আর্যসমাজী ব্যক্তি আর শৈব মহাপাশুপত অবধূত পরম্পরার আচার্য শ্রী নন্দীনাথ শৈব আচার্য জীর মধ্যে হ‌ওয়া প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে আলোচনা উপস্থাপন করা হল ।

                            (মূল আলোচনা)

একজন সনাতনী নারী শিব মন্দিরের বাইরে দাঁড়িয়ে মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তার কাছ থেকে বাংলাদেশ অগ্নিবীরের দয়ানন্দ সরস্বতীর এক অন্ধভক্ত আর্যসমাজী ব্যক্তি উপস্থিত হয়ে কথা বলা আরম্ভ করেছিলেন।

🤡 বাংলাদেশ অগ্নিবীরের দয়ানন্দ সরস্বতীর ভক্ত আর্যসমাজী — বললেন, নমস্তে ! আপনি কি কোনো কারণে সমস্যায় আছেন ? তাহলে বলতে পারেন.. ।

👩 নারী বললেন, ভাবছি মন্দিরে প্রবেশ করবো কি না ?

🤡 বাংলাদেশ অগ্নিবীরের দয়ানন্দ সরস্বতীর ভক্ত আর্যসমাজী — কেন ? কি সমস্যা ?

(সেই মহিলা প্রথমে ইতস্তত বোধ করলে অবশেষে ইঙ্গিত করে বললেন)

👩 নারী বললেন — আসলে নারীদের যে সমস্যা হয়, সেটির কারণেই ভাবছি মন্দিরে প্রবেশ করবো কি না ?

🤡 বাংলাদেশ অগ্নিবীরের দয়ানন্দ সরস্বতীর ভক্ত আর্যসমাজী — দেখুন, এসব হল যারা পুরাণ মানে তাদের জন্য সমাজে গুজব ছড়িয়েছে, পুরাণের মধ্যে বলা আছে, ঋতুমতী নারীরা রজস্বলা অবস্থায় অপবিত্র, তাদের স্পর্শ‌ও করা উচিত নয়, তারা অপবিত্র হবার কারণে কোনো কাজ করা উচিত নয়, কেননা, তারা রজস্বলা অবস্থায় যে সব বস্তু স্পর্শ করবে সে সবকিছু‌ই অপবিত্র হয়ে যায়, তাই রজস্বলা নারীকে একান্তে বসিয়ে রেখে দেওয়া উচিত। — এই সব কথা পুরাণের মধ্যে আছে । ঐ সব পুরাণের কথা যদি আপনি মেনে চলেন তাহলে আপনি সমাজের কাছে রজস্বলা অবস্থায় সর্বদাই অপবিত্র বলে চিহ্নিত হবেন। আপনি যদি বেদকে(আর্যসমাজীদের তথাকথিত বেদ) মেনে চলেন তাহলে দেখবেন বেদে কোথাও রজস্বলা নারীকে অপবিত্র বলা হয়নি । তাই বেদ মেনে চলুন । পুরাণ যত নষ্টের গোড়া! মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী জীর আদর্শে প্রতিষ্ঠিত আর্যসমাজ পুরাণের এই কুসংস্কার কে মানে না, নারী সর্বদাই পবিত্র, রজস্বলা হোক বা অন্য কোনো সময়। পৌরাণিক রা সর্বদাই রজস্বলা নারীদের অপবিত্র বলে চিহ্নিত করে সকলের থেকে আলাদা করে থাকার বিধান দেয় । আপনি পুরাণের বক্তব্যকে পাত্তা দেবেন না, ব্যাস তাহলেই আপনার মনে আর কোনো সংশয় থাকবে না ।

(ঠিক ঐ সময়েই শ্রীনন্দীনাথ শৈব আচার্য জী শিব মন্দিরে প্রবেশ করছ পরমেশ্বর শিবের দর্শন করবার জন্য মন্দিরের বাইরে হাত-পা ধৌত করছিলেন, তিনি আর্যসমাজী ব্যক্তির এই বক্তব্য শুনে ঐ ব্যক্তি কাছে এসে উপস্থিত হলেন, তারপর কি ঘটলো, নীচে দেখুন)

🕉️ শ্রী নন্দীনাথ শৈবাচার্য জী — নমস্কার ! নমঃ শিবায় 🙏 আপনি যে কথা গুলি বললেন। তা কি আপনি ভেবে বলছেন ?

