দয়ানন্দ সরস্বতীর অশ্লীল বেদ ভাষ্যের খণ্ডন পর্ব - ১

দয়ানন্দ কৃত যজুর্বেদভাষ্য - ১

[দয়ানন্দ সরস্বতীর হিন্দি যজুর্বেদ ভাষ্যের ছবি]


 হিন্দি ভাষায় দয়ানন্দ সরস্বতী যেভাবে লিখেছেন সেটি এখানে প্রথমে দেখানো হল 👇

 पूषणं वनिष्ठुनान्धाहीन्स्थूलगुदया सर्पान्गुदाभिर्विह्लुत आन्त्रैरपो वस्तिना वृषणमाण्डाभ्यां वाजिनग्वगं शेपेन प्रजाग्वं रेतसा चाषान् पित्तेन प्रदरान् पायुना कूश्माञ्छकपिण्डैः ॥ 

- यजुर्वेद (अध्याय २५ मंत्र ७)

दयानंद अपने यजुर्वेदभाष्य में इस मंत्र का अर्थ यह लिखते हैं,

हे मनुष्यों! तुम मांगने से पुष्टि करने वालों को स्थूल गुदेंद्रियों के साथ वर्तमान, अंधे सर्पों को गुदेंद्रियों के साथ वर्तमान विशेष कुटिल सर्पों को आंतों से, जलों को नाभि के नीचे के भाग से, अंडकोष को आंडों से, घोडे के लिंग और वीर्य से संतान को, पित्त से भोजनों को, पेट के अंगो को गुदेंद्रिय और शक्तियों से शिखावटों को निरंतर लेओं ।


এবার দেখুন বাংলায় 👇

পূষণং বনিষ্ঠুনান্ধাহীন্স্থূলগুদয়া সর্পান্গুদাভির্বিহ্লুত আন্ত্রৈরপো বস্তিনা বৃষণমাণ্ডাভ্যাং বাজিনগ্বগং শেপেন প্রজাগ্বং রেতসা চাষান্ পিত্তেন প্রদরান্ পায়ুনা কূশ্মাঞ্চকপিণ্ডৈঃ ॥ 

- যজুর্বেদ/ অধ্যায় ২৫/ মন্ত্র নং ৭

দয়ানন্দ সরস্বতী তার যজুর্বেদভাষ্যে এই মন্ত্রের অর্থ লিখেছেন 👉 হে মনুষ্যগণ ! তুমি চেয়ে নেওয়া পুষ্টিকারীদের স্থূল মলদ্বারের সহিত বর্তমান,  অন্ধ সর্পকে মলদ্বারের সাথে বর্তমান বিশেষ কুটিল সর্পকে অন্ত্রের সাথে, জলকে নাভির নীচের ভাগ থেকে, অণ্ডকোষকে ডিমের সাথে, ঘোড়ার লিঙ্গ আর বীর্য দ্বারা সন্তানকে, পিত্ত দ্বারা ভোজনকে, পেটের অঙ্গকে মলদ্বার আর শক্তির দ্বারা অভিযোগ কে নিরন্তর ঢোকাতে থাকো(বা নিতে থাকো)।


সমীক্ষা : এবার এই আর্যসমাজী নিয়োগীদের বলি, আপনাদের কাছে দয়ানন্দ সরস্বতী দ্বারা বেদের নামে অধিকাংশ মন্ত্রের এমন অশ্লীল অর্থ বের করাটাকে অশ্লীলতা কেন মনে হয় না ?

আর যখন এই বেদ ঋচার মতোই অন্য কোনো সনাতনী ধর্মগ্রন্থে কোনো শ্রুতি বা শ্লোক চোখে পড়ে, তবে নিজের ইচ্ছা মতো তার অর্থের অনর্থ ঘটিয়ে আপ্ত পুরুষের দ্বারা রচিত গ্রন্থের অপমান করে বেড়ায় আর উল্টে সনাতনধর্মীদের ও শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতব্যক্তিবর্গদের ধূর্ত, নিশাচর, পাখণ্ডী, নীচ আর অকথ্য কত যে গালিগালাজ করে এই আর্যমসমাজীরা, তার হিসেব নেই।

তাই এখন নিয়োগ সমাজী দয়ানন্দীরাই আমাদের বলুক যে, এই দয়ানন্দ সরস্বতীর এই ভাষ্যের বিষয়ে তারা কি রায় দেবে ? 

