ত্রয়োদশী প্রদোষ ব্রত পূজা বিধি - সংক্ষিপ্ত (শৈবপুরাণোক্ত)




🔴 প্রদোষ ব্রত পালনের সময়কাল – কৃষ্ণ ও শুক্ল পক্ষ উভয় পক্ষেরই ত্রয়োদশী তিথির সন্ধ্যা বেলায় প্রদোষব্রত পালন করার বিধি আছে শাস্ত্রে। 
এছাড়া সোমবারেও বার অনুসারে সোমবার সন্ধ্যায় এই ব্রত পালন করা হয়। প্রদোষ ব্রত সারাবছর করতে পারেন, যদি কিছুদিনের জন্য প্রদোষ ব্রত অনুষ্ঠান করতে চান তবে অন্তত সাতটি অথবা তেরোটি প্রদোষ ব্রত অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত করবেন। এছাড়া আপনার ইচ্ছা মত যে কোনো ত্রয়োদশীতে পালন করতে পারেন।


🛑উপকরণ

১. তামার তৈরী নন্দীর উপরে স্থিত শিবপার্বতীর বিগ্রহ বা ঐ রকম একটি চিত্র, অথবা শিবলিঙ্গে শিবপার্বতীকে একত্রে পূজা করতে হবে।
২. সাধ্যমত গন্ধপুষ্প ও কিছু বেলপাতা ।
৩. পঞ্চামৃত (কাঁচা দুধ, ঘি, দ‌ই, মধু ও শর্করা)।
৪. শিবের জন্য একটি পানীয় জল পূর্ণ গ্লাস।
৫. ভোগ হিসেবে সাধ্যমত মিষ্টান্ন ও পাকা ফল ।
৬. ধূপ, দীপ, চন্দন ।
৭. দূর্বা, কিছু গোটা আঁতপচাল।

🔵প্রাথমিক করণীয়

১. সারাদিন উপবাস বা নিরাহার থাকতে হবে। 
বিকালের ক্ষেত্রে : সূর্যাস্তের তিন দন্ড (১ দন্ড = ২৪ মিনিট, ৩ দন্ড= ৭২ মিনিট) পূর্বে স্নান সেরে ফেলতে হবে (স্কন্দপুরাণানুসারে)। 
এছাড়া প্রদোষ ব্রতের দিন সকালেও স্নান করতে পারেন।
২. স্নানের পর সাদা বস্ত্র ধারন করে পবিত্র মনে পূজায় বসতে হবে।
৩. বৃক্ষে জলদান করুন। কুকুর বা পাখিদের খেতে দিন। এতে শিব খুশি হন।
৪. তারপর শিবকে নিত্য সন্ধ্যারতি করার পর সন্ধ্যাবেলায় মূল পূজা করতে বসতে হবে।
৫. যেকোনো ধরনের শিব পূজায় ত্রিপুণ্ড্র ও রুদ্রাক্ষ ধারন আবশ্যিক।
৬. নেশাজাত বা মাদকদ্রব্য সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে।
৭. ব্রহ্মচর্য্য পালন করুন, নারীজাতির প্রতি শ্রদ্ধার দৃষ্টি রাখুন, কটুভাষা বা কটুচিন্তা পরিত্যাগ আবশ্যিক।
(এখানে ক্লিক করে দেখুন👉ত্রিপুন্ড্রধারণ বিধি 

🔴 সকালের করনীয় কর্ম :

✅সকালে নিদ্রাভঙ্গ করে শিবপার্বতীর স্মরণ করুন হাত জোড় করে। মন্ত্র –

কর্পূর গৌরং করুণাবতারং সংসার সারম্ ভুজগেন্দ্রহারম্ ।
সদা বসন্তং হৃদয়ারবিন্দে ভবং ভবানী সহিতম্ নমামি ।।

