বেদমন্ত্রের নামে ‘নকল মন্ত্র’ লিখে প্রচারকারী দয়ানন্দ সরস্বতীর কালো পর্দাফাঁস

 


ISSGT -এর পক্ষ থেকে অসনাতনী আর্যমসমাজী দের প্রচার করা নকল বেদ মন্ত্রের পর্দা ফাঁস করা হয়েছে এই আর্টিকেলে। আর্যসমাজীদের কাছে এই পোষ্টের লিঙ্ক শেয়ার করে উত্তর চাইবেন। কেননা এরা মনে করে যে আর্যসমাজ ই হল একমাত্র বৈদিক বেদজ্ঞ। আর বাকিরা সব পথভ্রষ্ট। আর এই অহংকারের বশবর্তী হয়ে এদের গুরু দয়ানন্দ সরস্বতী থেকে শুরু করে সকল আর্যসমাজী পুরাণ শাস্ত্রকে কাল্পনিক বলে অশ্লীল ভাবে সর্বদা গালিগালাজ করে এসেছে । তাই আমি এখানে এদের গুরু দয়ানন্দ সরস্বতীর রচিত কাল্পনিক বেদমন্ত্র কে তুলে ধরলাম, যাতে আর্যসমাজীদের আস্ফালন নিবারণ হয় চিরতরে । সকলে ধৈর্য্য সহকারে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়বেন। শুরু করছি পরমেশ্বর শিবের নামে... জয় গুরু শ্রীদক্ষিণামূর্তি.. শৈব গুরুপরম্পরার জয় 🙏


ব্রাহ্মণ গ্রন্থ আর অনেক সংহিতা কে দয়ানন্দ সরস্বতী বেদ বলে স্বীকার করেননি, লিখে দিয়েছেন যে, "ব্রাহ্মণ গ্রন্থ বেদ নয়, বরং সেটি হল পুরাণ"সংহিতার কিছু কিছু শাখা গুলির সম্পর্কে তিনি লিখেছেন যে, "এগুলিকে আমি প্রমাণ বলে মানিনা" । ফলে, তার কাছে চারটে পুস্তক মাত্র রয়ে গেছে , যার মধ্যে সমস্ত মন্ত্র নেই। এই কারণেই দয়ানন্দ সরস্বতী নিজে নিজেই নিজের বানানো বেদের নাম দিয়ে নকল বেদ মন্ত্র বানিয়ে আর্যসমাজীদের এটা বুঝিয়ে বলেন যে, দেখো বাছারা যদি কেউ বলে যে আলোচিত বিষয়ের কোনো বেদ মন্ত্র নেই তাহলে তাদেরকে এই বেদমন্ত্র টা দিয়ে বলবে যে এই হল আমার কথার প্রমাণের যথাযথ প্রামাণিক বেদমন্ত্র ! 

তারপরেও যদি কেউ এটাকে মন্ত্র বলে না মানে তবে তার কথাও মানবে না কোনো মতেই, নচেৎ আমার ভণ্ডামি ফুটে যাবে ।



॥ দয়ানন্দ সরস্বতী রচিত নকল বেদমন্ত্র ১ ॥

দয়ানন্দ সরস্বতীর রচিত ‘অথ পঞ্চমহাযজ্ঞবিধি’ নামক একটি পুস্তক আছে, নীচের ১নং ছবিতে সেই পুস্তকের প্রথম পৃষ্ঠার ছবি দেয়া হল। 

(চিত্র নং ১)


 দয়ানন্দ সরস্বতীর রচিত এই ‘অথ পঞ্চমহাযজ্ঞবিধি’

পুস্তকের ৪নং পৃষ্ঠাতে লিখেছেন যে,  ‘অথেন্দ্রিয়স্পর্শঃ’ , 

এরপর এখানে তিনি এই মন্ত্র লিখেছেন - 

ওম্ বাক্-বাক্, ওম্ প্রাণঃ-প্রাণঃ, ওম্ চক্ষুঃ-চক্ষুঃ, 

 ওম্ শ্রোত্রং-শ্রোত্রং , ওম্ নাভিঃ, ওম্ হৃদয়ং , ওম্ কণ্ঠঃ, ওম্ শির, ওম্ বাহুভ্যাং যশোবলম, ওম্ করতলকরপৃষ্টে ॥

 এই তথাকথিত মন্ত্রের উল্লেখ উক্ত পুস্তকের পৃষ্ঠার ছবি সহ দেয়া হল নীচের ২নং ছবিতে। 

(চিত্র নং ২)


দয়ানন্দ সরস্বতীর দাবীর খণ্ডন :

কৃপা করে আর্য সমাজীরা বলুন এই মন্ত্র কোন বেদের অন্তর্গত ?

কোনো কোনো আর্যসমাজী বলতে পারে যে, যজুর্বেদের মধ্যে ‘বাক নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্র আছে’ তাই বাক-বাক বলাটা বৈদিক।

তাহলে আমি বলবো যে, বেদে চৈতন্য শব্দটা দেখে বৈষ্ণবেরাও চৈতন্যভারতীকে খুঁজে পায়, আপনাদের‌ও সেই অবস্থা হয়েছে। 

আপনাদের গুরু দয়ানন্দ সরস্বতী এই যে তথাকথিত মন্ত্র ব্যবহার করেছেন, সেটি যদি বেদের না হয় তবে তা গ্রহণ কেন করছেন আপনারা? তাহলে তো আপনারা আর বৈদিক থাকছেন না। তাই না ?

তাহলে এত বেদ ছাড়া কিছুই মানবো না, এমন বলে চ্যাচামেচি করেন কেন ?

কোন এক আর্য সমাজী বলবে, এটি গৃহ্যসূত্রের হবে হয়তো ।

তাই যদি হয় তাহলে হোক, কিন্তু গৃহ্যসূত্রের কথা আপনারা কেন মানতে যাচ্ছেন ?

এটা কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের কথা হতে পারে ?

আপনারা নিজেরাই তো সনাতন ধর্মের গৃহ্যসূত্র কে বেদ বিরুদ্ধ বলে বেড়ান, আবার এখন নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য গৃহ্যসূত্রের সহযোগিতা নিচ্ছেন, দুদিন পর তো বাইবেল, আসমানী কিতাব কেও প্রামাণিক মানা শুরু করবেন নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে। সুতরাং আপনারা আর্যসমাজীরা যে গিরগিটি ভণ্ড, তা এখানেই পরিষ্কার  ।

 এই দয়ানন্দের দেখানো তথাকথিত মন্ত্র তো সমগ্র গৃহ্যসূত্রতেও কোথাও নেই।

আর্যসমাজী দের বোকা বানানোর জন্য দয়ানন্দ সরস্বতী এসব লিখেছে। আর এই বোকা আর্যসমাজীরাও তাদের তথাকথিত মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর এই কাল্পনিক মন্ত্র প্রচার করে চলেছে আর সনাতনী দের বোকা বানাচ্ছে। 

এখন কোনো কোনৌ আর্যসমাজী বলবে, দয়ানন্দ সরস্বতী কি কোথাও এটিকে বেদমন্ত্র বলেছেন ? তাদেরকে বলি, আপনারা বেদের বাইরের কিছু মানেন ?