দয়ানন্দ সরস্বতীর দ্বারা উক্ত অর্থ কি আর্যমসমাজীদের অশ্লীল লাগছে নাকি লাগছে না ?


(প্রশ্ন নং ১) আর্যসমাজীরা আমাদের বলুন যে, অন্ধ সাপের মলদ্বারে ঢুকানো আর কুটিল সাপের অন্ত্রের মধ্যে ঢোকানোর(নেওয়ার) আজ্ঞা কি ঈশ্বর দিয়েছেন ?


যদি দিয়ে থাকেন তবে আর্যসমাজীরা দিনের মধ্যে এটি কতবার ঢোকান(নেন) ? 


(প্রশ্ন নং ২) দয়ানন্দীরা আমাদের বলুন অন্ধ কুটিল সাপ আর অশ্বের লিঙ্গকে মলদ্বারে তথা অন্ত্রে নিরন্তর ঢোকাতে থাকার পেছনের বিজ্ঞান টা কি ?


(প্রশ্ন নং ৩) দয়ানন্দী মলদ্বারের ভেতরে তথা অন্ত্রের মধ্যে অন্ধ কুটিল সাপ এবং অশ্বের লিঙ্গ কে নিরন্তর নিতে থাকার বিশেষ যুক্তি উন্মোচন করুন, কেননা দয়ানন্দীগণের সাপের সাথে এই কৃত্য করার কল্পনাও আমাদের বোঝার ঊর্ধ্বে যে, সাপকে কোন যুক্তিতে মলদ্বারে প্রবেশ করতে দেয় ?


(প্রশ্ন নং ৪) সাপকে মলদ্বারের মধ্যে নেওয়ার আবশ্যকতা কি ? 

মলদ্বার মন্থনের আনন্দ ই যদি নেবার উদ্দেশ্য হয়ে থাকে দয়ানন্দীদের, তবে সাপের আকারের সমান আকারের অন্য কোনো বস্তুর বিকল্প‌ও তো আছে আপনাদের কাছে, তাই না ?

আর যদি ঢোকানোর(নেওয়ার/প্রবেশ করার) সময় সাপ বেচারা ঘাবড়ে গিয়ে আপনার(আর্যসমাজীর) মলদ্বারের ভেতরে বা পশ্চাদদেশে কামড়ে দেয়, তাহলে বৈদ্যের(চিকিৎসকের) কাছে গিয়ে কি বলবে অভাগাগণ ?


(প্রশ্ন নং ৫) তাছাড়া শুধুমাত্র অন্ধ সাপ‌ই কেন মলদ্বারে প্রবেশ করাবেন ? 

চক্ষুর দৃষ্টিসম্পন্ন সাপের দ্বারা কি মলদ্বারে নজর লেগে যাবার ভয় আছে ?


(প্রশ্ন নং ৬) অর্থ তে দেখা গিয়েছে “অণ্ডকোষকে ডিমের সাথে - নিরন্তর নিতে থাকো” এবার দয়ানন্দী আর্যমসমাজীরা অণ্ডকোষ আর ডিমের মধ্যে থাকা পার্থক্য বুঝিয়ে দিক, তারপর এটা বলুক যে, অণ্ডকোষ দ্বারা ডিমকে কি প্রকারে নেওয়া(ঢোকানো/প্রবেশ করানো) যেতে পারে ?


উচিত কার্য এটাই হতো, যদি দয়ানন্দী আর্যমসমাজীরা তাদের গুরু আজ্ঞা শিরোধার্য করে সেটি পালনপূর্বক দয়ানন্দ সরস্বতীর মলদ্বারের মধ্যেই দু চারটে অন্ধ সাপ ছেড়ে দিতো আর দয়ানন্দ সরস্বতীকে নিরন্তর অশ্বের(ঘোড়ার) লিঙ্গ গ্রহণ করাতে থাকতো, তবেই সেটা গুরুর নির্দেশ পালন করার মর্যাদা রক্ষা হতো ।😆


 এবার  কোনো আর্যনামাজী যেন এটা না বলে যে, এটার মানে এটা নয়, ওটার মানে সেটা নয়... এটার ব্যাখ্যা এই, ওটার ব্যাখ্যা ওই.... Brahminy Blind Snake বা Hoop Snake এর গল্প না দেয়। কারণ, এই এক‌ই কথা যখন আমরা আর্যমসমাজীদের বলি, তখন তারা সেসব শুনতে চায় না বরং পুরাণের বা বেদের শব্দের আক্ষরিক অর্থ ধরেই বসে থাকে.....