✅এবার ব্রত সংকল্প করুন এই মন্ত্রে(অথবা সরল বাংলা ভাষাতেই বলুন) –

🛑 মন্ত্র – দেবদেব মহাদেব নীলকন্ঠ নমোঽস্তু তে ।
কর্তুমিচ্ছাম্যহং দেব ত্রয়োদশীপ্রদোষব্রতং তব ॥
তব প্রভাবাদ্দেবেশ নির্বিঘ্নেন ভবেদিতি ।
কামাদ্যাঃ শত্রবো মাং বৈ পীড়া কুর্বন্তু নৈব হি ॥


(অথবা এই সহজ ভাষায় সংকল্প করুন,
বলুন – দেবদেব মহাদেব হে নীলকন্ঠ আপনাকে নমস্কার করি। হে দেব পরমেশ্বর! আমি আপনার ত্রয়োদশী তিথির প্রদোষব্রতের অনুষ্ঠান করতে চাই। হে মহেশ্বর প্রভু শিব ! আপনার প্রভাবে এই ব্রত যেন সম্পূর্ণ নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয় এবং কামাদি শত্রু যেন আমাকে পীড়া প্রদান না করে। 
হে শঙ্কর ! 
ঋণ, পাতক, দুর্ভাগ্য, দারিদ্র্য এবং অশেষ পাপ বিনাশের নিমিত্ত তুমি আমার প্রতি প্রসন্ন হও। 
হে বৃষবাহন! 
আমি দুঃখ-শোকাগ্নি সন্তপ্ত, সংসারভয়-পীড়িত, বহুরোগাকুল এবং দীন, তুমি আমাকে ত্রাণ করো । 
হে দেবদেবেশ! এসো, মহাদেব ! 
হে অভয়ঙ্কর ! তুমি জগৎজননী পার্বতী মাতার সহিত এসে‌ আমার কৃত এই পূজা গ্রহণ করো ।)


এরপর উপবাসী থেকে স্নান করবেন নমঃ শিবায় জপ করে। স্নান সেরে শুদ্ধবস্ত্রধারণ করে ত্রিপুণ্ড্র ও রুদ্রাক্ষ ধারণ করবেন বৃক্ষে জল দেবেন এবং কিছু পশুপাখিদের(গরু/ছাগল/কুকুর/কাক/যেকোনো পাখি) এবং কীটপতঙ্গ(পিঁপড়ে ইত্যাদি) খাদ্যবস্তু দান করবেন। এবার হাত ধুয়ে নিন।

🔴 উপাসনার সময়ে করণীয় কর্ম :

উপাসনার কক্ষে অথবা শিবমন্দিরে উপস্থিত হয়ে গঙ্গা জল চারিদিকে ছিটিয়ে দিন রং মন্ত্রে। শিবলিঙ্গ অথবা শিবপার্বতীবিগ্রহ (অথবা শিবপার্বতীর চিত্র) – এর সামনে কুশের আসন অথবা কম্বলের আসন পেতে তার উপর উত্তর দিকে মুখ করে বসুন।

✅ সর্বপ্রথম শিবস্মরণ করুন – 

ॐ শিব ॐ শিব ॐ শিব বৃষভারূঢ়ং হিরণ্যবাহুং হিরণ্যবর্ণং হিরণ্যরূপং পশুপাশবিমোচকং পুরুষং কৃষ্ণপিঙ্গলং ঊর্ধ্বরেতং বিরূপাক্ষং বিশ্বরূপং সহস্রাক্ষং সহস্রশীর্ষং সহস্রচরণং বিশ্বতোবাহুং বিশ্বাত্মানং একং অদ্বৈতং নিষ্কলং নিষ্ক্রিয়ং শান্তং শিবং অক্ষরং অব্যয়ং হরি-হর-হিরণ্যগর্ভ-স্রষ্টারং অপ্রমেয়ং অনাদ্যন্তং রুদ্রসূক্তৈরভিষিচ্য সিতেন ভস্মনা শ্রীফল দলৈশ্চ ত্রিশাখৈরার্দ্রৈর-নার্দ্রৈর্বা ॥ 
ॐ নমঃ শিবায় ॥
ॐ নমঃ শিবায় ॥ 
ॐ নমঃ শিবায় ॥