🤡 বাংলাদেশ অগ্নিবীরের দয়ানন্দ সরস্বতীর ভক্ত আর্যসমাজী (অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে) —  হ্যা নিঃসন্দেহে আমি যা বলছি একদম সঠিক বলেছি । আমরা আর্যসমাজীরা বলি,  নারী সর্বদাই পবিত্র, রজস্বলাতেও তারা পবিত্র ই থাকেন, আমাদের গুরু মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী জী বলেছেন নারীরা সর্বদাই পবিত্র, কখনোই তারা অপবিত্র নন, রজস্বলাতেও তারা পবিত্র থাকেন। তাই তাদের স্পর্শে কোনো কিছু অপবিত্র হয় না। বেদ‌ও বলেছে নারী সর্বদাই পবিত্র। একমাত্র পৌরাণিকদের পুরাণের মধ্যেই রজস্বলা নারীদের অপবিত্র বলা হয়েছে, তাই ওসব পুস্তক ফেলে দেওয়া উচিত, (সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নারীর মনে প্রভাব বিস্তার করবার জন্য , ঐ নারীর দিকে তাকিয়ে আর্যসমাজী বললেন) যেসব পুস্তকে নারীর অপমান করা হয়, সেসব পুস্তক ফেলে দেওয়া উচিত, জ্বালিয়ে দেওয়া উচিত, ঐ সব পুস্তক অধর্মের উৎস, সনাতনীদের কখনোই ঐ সব পুস্তক পড়া উচিত নয়। আমরা সত্য প্রকাশে নির্ভিক সৈনিক ,(অহংকার করে বললেন) আমরা অগ্নিবীর আর্যসমাজীরা সর্বদাই মহর্ষ দয়ানন্দ সরস্বতী জীর আদর্শে চলি। তিনিও যেমন গোঁড়া বা ছুৎমার্গী ছিলেন না, আমরাও তার তেমন আদর্শকেই অনুসরণ করে চলছি।

🕉️ শ্রী নন্দীনাথ শৈবাচার্য জী — বেশ ! এবার তাহলে মন দিয়ে শুনুন, আপনাদের গুরু দয়ানন্দ সরস্বতী তার লেখা “সংস্কার বিধি” পুস্তকের গর্ভাধানপ্রকরণম -এর অন্তর্গত ‘ঋতুদান কাল’ -এর মধ্যে পরিষ্কার ভাবে হিন্দি ভাষায় লিখেছেন যে, — “ उस रजस्वला के हाथ का छुआ पानी भी न पीवे । न वह स्त्री कुछ काम करे, किन्तु एकान्त में बैठी रहे । ”
— অর্থাৎ, তিনি যা লিখেছেন,
তার বাংলা হল —
“রজস্বলা নারীর হাতে স্পর্শ হওয়া জল না কখনো পান করবে,আর না সেই স্ত্রীকে কিছু কাজ করতে অনুমতি দেবে, সে একান্তে বসে থাকবে শুধু।”