 মানেন না.. তাছাড়া এটা তো কোনো শাস্ত্রের‌ মধ্যেও পাওয়া যায় না, বেদের অনুকূল বলে পিঠ বাঁচাবেন ?

তাও হবে না, কারণ তাহলে সবাই আপনাদের মতো নূতন নূতন মন্ত্র বানিয়ে বেদের নামে প্রচার করে বলবে এটা বেদের অনুকূল। তখন মানতে পারবেন তো ? পারবেন না...

পুরাণকে কাল্পনিক বলে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন আপনারা, অথচ দয়ানন্দ সরস্বতী কাল্পনিক মন্ত্র লিখলেও আপনারা সাফাই গেয়ে বলবেন এটি বেদের অনুকূল তাই মান্য। তাহলে পৌরাণিকরাও বলবে পুরাণ বেদের অনুকূল, তাই পুরাণ মান্য, এটা মানতে হবে আপনাদের, পারবেন? পারবেন না...

 তাহলে এই তথাকথিত মন্ত্রটা কে কাল্পনিক ছাড়া আর কি বলবেন আপনারা ?

দয়ানন্দ সরস্বতী তো উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের উপরের দিকে ও নীচের দিকে বেদ থেকে মন্ত্র তুলে তারপাশে বেদের তথ্যসূত্র দিয়েছে, কিন্তু এই তথাকথিত মন্ত্রের পাশে কেন তথ্যসূত্র দেননি ? 

তার কারণ হল, এটি তার মনগড়া নকল মন্ত্র। 



আরো দেখুন, 


॥ দয়ানন্দ সরস্বতী রচিত নকল বেদমন্ত্র ২ ॥

এরপর ওই পুস্তকেই দয়ানন্দ সরস্বতী আরো এক নতুন নকল বেদ মন্ত্র লেখেন, ‘অথেশ্বরপ্রার্থনাপূর্বকমার্জ্জনমন্ত্রাঃ’

দেখুন 👇

ওম্ ভূঃ পুনাতু শিরসি, ওম্ ভুবঃ পুনাতু নেত্রয়োঃ, ওম্ স্বঃ পুনাতু কণ্ঠে, ওম্ মহঃ পুনাতু হৃদয়ে, ওম্ জনঃ পুনাতু নাভ্যাম্ , ওম্ তপঃ পুনাতু পাদয়োঃ, ওম্ সত্যং পুনাতু পুনঃ শিরসি , ওম্ খং ব্রহ্ম পুনাতু সর্বত্র ॥

এই তথাকথিত মন্ত্রের উল্লেখ উক্ত পুস্তকের পৃষ্ঠার ছবি সহ দেয়া হল নীচের ৩নং ছবিতে। 

(চিত্র নং ৩)



❌ দয়ানন্দ সরস্বতীর দাবীর খণ্ডন :

আর্যসমাজীরা ! আপনারা বলুন, এই মন্ত্র কোন বেদে আছে ? 

দয়ানন্দ সরস্বতী তো বলতেন যে আমার ধর্ম পুস্তক হল বেদ, সেই বেদকেই আমি মানি। 

তাহলে এবার দয়ানন্দ সরস্বতী এই নকল জাল মন্ত্র বেদের নামে কেন লিখেছেন ? 


॥ দয়ানন্দ সরস্বতী রচিত নকল বেদমন্ত্র ৩ ॥


বাংলা সত্যার্থ প্রকাশের চতুর্থ সমুল্লাসের মধ্যে ৬৯নং পৃষ্ঠায় দয়ানন্দ সরস্বতী দেবতর্পন সম্পর্কে লিখেছেন,

ওম্ ব্রহ্মাদয়ো দেবাস্তৃপ্যন্তাম্ ।

ব্রহ্মাদিদেবপত্ন্যস্তৃপ্যন্তাম্ ।

ব্রহ্মাদিদেবসুতাস্তৃপ্যন্তাম্ ।

ব্রহ্মাদি দেবগণাস্তৃপ্যন্তাম্ ॥


❌ দয়ানন্দ সরস্বতীর দাবীর খণ্ডন :

এই চারটি মন্ত্র কোন বেদের মধ্যে আছে ? 

কোন আর্যসমাজী কি আমাদেরকে সেটা বলার কৃপা করবেন ?

আরে কৃপা তো তখন করতে পারবেন যখন বেদের মধ্যে এই মন্ত্র উপলব্ধ থাকবে, 

এই মন্ত্র তো সবে তাজা তাজা তৈরি হয়েছে মাত্র। 

নতুন তৈরি হ‌ওয়া মন্ত্র বেদের মধ্যে থাকবে কেমন করে ?

মনে হয়, ঈশ্বর হয়তো বেদ বানিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু এই মন্ত্রগুলো বানাতে ভুলে গিয়েছিলেন, তাই আর্যসমাজীদের মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী মন্ত্রগুলি বানিয়ে দিয়েছেন তাজা তাজা !!

এবার বলুন ঈশ্বর বড় নাকি দয়ানন্দ সরস্বতী বড় ?


💥 আর্যসমাজীদের আরো সূক্ষ্ম ভণ্ডামী দেখুন :

১)  নীচের ৪নং ছবিতে দেখুন, এটি হল দিল্লির আর্য সাহিত্য প্রচার ট্রাস্ট থেকে প্রকাশিত হিন্দি সংস্করণের সত্যার্থ প্রকাশের চতুর্থ সমুল্লাসের উপরোক্ত তথাকথিত দেবতর্পণ মন্ত্রের পৃষ্ঠার ছবি 👇

(চিত্র নং ৪)

♨️ লক্ষ্য করুন : হিন্দি সত্যার্থ প্রকাশের উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের শেষে শুধুমাত্র - ‘ ইতি দেবতর্পণম্ ’ লেখা রয়েছে। আবার তার‌ই সাথে ঐ তথাকথিত মন্ত্রের নীচে শতপথ ব্রাহ্মণের নামে একটি মন্ত্র‌ও যুক্ত করেছে আর্যসমাজীরা ।


২) এবার ৫নং ছবিতে দেখুন, এটি হল সত্যার্থ প্রকাশের বাংলা সংস্করণের চতুর্থ সমুল্লাসের উক্ত তথাকথিত দেবতর্পণ মন্ত্রের পৃষ্ঠার ছবি 👇

(চিত্র নং ৫)

♨️ লক্ষ্য করুন : বাংলা সত্যার্থ প্রকাশের চতুর্থ সমুল্লাসের উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের শেষে লেখা হয়েছে ‘পারস্র ও আশ্বলায়ন গৃহ্যসূত্র’ - তারপর লেখা হয়েছে ‘ ইতি দেবতর্পণম্’ ।


ভণ্ডামির সমীক্ষা - পাঠকবৃন্দ ! আর্যসমাজীদের অবস্থা দেখুন, এই ম্লেচ্ছ আর্যসমাজীরা আমাদের কাছে আগে পরিষ্কার করে বলুক, কোন সংস্করণের সত্যার্থ প্রকাশ টি প্রকৃত সত্যার্থ প্রকাশ  ?