দেখুন, দয়ানন্দ সরস্বতী তার লেখা সত্যার্থ প্রকাশের দ্বাদশ সমুল্লাসে - মহীধর আদি ভাষ্যাকারদের উদ্দেশ্যে অশ্লীল ভাষ্য করার আরোপ লাগাতে গিয়ে লিখেছেন যে - “হা ! ভণ্ড ধূর্ত নিশাচরবৎ মহীধরাদি টীকাকার হয়েছেন, তার ধূর্ততা এগুলি, বেদের নয়”

এই এক‌ই কথাগুলি কি এই পাষণ্ড দয়ানন্দ সরস্বতীর উপর আরোপিত হয় না ? অবশ্য‌ই হয়....

অত‌এব, পাঠকগণের কাছে নিবেদন র‌ইল, এই কথাগুলি বিচার পূর্বক বুঝে নিন - দয়ানন্দ সরস্বতী যে এই অশ্লীল ভাষ্য করেছে সেটা তার নিজস্ব পূর্ততা মাত্র , ইহা উক্ত বেদের মন্ত্রের প্রকৃত অর্থ নয় ।


দেখে নিন এই শ্রুতিমন্ত্রের প্রকৃত অর্থ এরকম 👇

এই মন্ত্রতে আহুতি দ্বারা, পাচন সম্বন্ধীয় বিভিন্ন অঙ্গে উপস্থিত ভিন্ন ভিন্ন শক্তিসমূহকে তার সম্পর্কিত নির্দিষ্ট দেবতার প্রসন্নতার নিমিত্তে সমর্পিত করা হয়েছে, সবার‌ই শক্তিসমূহ দেবতার প্রয়োজনের জন্য‌ই সমর্পিত হোক, এমনভাবে জেনে রোগমুক্ত সুস্থ জীবনের জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে, ইহা একটি আদর্শ সংগঠনাত্মক বিদ্যা, দেখুন কি বলছে এই পবিত্র বেদ মন্ত্র 👇


পূষণং বনিষ্ঠুনান্ধাহীন্স্থূলগুদয়া সর্পান্গুদাভির্বিহ্লুত আন্ত্রৈরপো বস্তিনা বৃষণমাণ্ডাভ্যাং বাজিনগ্বগং শেপেন প্রজাগ্বং রেতসা চাষান্ পিত্তেন প্রদরান্ পায়ুনা কূশ্মাঞ্চকপিণ্ডৈঃ ॥ 

- যজুর্বেদ/ অধ্যায় ২৫/ মন্ত্র নং ৭

সরলার্থ - (পূষণং বনিষ্ঠুনা স্থূলগুদয়া) স্থূল অন্ত্র তথা মলদ্বার, পাচন সম্বন্ধীয় অঙ্গের ভাগ পূষণ দেবতার জন্য, হে পূষণদেব আমাদের পাচনতন্ত্র সম্বন্ধীয় অঙ্গ সুস্থ করে শরীরের ব্যধিসমূহ তেমনভাবে দূর করুন, যেমন ভাবে (অন্ধাহীন সর্পান) অন্ধহীন সর্প নিজের খোলস থেকে দূরে চলে যায়, (গুদাভিবির্হত আন্ত্রৈরণো) আর হে বিহৃতদেব ! আপনি মলদ্বার সম্বন্ধীয় অন্য সকল ব্যধিসমূহকে দূর করে আমাদের রোগমুক্ত সুস্থ জীবন প্রদান করুন, এই প্রকার (বস্তিনা) বস্তিভাগ জলের নিমিত্ত, (বৃষণমাণ্ডাভ্যাং) অণ্ডকোশের শক্তি বৃষণ দেবের জন্য, (বাজিনং) উপস্থের শক্তি বাজীদেবের জন্য, (রেসা) বির্য প্রজার রক্ষার জন্য, (চাষান্ পিত্তেন) পিত চাষদেবের জন্য, (প্রদরান্ পায়ুনা) অন্ত্রের তৃতীয়ভাগ প্রসরদেবের জন্য, (কুশ্মাচ্ছকপিণ্ডৈঃ) তথা শকপিণ্ডকে কূপমদেবের প্রসন্নতার নিমিত্তে সমর্পিত করতে থেকে রোগমুক্ত, সুস্থ জীবনের কামনা করছি।


আর ভাণ্ড দয়ানন্দ সরস্বতী এই পবিত্র বেদমন্ত্রের অর্থের যে অনর্থ ঘটিয়েছে তা আপনাদের সামনেই আছে।


তো এবার বলুন হে আর্যনামাজীগণ এগিয়ে এসে দয়ানন্দের মুখে দু চার ঘা দেবেন তো এই অশ্লীল ভাষ্য করার বিরোধীতা হিসেবে ? 