✅এবার শৈব আগমোক্ত শুচিমন্ত্র পাঠ করুন –

ॐ অপবিত্রঃ পবিত্রো বা সর্বাবস্থাং গতোঽপি বা ।
যঃ স্মরেৎ বৈ বিরূপাক্ষং স বাহ্যাভ্যন্তরঃ শুচিঃ ‌‌॥

✅অতঃপর নিজ গুরু কে স্মরণ করুন । (যদি আপনি অদীক্ষিত ব্যক্তি হন তবে ভগবান গণেশকে স্মরণ করুন এই মন্ত্র পাঠ করে – ॐ গাং গণপতয়ে নমঃ ॥

🍁এবার পার্বতীসহিত পরমেশ্বর শিবকে পূজা গ্রহণ করার জন্য ভক্তিসহকারে আবাহন করুন হাতজোড় করে নিম্নোক্ত মন্ত্র পাঠ করে –

ঋণপাতক দৌর্ভাগ্যদারিদ্র্যবিনি বৃত্তয়ে ।
অশেষাঘবিনাশায় প্রসীদ মম শঙ্কর ॥
দুঃখশোকাগ্নিসন্তপ্তং সংসারভয়পীড়িতম্ ।
বহুরোগাকুলং দীনং ত্রাহি মাং বৃষবাহন ॥
আগচ্ছ দেবদেবেশ মহাদেবাভয়ঙ্কর ।
গৃহাণ সহ পাৰ্ব্বত্যা তব পূজাং ময়া কৃতাম্ ॥

(অথবা এই সহজ ভাষায় আবাহন করুন,
বলুন  হে শঙ্কর ! 
ঋণ, পাতক, দুর্ভাগ্য, দারিদ্র্য এবং অশেষ পাপ বিনাশের নিমিত্ত তুমি আমার প্রতি প্রসন্ন হও। 
হে বৃষবাহন! 
আমি দুঃখ-শোকাগ্নি সন্তপ্ত, সংসারভয়-পীড়িত, বহুরোগাকুল এবং দীন, তুমি আমাকে ত্রাণ করো । 
হে দেবদেবেশ! এসো, মহাদেব ! 
হে অভয়ঙ্কর ! তুমি জগৎজননী পার্বতী মাতার সহিত এসে‌ আমার কৃত এই পূজা গ্রহণ করো ।)


✅এবার ঘিয়ের দীপ জ্বালুন, সুগন্ধযুক্ত ধূপ জ্বালিয়ে নিন। ফল অথবা মিষ্টান্ন এবং পানীয় জল সহ জলের গ্লাস সাজিয়ে দিন প্রভু শিবের সমীপে। এবার এক একটি থালা প্রভুর সামনে দেখিয়ে বলুন – 

ॐ শিবার্পণমস্তু ॥
ॐ শ্রীসাম্বসদাশিবার্পণমস্তু ॥
হে প্রভু মহাদেব ! হে মাতা পার্বতী ! আমার দ্বারা নিবেদিত এই ভক্তিযুক্ত সমস্ত প্রসাদ আপনারা প্রসন্ন হয়ে গ্রহণ করে আমার উপর কৃপা করুন।

✅এবার শিবলিঙ্গ অথবা শিবপার্বতীবিগ্রহকে পঞ্চামৃত দ্বারা স্নান করাবেন।

🔥গরুর কাচা দুধ দ্বারা স্নান করান নিম্নোক্ত মন্ত্র পাঠ করতে করতে  

☘️মন্ত্র -
গোক্ষীরস্নানং দেবেশ গোক্ষীরেণ ময়া কৃতম্ ।
স্নপনং দেবদেবেশ গৃহাণ পরমেশ্বর ॥