হিন্দি সংস্করণের সত্যার্থ প্রকাশের উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের শেষে শুধুমাত্র ‘ ইতি দেবতর্পণম্ ’ লেখা রয়েছে। কিন্তু বাংলা সংস্করণের সত্যার্থ প্রকাশের উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের শেষে ‘পারস্র ও আশ্বলায়ন গৃহ্যসূত্র’ - লেখা হয়েছে । 

আর্যসমাজীদের কাছে আমাদের প্রশ্ন র‌ইল, দয়ানন্দ সরস্বতীর লেখার উপরে আপনারা পাকামো করলেন কেন ? 

আপনারা কি আপনাদের তথাকথিত মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর চেয়েও বেশি শাস্ত্রজ্ঞ হয়ে গিয়েছেন ? নাকি  এখানে নতুন একটা রেফারেন্স যুক্ত করার পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে ?

আপনারা কি দয়ানন্দ সরস্বতীর ভণ্ডামীর কথা জেনে গিয়েছিলেন ?

 সেই কারণেই কি পিঠ বাঁচানোর জন্য এই বাংলা সত্যার্থ প্রকাশের উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের রেফারেন্স হিসেবে ‘পারস্র ও আশ্বলায়ন গৃহ্যসূত্র’ - লিখে দিয়েছেন ? 

কিন্তু কিছুক্ষণের জন্য যদি ধরেও নিই যে উক্ত তথাকথিত মন্ত্র টি  ‘পারস্র ও আশ্বলায়ন গৃহ্যসূত্র’ তে আছে, তাহলে আমাদেরকে এই আর্যসমাজীরা বলুক, তারা হঠাৎ করে গৃহ্যসূত্র কে কেন প্রামাণিক মেনে বসলো ? আর্যসমাজীরা তো গৃহ্যসূত্রকে মান্যতা দেয় না, তাহলে এক্ষেত্রে গৃহ্যসূত্রের নাম দিয়ে কেন রেফারেন্স ব্যবহার করছে আর্যসমাজীরা ?

এটা সম্পূর্ণ দ্বিচারিতা.... 

তারপরেও ধরলাম না হয় সত্যার্থ প্রকাশ অনুসারে এই তথাকথিত মন্ত্র গৃহসূত্রে আছে, কিন্তু সেটা গৃহ্যসূত্রের কোথায় আছে ? সেটা কে বলবে ? আপনাদের তথাকথিত মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীই দেখাতে পারেননি, আর আপনারা তো তার অন্ধ চ্যালা ।

আবার হিন্দি সংস্করণের সত্যার্থ প্রকাশে আর্যমসমাজী রা তার‌ই সাথে ঐ তথাকথিত মন্ত্রের নীচে শতপথ ব্রাহ্মণের নামে একটি মন্ত্র‌ও যুক্ত করেছে । যাতে কোনো মতে পিঠ বাঁচানো যায়, তাই কাল্পনিক মন্ত্রের সাথে শতপথ ব্রাহ্মণের নাম যুক্ত করে নিজেদের খাঁটি বেদজ্ঞ প্রমাণ করার ব্যর্থ  প্রয়াস করেছে মাত্র।


পাঠকবৃন্দ দেখুন! আর্যসমাজীরা কত বড় ভণ্ড আর ধূর্ত । 

এক এক সত্যার্থ প্রকাশে এক এক রকম লিখে রেখেছে, এরা দয়ানন্দ সরস্বতীর ভুল গুলো চেপে দেয়ার জন্য দয়ানন্দ সরস্বতীর রচিত সত্যার্থ প্রকাশের মধ্যে থাকা দয়ানন্দ সরস্বতীর বক্তব্যগুলিকেও বদলে ফেলছে, যাতে তাদের দয়ানন্দের ভণ্ডামী কেউ ধরতে না পারে । এদের দয়ানন্দ সরস্বতী ছিল নকল মন্ত্রের রচয়িতা। অথচ এরাই নিজেদের বেদজ্ঞ বলে দাবি করে, হাস্যকর বিষয়।



॥ দয়ানন্দ সরস্বতী রচিত নকল বেদমন্ত্র ৪ ॥


সত্যার্থ প্রকাশ পৃষ্ঠা ৬৯ তে ‘ঋষি তর্পণ’ লিখতে গিয়ে যে চার মন্ত্র দয়ানন্দ লিখেছেন 👇

ওম্ মরীচ্যাদয় ঋষয়স্তৃপ্যন্তাম্ ।

মরীচ্যাদ্যৃষিপত্ন্যস্তৃপ্যন্তাম্ ।

মরীচ্যাদ্যৃষিসুতাস্তৃপ্যন্তাম্ ।

মরীচ্যাদ্যৃষিগণাস্তৃপ্যন্তাম্ ॥


❌ দয়ানন্দ সরস্বতীর দাবীর খণ্ডন :

দয়ানন্দ সরস্বতীর এই মন্ত্র কোন বেদের মধ্যে রয়েছে ?

সত্য তো এটাই যে “মুখং কিমস্যাসীৎ” -এই মন্ত্রের ভাষ্যে যে দয়ানন্দ সরস্বতী ঈশ্বরকে মূর্খ বলে লিখেছে, সেই দয়ানন্দ ই নূতন নূতন মন্ত্র বানিয়ে এটিই সিদ্ধ করে দিচ্ছেন যে ঈশ্বর তার কাছে মূর্খ আর আমি দয়ানন্দ সরস্বতী হলাম বড় বিদ্বান ।

💥 আর্যসমাজীদের আরো সূক্ষ্ম ভণ্ডামী দেখুন :

১) নীচের ৬নং ছবিতে দেখুন, এটি হল দিল্লির আর্য সাহিত্য প্রচার ট্রাস্ট থেকে প্রকাশিত হিন্দি সংস্করণের সত্যার্থ প্রকাশের চতুর্থ সমুল্লাসের উপরোক্ত তথাকথিত ঋষিতর্পণ মন্ত্রের পৃষ্ঠার ছবি 👇

(চিত্র নং ৬)

♨️ লক্ষ্য করুন : হিন্দি সত্যার্থ প্রকাশের উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের শেষে শুধুমাত্র - ‘ ইতি ঋষিতর্পণম্ ’ লেখা রয়েছে।

২) এবার ৭নং ছবিতে দেখুন, এটি হল সত্যার্থ প্রকাশের বাংলা সংস্করণের চতুর্থ সমুল্লাসের উক্ত তথাকথিত ঋষিতর্পণ মন্ত্রের পৃষ্ঠার ছবি 👇

(চিত্র নং ৭)

♨️ লক্ষ্য করুন : বাংলা সত্যার্থ প্রকাশের চতুর্থ সমুল্লাসের উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের শেষে এখানেও লেখা হয়েছে ‘পারস্র ও আশ্বলায়ন গৃহ্যসূত্র’ - তারপর লেখা হয়েছে ‘ ইতি ঋষিতর্পণম্’ ।