সুতরাং, আপনাদের আর্যসমাজীদের গুরু মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী জী নিজেই “ছুৎ-অচ্ছুৎ” মানতেন।
দয়ানন্দ সরস্বতী জী পরিষ্কার করেই বিধান দিয়ে বলেছেন যে,
রজস্বলা নারীকে হাতে স্পর্শ হ‌ওয়া জল কখনো পান না করতে।
কিন্তু এখন বর্তমানে আপনারা আর্যসমাজীরা আপনাদের গুরু দয়ানন্দ সরস্বতীর দেওয়া বিধানের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রচার করছ বেড়াচ্ছেন যে, আর্যসমাজীদের কাছে নাকি রজস্বলা নারী সর্বদা পবিত্র, বেদের দোহাই দিয়ে বললেন নারীরা কখনোই অপবিত্র হন না। নারীরা সর্বদাই পবিত্র থাকে। হ্যা একথা সত্য যে নারী সর্বদাই পবিত্র। কিন্তু ওহে আর্যসমাজী !
আপনাদের এই কথা যদি রজস্বলা নারীদেরকেও পবিত্র বলে বোঝায়, তবে আপনাদের গুরু দয়ানন্দ সরস্বতীর কথা বেদ বিরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং, আপনারা বর্তমান সময়ের আর্যসমাজীরা আপনাদের গুরু দয়ানন্দ সরস্বতীর আদর্শকে না মেনে নিজেদের মতো কপাল কল্পিত সিদ্ধান্ত তৈরি করে মানুষকে বোকা বানাতে লেগে পড়েছেন, সহজ সরল শাস্ত্র জ্ঞানহীন সনাতনীদেরকে ভুলভাল বুঝিয়ে, দয়ানন্দ সরস্বতী কে মহান বলে প্রচার করে যেনতেন আর্যসমাজে ঢোকাতে চান।
আপনাদের গুরু দয়ানন্দ সরস্বতী নিজেই বলেছেন রজস্বলা নারীদের যেন কোন কাজকর্ম করতে না দেওয়া হয়, কারণ তাদের স্পর্শ করা জল বা অন্য কোন কিছুই গ্রহণের যোগ্য হয় না বলেই দয়ানন্দ সরস্বতী জী এ কথা বলেছেন । রজস্বলা নারীকে এক ঘরে করে দেওয়ার জন্য তিনি বলেছেন নারীকে একান্তে বসিয়ে রাখতে।
সুতরাং ওহে আর্যসমাজী মহাশয়, আপনি যে এতক্ষণ ধরে বলছিলেন রজস্বলা নারীকে অপবিত্র বলে চিহ্নিত করে নাকি পুরাণ শাস্ত্র। পুরাণ শাস্ত্র নাকি রজস্বলা নারীদের স্পর্শকে অপবিত্র বলেছে। আপনি এতক্ষণ ধরে এই দেবীজিকে বলছিলেন, পুরান মান্যকারী পৌরাণিকেরা নাকি রজস্বলা নারীদের সবার থেকে আলাদা করে রাখে । এতক্ষণ তো পুরান শাস্ত্র নামে ভীষণ নিন্দা করছিলেন, পৌরাণিকেরা নাকি খুব খারাপ। আপনি বলেছিলেন যে পুস্তকের মধ্যে নারীদের অপমান করবার মত কথা থাকে সেই সব পুস্তক ফেলে দেওয়া উচিত, জ্বালিয়ে দেওয়া উচিত। এবার আপনি বলুন দয়ানন্দ সরস্বতী জীর পুস্তকগুলি ফেলে দেবেন কি না ? জ্বালিয়ে দেবেন কিনা ?

🤡 বাংলাদেশ অগ্নিবীরের দয়ানন্দ সরস্বতীর ভক্ত আর্যসমাজী (থতমত খেয়ে বললো) — কিন্তু আপনাদের পুরাণে তো বলা আছে রজস্বলা নারী অপবিত্র। আপনারা পৌরাণিকেরা তো সেই পুরাণ মানেন ।

🕉️ শ্রী নন্দীনাথ শৈবাচার্য জী — হ্যা !  ঐ পুরাণশাস্ত্রেই বলা আছে যে, রজস্বলা নারীদের অপবিত্র হ‌ওয়া বা শুদ্ধ হবার এসব নিয়ম বর্ণাশ্রমের নিয়মের অন্তর্গত ।
আবার সেই পুরাণেই বলা হয়েছে যে,
যেহেতু সর্বত্র পরমেশ্বর শিব রয়েছেন, তাই সেই পারমার্থিক দৃষ্টির বিচারে ঐ বর্ণাশ্রমের নিয়ম সব‌ই মায়া/ভ্রম মাত্র অর্থাৎ কাল্পনিক।
🔥 প্রমাণ 👇
জলস্য চলনাদেব চঞ্চলত্বং যথা রবেঃ ।
তথাঽহঙ্কারসম্বন্ধাদেব সংসার আত্মনঃ ॥ ৩৫
তস্মাদন্যগতা বর্ণা আশ্রমা অপি কেশব ।
আত্মন্যারোপিতা এব ভ্রান্ত্যা তে নাঽঽত্মবেদিনঃ ॥ ৩৬
[স্কন্দমহাপুরাণ/সূতসংহিতা/মুক্তিখণ্ড/অধ্যায় ৫]