🔥দ‌ই দ্বারা স্নান করান নিম্নোক্ত মন্ত্র পাঠ করতে করতে  

☘️মন্ত্র -
দধ্না চৈব ময়া দেব স্নপনং ক্রিয়তেহধুনা ।
গৃহাণ চ ময়া দত্তং সুপ্রসন্নো ভবাদ্য বৈ ॥

🔥ঘি দ্বারা স্নান করান নিম্নোক্ত মন্ত্র পাঠ করতে করতে  

☘️মন্ত্র -
সর্পিষা চ ময়া দেব স্নপনং ক্রিয়তেহধুনা ।
গৃহাণ শ্রদ্ধয়া দত্তং তব প্রীত্যর্থমেব চ ॥

🔥মধু দ্বারা স্নান করান নিম্নোক্ত মন্ত্র পাঠ করতে করতে  

☘️মন্ত্র -
ইদং মধু ময়া দত্তং তব প্রীত্যর্থমেব চ ।
গৃহাণ ত্বং হি দেবেশ মম শান্তিপ্রদো ভব ॥ 

🔥শর্করা(আখের রস/চিনিজল) দ্বারা স্নান করান নিম্নোক্ত মন্ত্র পাঠ করতে করতে  

☘️মন্ত্র -
সিতয়া দেবদেবেশ স্নপনং ক্রিয়তেহধুনা ।
গৃহাণ শ্রদ্ধয়া দত্তাং সুপ্রসন্নো ভব প্রভো ॥

[এবং  পঞ্চামৃতেনৈব স্নপনীয়ো বৃষ-ধ্বজঃ ।
পশ্চাদর্ঘ্যং প্রদাতব্যং তাম্রপাত্রেণ ধীমতা ।
অনেনৈব চ মন্ত্রেণ উমাকান্তস্য তুষ্টয়ে ॥]

✅ হাতে এক ঘটি গঙ্গা জল নিয়ে সমগ্র গঙ্গাজল দ্বারা শিবলিঙ্গ বা শিবপার্বতীর বিগ্রহে অভিষেক করার উদ্দেশ্যে ঢেলে দিন, এই মন্ত্র পাঠ করতে করতে – 
ॐ ত্র্যয়ম্বকং যজামহে সুগন্ধিং পুষ্টিবর্ধনম্ ।
উর্বারুকমিব বন্ধনান মৃত্যোর্মুক্ষীয় মামৃতাৎ ॥ 
ॐ নমঃ শিবায় ॐ নমঃ শিবায়ৈ ॥

✅এবার অর্ঘ্য নিবেদন - এর জন্য তামার পাত্রে অথবা হাতে দূর্বা আতপচাল নিয়ে এই মন্ত্র উচ্চারণ করে শিবলিঙ্গে বা শিবপার্বতী বিগ্রহে প্রদান করুন –

অর্ঘ্যোঽসি ত্বমুমাকান্ত অর্ঘেণানেন বৈ প্রভো ।
গৃহাণ ত্বং ময়া দত্তং প্রসন্নো ভব শঙ্কর ॥ 

কিছু ফুল বেলপাতা হাতে নিয়ে শ্রীগণেশ কে সমর্পণ করুন এই মন্ত্র পাঠ করে -  ॐ গাং গণেশায় নমঃ ॥

কিছু ফুল বেলপাতা হাতে নিয়ে শ্রীকার্তিকেয় কে সমর্পণ করুন এই মন্ত্র পাঠ করে -  ॐ ষণ্মুখায় নমঃ ॥


✅এবার পঞ্চোপচার [ধূপ, দীপ, গন্ধ(চন্দন), ফুল, নৈবেদ্য] দিয়ে পূজা করুন।

✅এবার দীপ নিবেদন - এর জন্য হাতে দীপ তুলে নিয়ে এই মন্ত্র উচ্চারণ করে শিবলিঙ্গে প্রদান করুন –