🚫 ভণ্ডামির সমীক্ষা - পাঠকবৃন্দ ! আর্যসমাজীদের অবস্থা দেখুন, 

হিন্দি সংস্করণের সত্যার্থ প্রকাশের উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের শেষে শুধুমাত্র ‘ ইতি ঋষিতর্পণম্ ’ লেখা রয়েছে। কিন্তু বাংলা সংস্করণের সত্যার্থ প্রকাশের উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের শেষে ‘পারস্র ও আশ্বলায়ন গৃহ্যসূত্র’ - লেখা হয়েছে । 

আর্যসমাজীরা সনাতনী নয়, আর সেটা বারংবার এদের ধূর্ততার প্রমাণ দেখেই দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে গেছে।  দয়ানন্দ সরস্বতী ও তার চ্যালা আর্যসমাজীরা সনাতনধর্মের প্রাচীন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির মূলকে উপড়ে ফেলার জন্য বেদের নামে নিজস্ব মতবাদ কে প্রতিষ্ঠা করতে উদ্যত হয়েছে। এমনকি নতুন নতুন নকল বেদমন্ত্র বানিয়ে প্রচার করে চলেছে, আর সাধারণ মানুষ এদের কবলে পড়ে অর্ধ নাস্তিকে পরিনত হচ্ছে । 


॥ দয়ানন্দ সরস্বতী রচিত নকল বেদমন্ত্র ৫ ॥


 সত্যার্থ প্রকাশের ৬৯নং পৃষ্ঠাতে  ‘ পিতৃতর্পণ’ লিখতে গিয়ে দয়ানন্দ সরস্বতী যে মন্ত্র লেখেন,

সেটি হল 👇

ওম্ সোমসদঃ পিতরস্তৃপ্যন্তাম্ ।

অগ্নিষ্বাত্তাঃ পিতরস্তৃপ্যন্তাম্ ।

বর্হিষদঃ পিতরস্তৃপ্যন্তাম্ ।

সোমপাঃ পিতরস্তৃপ্যন্তাম্ ।

হবির্ভুজঃ পিতরস্তৃপ্যন্তাম্ ।

অজ্যপাঃ পিতরস্তৃপ্যন্তাম্ ।

সুকালিনঃ নমঃ পিতরস্তৃপ্যন্তাম্ ।

যমাদিভ্যো নমঃ যমাদিভ্যোর্পয়ামি ।

পিত্রে স্বধা নমঃ পিতরং তর্পয়ামি ।

পিতামহায় স্বধা নমঃ পিতামহং তর্পয়ামি।

প্রপিতামহায় স্বধা নমঃ প্রপিতামহং তর্পয়ামি।

মাত্রে স্বধা নমো মাতরং তর্পয়ামি । 

পিতামহৈ স্বধা নমঃ পিতামহীং তপয়ামি। 

প্রপিতামহ্যৈ স্বধা নমঃ প্রপিতামহীং তর্পয়ামি।

স্বপত্ন্যৈ স্বধা নমঃ স্বপত্নীং তর্পয়ামি।

সম্বন্ধিভ্যঃ স্বধা নমঃ সম্বন্ধিনস্তর্ণয়ামি।

সগোত্রেভ্যঃ স্বধা নমঃ সগোত্রান্তপয়ামি ॥


❌ দয়ানন্দ সরস্বতীর দাবীর খণ্ডন :

এই মন্ত্র কোন বেদের মধ্যে আছে ? 

ও দয়ার চ্যালারা একটু বলে যান... সারাদিন তো বেদ বেদ করেন, বেদ ছাড়া আর কিছু মানবো না.. এই সব বলে বেড়ান... তা এই মন্ত্র বেদের কোথায় আছে ?

💥 আর্যসমাজীদের আরো সূক্ষ্ম ভণ্ডামী দেখুন :

১) নীচের ৮নং ছবিতে দেখুন, এটি হল দিল্লির আর্য সাহিত্য প্রচার ট্রাস্ট থেকে প্রকাশিত হিন্দি সংস্করণের সত্যার্থ প্রকাশের চতুর্থ সমুল্লাসের উপরোক্ত তথাকথিত পিতৃতর্পণ মন্ত্রের ৮৬ ও ৮৭নং পৃষ্ঠার ছবি 👇

(চিত্র নং ৮)

♨️ লক্ষ্য করুন : হিন্দি সত্যার্থ প্রকাশের উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের শেষে শুধুমাত্র - ‘ ইতি পিতৃতর্পণম্ ’ লেখা রয়েছে। অর্থাৎ দয়ানন্দ সরস্বতী এটিকে পিতৃতর্পণের বেদমন্ত্র বলেই চালাতেন ।

২) এবার ৯নং ছবিতে দেখুন, এটি হল সত্যার্থ প্রকাশের বাংলা সংস্করণের চতুর্থ সমুল্লাসের উক্ত তথাকথিত পিতৃতর্পণ মন্ত্রের পৃষ্ঠার ছবি 👇

(চিত্র নং ৯)

♨️ লক্ষ্য করুন : বাংলা সত্যার্থ প্রকাশের চতুর্থ সমুল্লাসের উক্ত তথাকথিত পিতৃতর্পণ মন্ত্রের শেষে এখানে লেখা হয়েছে ‘ মনু০ | পারাশর স্মৃতি ’ - তারপর লেখা হয়েছে ‘ ইতি পিতৃতর্পণম্’ ।


🚫 ভণ্ডামির সমীক্ষা - পাঠকবৃন্দ ! দেখুন আর্যসমাজীদের অজ্ঞতা, 

হিন্দি সংস্করণের সত্যার্থ প্রকাশের উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের শেষে শুধুমাত্র ‘ ইতি পিতৃতর্পণম্ ’ লেখা রয়েছে। কিন্তু বাংলা সংস্করণের সত্যার্থ প্রকাশের উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের শেষে ‘ মনু০ | পারাশর স্মৃতি ’ - লেখা হয়েছে । 

মূর্খতার‌ও একটা সীমারেখা থাকে, আর্যসমাজীরা সেই মূর্খতার সীমান্তকেও অতিক্রম করে গিয়েছে। 

হিন্দি সংস্করণের সত্যার্থ প্রকাশে তথাকথিত পিতৃতর্পণের মন্ত্রের কোন রেফারেন্স নেই, হিন্দিভাষী আর্যসমাজীরা এই তথাকথিত পিতৃতর্পণ মন্ত্রটিকে বেদ মন্ত্র বলে প্রচার করে, কিন্তু বাংলাভাষী আর্য সমাজিরা এই তথাকথিত পিতৃতর্পনের শ্লোকটিকে মনুসংহিতা ও পরাশর সংহিতার খিচুড়ি রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করে প্রচার করছে,

হিন্দি আর্যসমাজীদের কাছে প্রশ্ন র‌ইল, আপনারা প্রকৃত আর্যসমাজী নাকি বাংলার এরা প্রকৃত আর্যসমাজী ?

আপনারা নিজেরা আগে ঠিক করুন আপনাদের মধ্যে থাকা কোন সংস্করণের সত্যার্থপ্রকাশ আসল ? 