অর্থ — যেমন জলের চঞ্চলতায় ঢেউ এর দ্বারা তার মধ্যে থাকা সূর্যের প্রতিবিম্বতে চঞ্চলতা অনুভব হয় , তেমনি অহংকার সম্বন্ধ দ্বারা আত্মাতেও সংসরণ(বিচলিত) অনুভব হয় । অন্যত্র অর্থাৎ শরীরাদির ধর্মভূত বর্ণাশ্রমাদি ভ্রমবশত আত্মার উপর আরোপিত করা হয়ে থাকে। যিনি আত্মস্বরূপ উপলব্ধি করে এই ভ্রমকে ছিন্ন করে ভ্রম থেকে মুক্ত হয়েছেন, তার কাছে এই বর্ণাশ্রমের কোনো সত্ত্বাই নেই ॥ ৩৫-৩৬

সুতরাং, পুরাণে পরিষ্কার করেই বলা আছে যে বর্ণাশ্রম শুধু সমাজ ব্যবস্থার ব্যবহারিক অবস্থা , গোঁড়ামি নয়।
আপানারা আর্য সমাজীদের গুরু দয়ানন্দ সরস্বতী নিজেই রজস্বলা নারীদের স্পর্শকে অপবিত্র ইঙ্গিত করেছেন।

🤡 বাংলাদেশ অগ্নিবীরের দয়ানন্দ সরস্বতীর ভক্ত আর্যসমাজী (কাঁচুমাচু হয়ে বললো) —  আপনি তো গোঁজামিল দিলেন, পুরাণের বর্ণাশ্রম ব্যবস্থা নিয়ে । আপনারা পৌরাণিকেরা কোথাও তো সরাসরি রজস্বলা নারীদের ঐ অপবিত্র হবার পৌরাণিক বিধানকে খণ্ডানোর সরাসরি প্রত্যক্ষ প্রমাণ দিতে পারলেন না ।

🕉️ শ্রী নন্দীনাথ শৈবাচার্য জী —  আমি যা বললাম তা গোঁজামিল নয় বরং আমি আমাদের পৌরাণিকদের সমগ্র শাস্ত্রের বিচার করে তার মীমাংসা আপনাকে বললাম। ঠিক আছে আমি পৌরাণিকদের মান্য শাস্ত্র থেকেই সরাসরি শব্দ প্রমাণ দিয়ে দেখাবো যে, রজস্বলা নারীর জন্য যে বিধান দেওয়া হয় তা কাল্পনিক মাত্র ।
দেখুন আমাদের পৌরাণিকদের কাছে মহাশ্রুতি হিসেবে মান্য হয়ে থাকে শৈব আগম শাস্ত্র কে । আমাদের‌ পৌরাণিক দের জন্য এই শাস্ত্রের বিধান মান্য হয়ে থাকে। এই শৈবাগমের অন্তর্গত পারমেশ্বরাগমের ১ম পটলের ৫৫ ও ৫৭ নং মহামন্ত্র বলছে 👇

তস্য জাতিভেদোঽস্তি ন শুচ্যশুচিকল্পনা।
ন স্পৃষ্টির্নাপি বাঽশুদ্ধিঃ সর্বং শিবময়ং যতঃ।।৫৫।।
ন স্পৃষ্টির্ন রজোদোষো ন স্ত্রীবালাদিকল্পনা।
ন জন্মমরণাশৌচং ন স্থানাদিবিধির্যতঃ।।৫৭।।
[মহাশ্রুতি/ পারমেশ্বরাগম- প্রথম পটল]