দীপং হি পরমং শম্ভো ঘৃতপ্রজ্বলিতং ময়া ।
দত্তং গৃহাণ দেবেশ মম জ্ঞানপ্রদো ভব ॥
দীপং বিশিষ্টং পরমং সর্ব্বৌষধিবিজৃম্ভিতম্ ।
গৃহাণ পরমেশান মম শান্ত্যর্থমেব চ ॥ 
দীপাবলিং ময়া দত্তাং গৃহাণ পরমেশ্বর । 


✅এবার চন্দন নিবেদন - এর জন্য হাতে চন্দন নিয়ে এই মন্ত্র উচ্চারণ করে শিবলিঙ্গে প্রদান করুন –

সুগন্ধং চন্দনং দেব ময়া দত্তঞ্চ বৈ প্রভো ।
ভক্ত্যা পরময়া শম্ভো সুগন্ধং কুরু মাং ভব ॥

✅এবার পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন - এর জন্য হাতে কিছু গন্ধপুষ্প ও বেলপাতা নিয়ে এই মন্ত্র উচ্চারণ করে শিবলিঙ্গে প্রদান করুন –

অজ্ঞানাদ্যদি বা জ্ঞানাদ্যদ্যৎ পূজাদিকং ময়া ।
কৃতং তদস্তু সফলং কৃপয়া তব শঙ্কর ॥
তাবকস্ত্বদ্ গতপ্রাণস্ত্বচ্চিত্তোঽহং সদা মৃড ।
ইতি বিজ্ঞায় গৌরীশ ভূতনাথ প্রসীদ মে ॥
ভূমৌ স্খলিতপাদানাং ভূমিরেবাবলম্বনম্ ।
ত্বয়ি জাতাপরাধানাং ত্বমেব শরণং প্রভাে ॥

এষ সচন্দনপুষ্পবিল্বপত্রাঞ্জলি সমর্পয়ামি ।

ॐ শ্রীসাম্বসদাশিবায় নমঃ ॥


✅অতঃপর

মাতা পার্বতী সহিত পরমেশ্বর শিবের ধ্যান করবেন এই মন্ত্র উচ্চারণ করে –


কৈলাসপীঠাসনমধ্যসংস্থং ভক্তৈঃ সনন্দাদিভির্রচ্যমানম্ ।
ভক্তার্তিদাবানলহাপ্রমেয়ং ধ্যায়েদুমালিঙ্গিতবিশ্বভূষণম্ ॥
ধ্যায়েন্নিত্যং মহেশং রজতগিরিনিভং চারুচন্দ্রাবতংসং রত্নাকল্পোজ্জ্বলাঙ্গং পরশুমৃগবরাভীতিহস্তং প্রসন্নম্ ।
পদ্মাসীনং সমন্তাৎ স্তুতমমরগণৈর্ব্যাঘ্রকৃত্তিং বসানং বিশ্বাদ্যং বিশ্ববীজং নিখিলভয়হরং পঞ্চবক্ত্রং ত্রিনেত্রম ॥

(ধ্যান করার সময় নিচের এই চিত্রটি দেখে কল্পনা করতে পারেন চোখ বন্ধ করে এবং ধ্যানের সময়সীমা আপনার মনের গভীরতার উপর নির্ভরশীল, অন্তত দশমিনিট ধ্যান করুন)



✅ধ্যানের পর এবার ১০৮ বার ষড়াক্ষর মহামন্ত্র জপ করুন(রুদ্রাক্ষমালা অথবা হাতের শৈবমালাতেও জপ করতে পারেন)।