বাংলাভাষী আর্য সমাজীদের কাছে আমাদের প্রশ্ন, আপনারা কি দয়ানন্দ সরস্বতীর বাবা ? আপনারা যাকে মহর্ষি বলে আহ্লাদে আটখানা হন, সেই তথাকথিত মহর্ষির লেখা সত্যার্থ প্রকাশেও পাকামী করেছেন, অর্থাৎ আপনাদের তথাকথিত মহর্ষির জ্ঞানের থেকেও আপনাদের জ্ঞান ঢের বেশি, এমনটাই বোঝাতে চাইছেন আপনারা ।

সত্যিই কি তাই ? আপনারা জ্ঞানী ?

আপনাদের জ্ঞানের দৃষ্টান্ত তো দেখতেই পাচ্ছি, তথাকথিত মন্ত্রের রেফারেন্স দিতে গিয়ে লিখেছেন  ‘ মনু০ | পারাশর স্মৃতি ’ । 

আচ্ছা আপনাদের মাথায় কি বিষ্ঠার পোকা বাস করে ? 

পরাশর সংহিতার - পরাশর শব্দের বানান টাও আপনারা লিখতে জানেন না, লিখেছেন - পারাশর 😂

যাই হোক এবার আসি আপনাদের জগাখিচুড়ী রেফারেন্সের বিষয়ে, তথাকথিত মন্ত্রের শেষে রেফারেন্স দিতে গিয়ে লিখেছেন যে, ‘ মনু০ | পারাশর স্মৃতি ’ । 

 আচ্ছা পরিষ্কার করে একটা কথা বলুন তো, আপনাদের তথাকথিত মন্ত্রটি মনু সংহিতার মধ্যে আছে ? নাকি পরাশর সংহিতার মধ্যে আছে ?

রেফারেন্স কিভাবে দিতে হয় সেটাও তো শেখেননি আপনারা, কপোলকল্পিত শ্লোক লিখে সেটিকে বেদমন্ত্র বলে দয়ানন্দ সরস্বতী প্রচার করেছে, আর আপনারা সেই ভণ্ডামীকে চেপে দেয়ার জন্য মনু সংহিতা ও পরাশর সংহিতার দোহাই দিয়েছেন, অথচ রেফারেন্স দেবার পদ্ধতিও জানেননা, আর না জানেন বানান লিখতে, মন্ত্রের শেষে মনু ও পারাশর স্মৃতির নাম টেনে জগাখিচুড়ী রেফারেন্স ব্যবহার করে নিজেদের অজ্ঞ প্রমাণ করে দিলেন, এই কি না আপনারা একমাত্র বেদজ্ঞ ? আপনাদের মতো তথাকথিত বেদজ্ঞদের কি না শব্দের বানান ভুল?  

কি লজ্জা... কি লজ্জা.... ছিঃ ছিঃ ছিঃ

আচ্ছা যদি কিছুক্ষণের জন্য ধরি এটা মনু সংহিতার মধ্যে আছে, তাহলে বলুন মনুসংহিতার কোথায় এই পিতৃতর্পণের শ্লোক আছে ? 

অথবা

যদি ধরি এটি পরাশর সংহিতার মধ্যে আছে, তাহলে বলুন পরাশর সংহিতার কোথায় এই পিতৃতর্পণের শ্লোক আছে ? 

নাকি ‘পারাশর স্মৃতি’ নামক উদ্ভট পুস্তক আপনাদের আর্যসমাজীদের রচিত নূতন কোনো স্মৃতিশাস্ত্র ? 😂


অথচ এই পিতৃতর্পণ নিয়ে ডিবেট করতে গিয়ে আর্যসমাজীদের এক তথাকথিত পণ্ডিত স্বামী দর্শনানন্দ জী দাবী করেছিল এই পিতৃতর্পণ মন্ত্র নাকি অথর্ববেদের ১৮নং কাণ্ডে আছে, পরে বলেছে ঋগ্বেদের ৬নং অষ্টকে আছে, এরপর বলেছে এটা সামবেদে আছে, তারপর বলেছে আমার মনে পড়ছে না কিন্তু এটা কোনো একটা বেদে আছেই। মূলত তিনি নিজেই বিভ্রান্ত হয়ে গিয়েছিলেন। কেননা এই তথাকথিত মন্ত্র দয়ানন্দ সরস্বতী লিখেছিলেন তাই সেটা বেদে পাওয়া অসম্ভব।

 ঘটনাটি পণ্ডিতপ্রবর শ্রীকালুরাম শাস্ত্রীজী তার “আর্যসমাজ কি মৌত” নামক একটি পুস্তকে লিখেছিলেন,  চলুন বিস্তারিত দেখে নেয়া যাক👇


॥ দয়ানন্দ সরস্বতী রচিত নকল বেদমন্ত্রের গল্প ॥

একদিন আর্য সমাজ দ্বারা কাশীতে প্রশ্ন উত্তরের সময় এই বিষয়ে প্রসঙ্গ উঠেছিল,  আর্য সমাজের পক্ষ থেকে স্বামী দর্শনানন্দ আর সনাতন ধর্মের পক্ষ থেকে পণ্ডিত কালুরাম শাস্ত্রীজী ছিলেন। কালুরামজী বললেন যে, বেদে পিণ্ডপিতৃযজ্ঞের বিধান আছে। সেই পিণ্ডপিতৃযজ্ঞকেই স্মৃতিশাস্ত্র তথা গৃহ্যসূত্র শাস্ত্র ‘শ্রাদ্ধ’ নামে অভিহিত করেছে । যজুর্বেদের ১৬নং অধ্যায় ও অথর্ববেদের ১৮ কাণ্ড তে শ্রাদ্ধ বিষয়ক বহু মন্ত্র রয়েছে, তাহলে আর্যসমাজ এটির খণ্ডন কিভাবে করতে পারে ?

 এটি শুনে স্বর্গবাসী স্বামী দর্শনানন্দজি বললেন, আপনি এখনো সত্যার্থ প্রকাশ পড়েননি যদি সত্যার্থ প্রকাশ পড়তেন তাহলে এরকম ভাবতেন না।

 সত্যার্থ প্রকাশে স্পষ্টভাবে লেখা আছে যে, শ্রাদ্ধ-তর্পন জীবিত পিতরৌ-র হয় আর আর্যসমাজ বরাবর‌ই এটি মান্য করে ।

  হ্যা... মৃত পিতরৌ-র শ্রাদ্ধ-তর্পন - যা অবৈদিক হবার কারণে আর্যসমাজ সেই মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে করা শ্রাদ্ধ-তর্পনের খণ্ডন করে বা বিরোধ করে ।

 তখন কালুরাম শাস্ত্রীজী বললেন,

  সত্যার্থ প্রকাশের মধ্যে জীবিত পিতরৌ-র তর্পন করবার যে বেদ মন্ত্র আছে সেটা কি আপনি দেখাতে পারবেন ?