✅ অর্থ — পরমেশ্বর শিব বললেন, এখানে শৈব সনাতন মার্গে জাতিভেদের কল্পনা করা হয় না, পবিত্রতা আর অপবিত্রতার কল্পনাও সমাপ্ত হয়ে যায়। স্পর্শদোষ আর অশুদ্ধি সবকিছুই সমাপ্ত হয়ে যায়, কারণ এখানে সবকিছুই শিবময় ॥ ৫৫
শৈবমার্গে স্পর্শদোষ, স্ত্রী দের রজোদোষ, স্ত্রী-বালকের কল্পনা, জন্ম আর মরণজনিত অশৌচ তথা স্নানবিধির কোনো মান্যতা নেই ॥ ৫৭

ও হে আর্যসমাজী ! আপনি তো বাংলাদেশ অগ্নিবীরের অন্ধভক্ত , তা এবার বেদ থেকে দেখান তো নারীদের রজোদোষ হয় না বলে সরাসরি কোন মন্ত্রে উল্লেখ করা আছে ।
আপনি যদি তা দেখাতে পারেন তাহলে বাংলাদেশ অগ্নিবীর সত্য প্রমাণিত হবে । কিন্তু অন্যদিকে আপনাদের আর্যসমাজীদের গুরু মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী জী অসত্যবাদী প্রমাণিত হবেন।
এবার আপনি বলুন, আপনারা আপনাদের বর্তমান আর্যসমাজীরা কি দয়ানন্দ সরস্বতীর আদর্শে চলেন নাকি তার বিধানের বিরুদ্ধে গিয়ে দয়ানন্দের গোঁড়ামিতাকে ধামাচাপা দিয়ে লুকিয়ে
সনাতনী সমাজের কাছে নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করবার জন্য এভাবে মিথ্যা বলে চলেন ?

🤡 বাংলাদেশ অগ্নিবীরের দয়ানন্দ সরস্বতীর ভক্ত আর্যসমাজী (মুখ টা ফ্যাকাসে হয়ে গেল, তবুও নির্লজ্জের মতো বলতে লাগলেন) —  না.. মানে, আপনারা পৌরাণিকেরা খুব ধূর্ত.... আপনাদের পুরাণে....... (এর মধ্যে ঐ মহিলা জোর গলায় চিৎকার করে উঠে আর্যসমাজী ব্যক্তিকে বললেন)

👩 সেই নারী বললেন — থামুন🖐️ থামুন ! 🙌আমি শাস্ত্রের এতকিছু বুঝি না বলেই আপনার কথায় প্রথমে প্রায় বিশ্বাস করেই ফেলছিলাম, ভাবছিলাম পুরাণ গুলো হয়তো সত্যিই কাল্পনিক। কিন্তু আমার আরাধ্য শিবের করুণা এতটাই যে, এমন একজন শিবভক্তের দ্বারা আমি ভুল পথে পরিচালিত হতে গিয়েও সঠিক মার্গ জানতে পেরেছি। সত্যিই পরমেশ্বর শিব অত্যন্ত দয়ালু। তার জন্য‌ই আমি আপনার মতো সুবিধাবাদী দুমুখো সাপের ন্যায় বিষাক্ত আর্যসমাজীদের পাল্লায় পড়েও আমি বেঁচে গেলাম । এখান থেকে দূর হোন শিগগিরই.... 😤😠🤬🤬
নচেৎ আমার ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙার সময় হয়ে এসেছে।

(এসব চিৎকার শুনে বেশ কয়েকজন লোকজন জড়ো হয়ে গেল)

🤡 বাংলাদেশ অগ্নিবীরের দয়ানন্দ সরস্বতীর ভক্ত আর্যসমাজী ব্যক্তি গতি বেগতিক দেখে প‌ই প‌ই করে পা লম্বা লম্বা করে দ্রুতগতিতে কেটে পড়লেন।

ঐ মহিলা শ্রী নন্দীনাথ শৈবাচার্য জী দিকে ঘুরে হাতজোড় করে প্রণাম করতে করতে অশ্রুসিক্ত চোখে বললেন ,