মন্ত্র – ॥ ॐ নমঃ শিবায় ॥

✅জপ এর পর মাতা পার্বতীর উদ্দেশ্যে জপ করুন ষড়াক্ষরী মহামন্ত্র

মন্ত্র- ॥ ॐ নমঃ শিবায়ৈ ॥

✅এবার একটা ফুল হাতে নিয়ে হাত জোড় করে পূজার মধ্যে অজান্তে হওয়া ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন এই মন্ত্র পাঠ করে।

মন্ত্র –

অজ্ঞানাদ্যদি বা জ্ঞানাজ্জপ পূজাদিকং ময়া ।
কৃতং তদস্তু সফলং কৃপয়া তব শঙ্কর ॥

[বাংলাতে সহজ সরল ভাবেও প্রার্থনা করতে পারেন এটি বলে – হে প্রভু শিব শঙ্কর! আমি না জেনে অথবা জেনে বুঝে যে জপ- পূজা ইত্যাদি সৎ কর্ম করেছি, তা যেন আপনার কৃপায় সফল হয়]

✅এবার প্রভু শিবের কাছে শিবভক্তি প্রার্থনা করুন এই মন্ত্র পাঠ করে।

মন্ত্র –

শিবে ভক্তিঃ শিবে ভক্তিঃ শিবে ভক্তির্ভবে ভবে ।
অন্যথা শরনং নাস্তি ত্বমেব শরনং মম ॥


[বাংলাতে সহজ সরল ভাবেও প্রার্থনা করতে পারেন এটি বলে – হে প্রভু সদাশিব ! প্রত্যেক জন্মে আমার শিবে ভক্তি হোক, শিবে ভক্তি হোক, শিবে ভক্তি হোক। শিব ব্যতীত অন্য কেউ আমাকে শরণ দেবার নেই। হে পার্বতীপতি আপনিই আমার শরণদাতা]

♦️প্রদোষ স্তোত্র পাঠ

জয় দেব জগন্নাথ জয় শঙ্কর শাশ্বত ।
জয় সর্বসুরাধ্যক্ষ জয় সর্বসুরার্চিত ॥
জয় সর্বগুনাতীত জয় সর্ব্ববরপ্রদ ।
জয় নিত্য নিরাধার জয় বিশ্বম্ভরাব্যয় ॥
জয় বিশ্বৈকবন্দ্যেশ জয় নগেন্দ্র ভূষণ ।
জয় গৌরীপতে শম্ভো জয় চন্দার্ধশেখর ॥
জয় কোট্যর্কসঙ্কাশ জয়ানন্তগুণাশ্রয় ।
জয় ভদ্র বিরূপাক্ষ জয়াচিন্ত্য নিরঞ্জন ॥
জয় নাথ কৃপাসিন্ধো জয় ভক্তার্তিভঞ্জন ।
জয় দুস্তরসংসারসাগরত্তারণ প্রভো ॥
প্রসিদ মে মহাদেব সংসারার্তস্য খিদ্যতঃ ।
সর্বপাপক্ষয়ম্ কৃত্ত্বা রক্ষ মাং পরমেশ্বর ॥
মহাদারিদ্র্যমগ্নাস্য মহাপাপহতস্য চ ।
মহাশোকনিবিষ্টস্য মহারোগাতুরস্য চ ॥
ঋণভারপরীতস্য দহ্যমানস্য কর্মভিঃ ।
গ্রহৈঃ প্রপীড্যমানস্য প্রসীদ মম শঙ্করঃ ॥
দরিদ্রঃ প্রার্থয়েদ্দেবং প্রদোষে গিরিজাপতিম্ ।
অর্থাঢ্যো বাহথ রাজা বা প্রার্থয়েদ্দেবমীশ্বরম্ ॥
দীর্ঘমায়ুঃ সদারোগ্যং কোশবৃদ্ধির্বলোন্নতিঃ ।
মমাস্তু নিত্যমানন্দঃ প্রসাদাত্তব শঙ্কর ॥
শত্রবঃ সংক্ষয়ং যান্তু প্রসীদন্তু মম প্রজাঃ ।
নশ্যন্তু দস্যবো রাস্ট্রে জনাঃ সন্তুঃ নিরাপদঃ ॥
দুর্ভীক্ষমরিসন্তাপাঃ শমং যান্তু মহীতলে ।
সর্বসস্যসমৃদ্ধিশ্চ ভূয়াৎসুখময়া দিশঃ ॥
এবমারাধয়েদ্দেবং পূজান্তে গিরিজাপতিম্ ।
সর্বপাপক্ষয়করী সর্বরোগনিরারণী ।
শিবপূজা ময়াহহখ্যাতা সর্বাভীষ্টফলপ্রদা ॥