স্বামীজী বললেন, হ্যা নিঃসন্দেহে দেখাতে পারবো, এই নিন সত্যার্থ প্রকাশের মধ্যে দেখুন।

 এই বলে সত্যার্থ প্রকাশের উক্ত পৃষ্ঠা খুলে কালুরাম শাস্ত্রীজীর হাতে দিলেন।

কালুরাম শাস্ত্রীজী সেখানে উল্লেখ করা তথাকথিত বেদ মন্ত্রটি পড়লেন। 

পড়বার পর স্বামী দর্শনানন্দ জীকে কালুরাম শাস্ত্রীজী বললেন, এই মন্ত্র তো কাল্পনিক, যদি এটি বেদের মধ্যে থাকে, তবে কোন বেদের কোন অংশে আছে, সেই তথ্যসূত্রটি আমাকে বলুন, আমি এখনি তা খুঁজে বের করবো। 

এই কথা শুনে আর্যসমাজী স্বামী দর্শনানন্দ জী ভীষণ হাসলেন, হেঁসে বললেন, তুমি আমার থেকে বেশি জেনে গেছো মনে হচ্ছে । আমরা পুরাণ কাল্পনিক বলি, আর তোমরা বেদের মধ্যে কাল্পনিকতা বের করছো, শোনো, এই মন্ত্রটি অথর্ববেদের ১৮নং কাণ্ড তে আছে।

এটি শুনে কালুরাম শাস্ত্রীজী বললেন, স্বামীজী ! আমি আপনার কথা শুনে জ্ঞাত হচ্ছি যে আপনি কখনোই অথর্ববেদের ১৮নং কাণ্ড পাঠ করে দেখেননি। আমি দৃঢ় বিশ্বাসের সহিত বলছি অথর্ববেদের ১৮নং কাণ্ড তে এই আপনাদের সত্যার্থ প্রকাশে উল্লেখিত তথাকথিত মন্ত্র উপলব্ধ নেই। আমি প্রায় কুড়ি বারের‌ও বেশি অথর্ববেদের ১৮নং কাণ্ড পাঠ করেছি। সেখানে এই তথাকথিত মন্ত্র থাকলে আমি অবশ্যই দেখতে পেতাম। এটি সম্পূর্ণ ভাবেই কাল্পনিক তথা নকল শ্লোক মাত্র, বেদ মন্ত্রের নামে চালাচ্ছেন আপনারা আর্যসমাজীরা, আপনি অথর্ববেদের ১৮নং কাণ্ড থেকে উক্ত তথাকথিত মন্ত্র দেখাতে পারবেন না। 


 এসব শুনে স্বামী দর্শনানন্দ জী মূল অথর্ববেদ হাতে তুলে নিলেন এবং ৭-৮ মিনিট পর্যন্ত অথর্ববেদের ১৮ নং কাণ্ডের পৃষ্ঠা গুলি উল্টিয়ে পাল্টিয়ে ভালো করে দেখলেন, কিন্তু কোথাও সেই মন্ত্রটি খুঁজে পেলেন না ।

 স্বামী দর্শনানন্দ জি যেন একদম পাথরের মত শান্ত হয়ে গিয়েছিলেন, শেষে তিনি বললেন, অথর্ববেদের ১৮নং কাণ্ডে এই মন্ত্র নেই । তারপর আবার ভাবলেন, অনেক ভেবে তারপর বললেন যে, এই মন্ত্রটি ঋকবেদের ৬ নং অষ্টকে আছে। 

 কালুরাম শাস্ত্রীজি বললেন, আপনি ঋকবেদের ৬ নং অষ্টকও কখনো পড়েননি। সেখানে এই ধরনের কোন মন্ত্রই উপলব্ধ হয় না । 

তখন স্বামী দর্শনানন্দজি ঋকবেদের ৬ নং অষ্টক খুলে দেখলেন, কিন্তু যখন দেখলেন সেখানেও এই মন্ত্র নেই তখন তিনি বললেন আমি ভুলে গেছি। তারপর বললেন, সামবেদে আছে এই মন্ত্র।

কালুরাম শাস্ত্রীজি বললেন, সামবেদেও নেই। যদি থাকে তাহলে দেখান। 

এরপর ২২মিনিট ধরে স্বামী দর্শনানন্দ জী সামবেদ ঘাটাঘাটি করলেন কিন্তু মন্ত্রটা পেলেন না তিনি। তখন বললেন, কোনো একটা বেদের মধ্যে নিশ্চয় ই আছে, আমি আমার চোখ দিয়ে দেখেছিলাম কিন্তু কোথায় দেখেছিলাম মনে পড়ছে না।

কালুরাম শাস্ত্রীজি বললেন এই মন্ত্রটি চারবেদের কোথাও নেই, এটি কাল্পনিক নকল মন্ত্র। আর আপনি আজকে তো ভালো জন্ম ভরেও আমাকে বেদের মধ্যে থেকে এই মন্ত্র দেখাতে পারবেন না।

 আর্যসমাজী স্বামী দর্শনানন্দজী চুপ হয়ে গেলেন, শ্রোতারা হাততালি দিয়ে উঠলেন, সমস্ত মানুষ এটা বুঝে গেলেন যে বেদের মধ্যে জীবিত পিতরো-র শ্রাদ্ধ-তর্পণের উল্লেখ নেই। আর্যসমাজীরা কাল্পনিক মন্ত্র বানিয়ে জীবিত পিতরৌ-র(ব্যক্তির) শ্রাদ্ধ-তর্পণ আছে বলে প্রচার করে বেড়ায়।


অথচ বাংলার আর্যসমাজীরা তাদের বাংলা সত্যার্থ প্রকাশের মধ্যে লিখেছে এই পিতৃতর্পণ নাকি মনু ও পারাশর স্মৃতির মধ্যে আছে।

এইভাবে দয়ানন্দ সরস্বতী ও তার চ্যালা আর্যসমাজীরা নিজেদের একমাত্র বৈদিক বলে দাবী করে বেদের অছিলায় সনাতনীদের কে ঠকিয়ে চলেছে, কাল্পনিক তথাকথিত মন্ত্র নিজেরা বানিয়ে প্রচার করে বেড়ায় নিজের মতবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য। আর সাধারণ মানুষ এসব বুঝতেও পারে না। ফলে অনেকেই এদের দলে ভিড়ে যায় ।

পাঠকবৃন্দ দেখুন! এই আর্যসমাজীরা কত বড় পাখণ্ডী, এরা পাক্কা অসনাতনী , খ্রিষ্টান মতবাদে পুষ্ট থিয়োসোফিক্যাল সোসাইটির দালাল। এদের কে বয়কট করুন ।



॥ দয়ানন্দ সরস্বতী রচিত নকল বেদমন্ত্র ৬ ॥


সত্যার্থ প্রকাশের  ৭০ নং পৃষ্ঠাতে, চতুর্থ সমুল্লাসের মধ্যে দয়ানন্দ সরস্বতী লিখেছেন এই মন্ত্র(এবং ১০নং ছবিতে)  👇

ওম্ অগ্নয়ে স্বাহা। সোমায় স্বাহা। অগ্নীষোমাভ্যাং স্বাহা। বিশ্বভ্যো দেবেভ্যঃ স্বাহা। ধন্বন্তরয়ে স্বাহা। কুত্বৈ স্বাহা। অনুমত্যৈ স্বাহা। প্রজাপতয়ে স্বাহা। সহ দ্যাবাপৃথিবীভ্যাং স্বাহা। স্বিষ্টকৃতে স্বাহা ॥ 

(চিত্র নং ১০)


❌ দয়ানন্দ সরস্বতীর দাবীর খণ্ডন :

দেখুন অবস্থা, দয়ানন্দ সরস্বতী তার সত্যার্থ প্রকাশে স্পষ্টভাবে লিখেছেন যে, উক্ত তথাকথিত মন্ত্র টি নাকি ‘হোমের মন্ত্র ’, আবার তিনি আরো বলেছেন যে, ‘উল্লিখিত প্রত্যেক মন্ত্র দ্বারা প্রজ্বলিত অগ্নিতে একবার আহুতি দিবে’

এখন প্রশ্ন হল বেদের প্রত্যেক ঋচাকে মন্ত্র বলে, বেদ ছাড়া অন্য কোনো শাস্ত্রের শ্লোককে মন্ত্র বলা হয় না, দয়ানন্দ সরস্বতী যখন আহুতি দেবার জন্য উক্ত শ্লোক কে হোমের মন্ত্র বলে দাবী করেছেন, তবে তা নিশ্চয়‌ই বেদের মন্ত্র হবে, তাহলে আর্যসমাজীরা খুঁজে বের করে দেখাক, এই তথাকথিত হোমের মন্ত্র বেদের কোথায় আছে ? 