👩 ঐ নারী বললেন — আপনি এখানে না উপস্থিত না হলে আমাকে ভুল বুঝিয়ে দিতো । আমি ছোট বেলায় চণ্ডীপাঠ করতে শুনতাম দাদুর কাছে, তিনি বলতেন এটি মার্কণ্ডেয় পুরাণের মধ্যের অংশ।
ক্ষণেকের মধ্যে ঐ আর্যসমাজীর পাল্লায় পড়ে ভাবতে শুরু করেছিলাম যে তাহলে কি মার্কণ্ডেয় পুরাণ টাও মিথ্যা ?
সব পুরাণ ই যদি কাল্পনিক হয় তাহলে নিশ্চয়ই মার্কণ্ডেয় পুরাণটিও মিথ্যা। দাদুর কথা মনে পড়লো, ভাবলাম দাদুর বলা কথা গুলোও কি তবে মিথ্যা ?
মনে প্রশ্ন জাগতে শুরু করছিল।
আর আপনি দেবদূতের মতো এসে আমার সব সংশয় দূর করলেন । আপনি আমার বিশ্বাস ও ধর্মকে বাঁচিয়েছেন , আমার শিবভক্তি বাঁচিয়ে দিয়েছেন। পরমেশ্বর শিবের উপর আমার বিশ্বাস আরো দৃঢ় হয়ে গেল । তার কাছে হত্যিই সবাই সমান, কোনো ভেদাভেদ নেই। আর তার মতোই তার ভক্তরাও উদার, কোনো ভেদাভেদ করেন না, সবার মধ্যে শিবকে দেখেন। আমার শিবভক্তি বাঁচিয়ে দিয়েছেন আপনি, আমি আপনার কাছে চিরকৃতজ্ঞ র‌ইলাম ।

🕉️ শ্রী নন্দীনাথ শৈবাচার্য জী —
শিবভক্তদের ভক্তি যাতে অটুট থাকে, তার জন্য আমি শিব ভক্তদের কাছে শিব জ্ঞান পৌঁছে দেবার চেষ্টা করে চলেছি সর্বদা। বহু শিব ভক্তেরা আমার সাথে যোগাযোগ করেন, আমার সাধ্য মতো শিব বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য তাদের দিয়ে থাকি গুরু কৃপায়।
International Shiva Shakti Gyan Tirtha ওরফে ISSGT নামের একটি দল তৈরি করেছি, যার মাধ্যমে পরমেশ্বর শিবের মাহাত্ম্য প্রচার করছি। অপপ্রচারকারীদের শাস্ত্র থেকে প্রমাণসহ জবাব দিয়ে সনাতন ধর্মের সম্মানকে রক্ষা করবার কাজ করা হয় এখানে। অসহায় জীবেদের সেবা করা আমাদের শিবভক্ত শৈবদের উদ্দেশ্য। আপনি যদি চান প্রভু শিবের জন্য কিছু কাজ করতে চান, সনাতনধর্মের সঠিক জ্ঞান সম্পর্কে শাস্ত্র জ্ঞানহীন সনাতনীরা শিক্ষা অর্জন করুক। তবে প্রভু শিবের এই শৈবপরিবারে আপনাকে সুস্বাগতম...

🧑‍🦱 নারী — চির কৃতজ্ঞ র‌ইলাম আপনার কাছে 🙏
(জড়ো হওয়া জনতা সেই মহিলার কাছে সেখানে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা জিজ্ঞাসা করলেন, তখন ওই মহিলা সব খুলে বললেন, তখন সেখানে উপস্থিত জনতা শ্রদ্ধা ভরে দেখলেন। আর ধন্য ধন্য বললেন)

🕉️ শ্রী নন্দীনাথ শৈবাচার্য জী (স্মিত হাস্যমুখে সবার উদ্দেশ্যে বললেন) — মন্দিরে পরমেশ্বর শিব আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন , চলুন আমরা সবাই প্রভু পরমেশ্বর শিবের শরণে যাই....

শৈব সনাতন ধর্ম সদা বিজয়তে 🚩
হর হর মহাদেব 🚩

©️ কপিরাইট ও প্রচারে —  International Shiva Shakti Gyan Tirtha - ISSGT

#আর্যসমাজেরখণ্ডন #পরমেশ্বরশিব #অপপ্রচারেরজবাব #ISSGT #শৈবজ্ঞান #সনাতন #বেদ #শৈবাগম #শৈবধর্ম #শৈব #অসনাতনীদেরখণ্ডন #দয়ানন্দসরস্বতীরমতখণ্ডন


মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