॥ ইতি শ্রীস্কান্দেমহাপুরাণে প্রদোষস্তোত্রং সম্পূর্ণং ॥


🔴 বিসর্জন/ পূজার সমাপ্তীকরণ – 

প্রদোষস্তোত্র দ্বারা গিরিজাপতি প্রভু শিবের নিকট প্রার্থনা করার পর 
এবার ধ্বনি দিন জোরে জোরে -

এক অদ্বিতীয় সগুণ নির্গুণ পরমেশ্বর 
হর শঙ্কর  কি........ জয়......

ব্রহ্মাবিষ্ণুসেবিত শক্তিপতি মহেশ্বর
প্রভু সদাশিব কি...... জয়......

বেদ বেদান্ত বেদাঙ্গ ইতিহাস পুরাণ 
আগম ধর্মশাস্ত্রবর্ণিত মহাদেব কি...... জয়.....

সন্তানপ্রতিপালনকারী সনাতন ধর্ম
প্রকাশকারী রুদ্রদেব কি...... জয়.......

ভক্তবৎসল আশ্রয়দাতা পরমপিতা
আশুতোষ ত্রিপুরারী কি....... জয়.......

শৈব হো মন.. শৈব হো তন.. শৈব হো জীবন..
শৈব হে ধর্ম.. শৈব হে কর্ম.. শৈব হে বর্ম...
শিব শিব শিব হর হর শঙ্কর হর নীলকন্ঠ মহাদেব
ॐ শান্তি শান্তি শান্তি
ॐ নমঃ পার্বতীপতয়ে হর হর মহাদেব ॥

🛑এবার নিজের হাতে জল নিয়ে নিম্নলিখিত মন্ত্রটি পাঠ করুন–
স্বস্থানং গচ্ছ দেবেশ পরিবারযুতঃ প্রভো ।
পূজাকালে পুর্ননাথ ত্বয়াহহগন্তব্যমাদরাৎ ॥

এরপর সেই জল পূজাস্থলে ও নিজ মস্তকে(অনান্যদের মস্তকেও) ছিটিঁয়ে পূজা সমাপ্ত করুন ।
(শিবমহাপুরাণোক্ত)

॥ সমাপ্ত ॥

মন্তব্যসমূহ

  1. শৈবধর্ম প্রচার হোক সমগ্র বিশ্বে 🙏 দক্ষিণামূর্তয়ে নমঃ ☘️

    উত্তরমুছুন
  2. এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।

    উত্তরমুছুন
  3. অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাদের এই পোস্ট টা নিয়ে আসার জন্য প্রদোষ ব্রত অনেক দিন যাবৎ করছি কিন্তু সঠিক পদ্ধতির জ্ঞান আমার ছিল না, এই পোস্ট পেয়ে সত্যি খুবই উপকৃত হলাম।।। হর হর মহাদেব

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমবার ব্রত বিধি ও মাহাত্ম্য (শৈবপুরাণোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ১ (মূলপূজা)

বৃহৎ শিবার্চন বিধি পুস্তক (শৈব আগমোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ২ (প্রহরপূজা)

ত্রিপু্রোৎসব দীপপ্রজ্জ্বলন রীতি – স্কন্দমহাপুরাণোক্ত