নাকি দয়ানন্দ সরস্বতীর ঝোলা থেকে বেরিয়ে পড়েছে এই নূতন মন্ত্র ?

নাকি দয়ানন্দ নিজের মুখের বানীকেই বেদ মন্ত্র বলে ভাবেন ?

নাকি ঈশ্বর ভুলে গিয়েছিল এই তথাকথিত হোমের মন্ত্র টি বেদে লিখতে ? সেইজন্য কি দয়ানন্দ সরস্বতী লিখে দিয়ে গেছেন ?

ঈশ্বরের থেকেও তো দয়ানন্দ শ্রেষ্ঠ হয়ে গেল এখানে, তাই তো মনে হচ্ছে দয়ানন্দ সরস্বতীর ভণ্ডামী দেখে।

যাই হোক, 

 এই তথাকথিত মন্ত্র বেদের নয়, উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের শেষে কোনো তথ্যসূত্র লেখেননি দয়ানন্দ সরস্বতী, কারণ এটা দয়ানন্দ সরস্বতীর রচিত কাল্পনিক বেদমন্ত্র। আমি বুঝতে পারছি না এরা কোন সাহসে এইসব নল বেদমন্ত্র প্রচার করে ? আর্যসমাজীরা দিনরাত বেদ বেদ করে চিল্লায়.. অথচ এই নকল বেদ মন্ত্র প্রচার করে বেড়াচ্ছে এরা.... আর বলছে যে আমরা আর্যসমাজীরা বেদ ছাড়া কিছুই মানি না... অথচ এখানে গৃহ্যসূত্রের নামেও নকল মন্ত্র প্রচার করে যাচ্ছে আর্যনামাজীরা... কেউ কেউ পিঠ বাঁচানোর জন্য বলবে যে, এতটুকু গৃহ্যসূত্র অংশ মান্য , বাকিগুলো অমান্য ।

এসব খেয়ালখুশি মতো এটা মানবো ওটা মানবো না বলে জগাখিচুড়ী কথাবার্তা দিয়ে নিজেদের পিঠ বাঁচায় আর্যনামাজী রা। যদিও সত্যার্থ প্রকাশে দয়ানন্দ সরস্বতী গৃহ্যসূত্রের কোনো উল্লেখ করেননি, তথ্যসূত্র‌ও দেননি, কিন্তু আর্যসমাজীরা দয়ানন্দের চেয়েও এককাঠি উপরে উঠে গিয়ে কাল্পনিক তথ্যসূত্র বের করে ফেলেছে।



॥ দয়ানন্দ সরস্বতী রচিত নকল বেদমন্ত্র ৭ ॥


সত্যার্থ প্রকাশের  ৭০ নং পৃষ্ঠাতে, চতুর্থ সমুল্লাসের মধ্যে দয়ানন্দ সরস্বতী লিখেছেন এই মন্ত্র 👇


ওম্ সানুগায়েন্দ্রায় নমঃ। সানুগায় য়মায় নমঃ। সানুগায় বরুণায় নমঃ। সানুগায় সোমায় নম। মরুদভ্যো নমঃ। অদভ্যো নমঃ। বনস্পতিভ্যো নমঃ। শ্রিয়ৈ নমঃ । ভদ্রকাল্যৈ নমঃ। ব্রহ্মপতয়ে নমঃ। বাস্তুপতয়ে নমঃ। বিশ্বেভ্যো দেবেভ্যো নমঃ। দিবাচরেভ্যো ভূতেভ্যো নমঃ। নক্তঞ্চারিভ্যো ভূতেভ্যো নমঃ। সর্বাত্মভূতয়ে নমঃ॥


❌ দয়ানন্দ সরস্বতীর দাবীর খণ্ডন :

কোনো আর্যসমাজী কি এই তথাকথিত মন্ত্র বেদ থেকে দেখাতে পারবে ? 

গৃহ্যসূত্র আর ধর্মশাস্ত্রের থেকে কিছু মন্ত্র নিয়ে সেটা কাঁট-ছাট করে দয়ানন্দ সরস্বতী তাজা তাজা গরম গরম মন্ত্র আর্যসমাজীদের সামনে পরিবেশন করে দেন। যখন যখন দয়ানন্দের যুক্তি কাজ না করে তখন তখন তৎক্ষণাৎ নূতন নূতন মন্ত্র বানিয়ে বেদের নাম দিয়ে আর্য সমাজীদের কাছে এই মন্ত্র পৌঁছে দেন, আর দয়ানন্দ সরস্বতীর চ্যালা আর্যসমাজীরা তো আর শাস্ত্র অধ্যয়ন করে না, তাই তারা বুঝতেও পারে না যে তাদের তথাকথিত মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী কত বড় ধূর্ত। তারা মনে করে দয়ানন্দ কি আর মিথ্যা বলবেন ? তিনি কি কখনো নকল মন্ত্র বানাতে পারেন ? বেদে এই মন্ত্র আছে সেই জন্যই তো দয়ানন্দ সরস্বতী এই মন্ত্র প্রচার করছেন। এই ভেবে আর্যসমাজীরা নিজেদের বড় বৈদিক বলে বেদ বেদ করে নিজেদের ঢাক ঢোল পেটাতে থাকে । 



💥 আর্যসমাজীদের আরো সূক্ষ্ম ভণ্ডামী দেখুন :

১) নীচের ১১নং ছবিতে দেখুন, এটি হল দিল্লির আর্য সাহিত্য প্রচার ট্রাস্ট থেকে প্রকাশিত হিন্দি সংস্করণের সত্যার্থ প্রকাশের চতুর্থ সমুল্লাসের উপরোক্ত তথাকথিত পকান্ন ভাগ করবার মন্ত্রের পৃষ্ঠার ছবি 👇

(চিত্র নং ১১)

♨️ লক্ষ্য করুন : হিন্দি সত্যার্থ প্রকাশের উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের শেষে  কিছুই লেখা নেই। অর্থাৎ দয়ানন্দ সরস্বতী এখানে হোমের পকান্ন ভাগ করবার যে তথাকথিত বেদমন্ত্র লিখেছেন  সেখানে তিনি কোন বেদ থেকে এই মন্ত্র তুলেছেন তার তথ্যসূত্র লেখেননি।