যদিও বা পিঠ বাঁচাতে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা আর্যনামাজীরা করবেই, এবং প্রমাণ করতে চাইবে যে এগুলো অশ্লীল নয়, তবুও উক্ত অনুবাদ এই মন্ত্রের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় বরং বেদ মন্ত্রের বিকৃতি ঘটিয়েছে দয়ানন্দ সরস্বতী এটা কোনোদিন চাপা দিতে পারবে না আর্যনামজীরা।


আরো একটা মজার বিষয় হল, আর্যমসমাজীরা দাবি করে যে, বেদ মন্ত্রে কোনো ইতিহাস থাকতে পারেনা,  সৃষ্টির পরবর্তী ঘটনা উল্লেখ থাকতে পারেনা, এই অজুহাতে আর্যমসমাজীরা বেদের ব্রাহ্মণ গ্রন্থকে বেদ বলে মানতে নারাজ, কারণ সেখানে নাকি ইতিহাস রয়েছে তাই সেটা বেদ নয়, বরং আর্যমসমাজীরা বেদের চার অংশ - সংহিতা, ব্রাহ্মণ, আরণ্যক ও উপনিষদের মধ্যে শুধুমাত্র সংহিতা ভাগকেই বেদ বলে মানে অথচ বেদের সংহিতা ভাগেই মন্ত্রতে মানব দেহের অঙ্গের কথা, সাপের কথা বলে তার বর্ণনাও দেয়া হয়েছে? এগুলো ইতিহাস নয় ? 

দয়ানন্দের কথা অনুযায়ী অশ্ব  ও তার লিঙ্গ‌ও এই মন্ত্রে রয়েছে, তাহলে সৃষ্টির পূর্বে থাকা বেদমন্ত্রের মধ্যে সৃষ্টির পরবর্তীতে জন্ম নেয়া অশ্বের কথা কি করে আছে ?

হায়রে... বাংলাদেশের অগ্নিবিড়িখোর তথা আর্যনামাজীগণ এখন তো সব ইতিহাস হ‌ইয়া গেল.. মন্ত্র ক‌ই গেলো ?? 😄 


সুতরাং, হে সনাতনীগণ আপনারা এই খ্রীষ্টানদের থিয়োসোফিক্যাল সোসাইটির দালাল দয়ানন্দ সরস্বতীর আর্যসমাজীদের চিনে নিয়ে এদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। যদিও পিঠ বাঁচানোর জন্য বাংলাদেশের অগ্নিবিড়িখোরেরা এখন থিয়োসোফিক্যাল সোসাইটির বিপক্ষে বলবে যে থিয়োসোফিক্যাল সোসাইটির উদ্দেশ্য ছিল সকল ধর্মমতকে একসাথে করে মিশ্রধর্ম বানানোর, দয়ানন্দ এটা না জেনে তাতে স্বীকৃতি দিয়েছিল, তাই দয়ানন্দ নির্দোষ😂🤣 ।

আর্যসমাজের মিথ্যাচারের বিপক্ষে পরবর্তী ঔষধ শীঘ্রই আসছে.......

পরমেশ্বর মহাদেবের কৃপায় এদের ধো_লা_ই চলছে , চলবে....

হর হর মহাদেব 😌


অপপ্রচার দমনে - শ্রীনন্দীনাথ শৈব 

প্রচারে - ISSGT 


আরো দেখুন 👇

দয়ানন্দ সরস্বতীর অশ্লীল বেদ ভাষ্যের খণ্ডন পর্ব - ২


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমবার ব্রত বিধি ও মাহাত্ম্য (শৈবপুরাণোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ১ (মূলপূজা)

বৃহৎ শিবার্চন বিধি পুস্তক (শৈব আগমোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ২ (প্রহরপূজা)

ত্রিপু্রোৎসব দীপপ্রজ্জ্বলন রীতি – স্কন্দমহাপুরাণোক্ত