২) এবার ১২নং ছবিতে দেখুন, এটি হল সত্যার্থ প্রকাশের বাংলা সংস্করণের চতুর্থ সমুল্লাসের উক্ত তথাকথিত পকান্ন ভাগ করবার মন্ত্রের পৃষ্ঠার ছবি 👇

(চিত্র নং ১২)
♨️ লক্ষ্য করুন : বাংলা সত্যার্থ প্রকাশের চতুর্থ সমুল্লাসের উক্ত তথাকথিত পকান্ন ভাগ করবার শ্লোকটিকে প্রথমে মন্ত্র বলে স্বীকার করা হয়েছে, কিন্তু মন্ত্রের শেষে এখানে লেখা হয়েছে ‘ [মনু০৩ |৮৭-৯১-র আধারে ॥] ’ 



🚫 ভণ্ডামির সমীক্ষা - পাঠকবৃন্দ ! দেখুন আর্যসমাজীদের চালাকি, 

হিন্দি সংস্করণের সত্যার্থ প্রকাশের উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের শেষে তথ্যসূত্র লেখাই নেই। কিন্তু বাংলা সংস্করণের সত্যার্থ প্রকাশে উক্ত তথাকথিত পকান্ন ভাগের শ্লোক কে মন্ত্র তো বলা হয়েছেই, তার উপর মন্ত্রের শেষে  তথ্যসূত্র হিসেবে আর্যসমাজীরা লিখেছে ‘ [মনু০৩ |৮৭-৯১-র আধারে ॥] ’ 

আর্যসমাজীদের মস্তিস্কের মধ্যে সত্যি সত্যিই বিষ্ঠা ভর্তি রয়েছে, তার কারণ হলো, 

প্রথমত, 

 হিন্দি সংস্করণের সত্যার্থ প্রকাশে উক্ত তথাকথিত মন্ত্রের শেষে দয়ানন্দ সরস্বতী কোথাও তথ্যসূত্র লেখেননি, কিন্তু আর্যসমাজীরা বাংলা ভাষায় সত্যার্থ প্রকাশ অনুবাদ করবার সময় সেখানে নিজেদের মতামত ঢুকিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ আর্যসমাজীদের মতে, দয়ানন্দ সরস্বতী হলেন মূর্খ আর বাংলার আর্যসমাজীরা হলো বেদজ্ঞ মহাপণ্ডিত। 


দ্বিতীয়ত,

 উক্ত তথাকথিত পকান্ন ভাগ করবার শ্লোকটিকে বাংলা সত্যার্থ প্রকাশের মধ্যেও আর্যসমাজীরা মন্ত্র বলেই উল্লেখ করেছেন, অথচ সেই তথাকথিত মন্ত্রের শেষে আর্যসমাজীরা সেই তথাকথিত মন্ত্র কে মনুস্মৃতির শ্লোক বলে দাবী করে বসে আছে।


এখন মজার বিষয় হল, 

 আর্যসমাজীরা কি বেদ মন্ত্র কাকে বলে আর স্মৃতিশাস্ত্র কাকে বলে এটা বুঝতে অক্ষম ? 

আর্যসমাজীরা দয়ানন্দ সরস্বতীর লেখা উক্ত তথাকথিত মন্ত্র কে মন্ত্র বলে শেষে সেটিকে মনু স্মৃতির ৩নং অধ্যায়ের ৮৭-৯১নং শ্লোক বলে দাবী করছেন কোন যুক্তিতে ?


দয়ানন্দ সরস্বতী তো বেদের সংহিতা ভাগকে বেদ বলে মানতেন, বাকি কোনো কিছুকেই বেদ বলে মানতেন না, তাহলে আর্য সমাজীরা কোন যুক্তিতে মনুস্মৃতির শ্লোক গুলিকে মন্ত্র বলে প্রচার করছে ? 

এগুলি কি মূর্খতা নয় ?

আপনারা আর্যসমাজীরা নাকি বিশুদ্ধ বৈদিক বেদজ্ঞ ? তা বলি এই কি বেদজ্ঞের নমুনা ? 

যদি আপনারা বলেন যে, এই নিয়মটা মনুস্মৃতির অনুসারে এইভাবে পকান্ন দিতে বলা হয়েছে তাই এখানে মনু্স্মৃতির কথা বলা হয়েছে। তাহলেও আপনাদের ভণ্ডামি এখানে রয়েই যাচ্ছে, কারণ, এই যে পকন্ন ভাগ করার তথাকথিত বেদমন্ত্র লিখেছেন দয়ানন্দ সরস্বতী, সেটি কাল্পনিক মন্ত্র । কোথাও, কোনো বেদের মধ্যে এই তথাকথিত মন্ত্র নেই, মনুস্মৃতিতে বিধান রয়েছে ঠিক‌ই কিন্তু মন্ত্রটি বেদের হতে হবে, বেদ থেকেই নিতে হবে। কারণ আপনারাই বেদ শাস্ত্র ভিন্ন অন্য কোনো কিছুকেই গ্রহণ করতে নারাজ, সুতরাং আপনাদের নিয়ম ও নীতি অনুসারে যা তা মন্ত্র বানিয়ে নিলেই তা বেদমন্ত্র হবে না। মনুস্মৃতিতে বিধান দেয়া হয়েছে, এবার সেই হিসেবে মন্ত্রটি বেদ থেকেই নিয়ে ব্যবহার করতে হবে। 

অথচ আপনারা নিজেদের বানানো কল্পিত শ্লোক কে মন্ত্র বলে চালিয়ে দিচ্ছেন, ধরা পড়লে মনুসংহিতার দোহাই দেবেন, তাও আবার আপনাদের বানানো বিশুদ্ধ-মনুস্মৃতি ।

 সুতরাং আপনারা বেদের নামে কাল্পনিক গল্প কাল্পনিক নিয়ম কাল্পনিক মান্যতা প্রচার করে বেড়ান। এটি এখানে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, এমনকি আপনারা আপনাদের ভণ্ড গুরু দয়ানন্দ সরস্বতীর লেখার উপরেও ভণ্ডামী করেছেন। তাই আর্যসমজীরা অবৈদিক, ম্লেচ্ছ ও মিথ্যুক বলেই চিরকাল স্বীকৃত হয়েছেন আর চিরকাল ই হবেন । 


⭕ বিশেষ কিছু বিষয় বার্তা দেয়া হল : 


১) মন্ত্র বলতে কাকে বোঝায় ? - মন্ত্র বলতে বেদ ঋচা কে বোঝায়, 

দয়ানন্দ সরস্বতী তার রচিত পুস্তকে উল্লেখ করে বলেছেন “হোমমন্ত্র, পকান্ন মন্ত্র" ।

২)  মন্ত্র বলতে যদি বেদ মন্ত্রকে না বোঝায়, তবে দয়ানন্দ সরস্বতী তো বেদবহির্ভূত শ্লোক ব্যবহার করেছেন, সেই যুক্তি অনুসারে তিনি বেদ বহির্ভূত নিজেই। 

৩) দয়ানন্দ সরস্বতী যে তথাকথিত মন্ত্র ব্যবহার করেছেন তাতে কোনো তথ্যসূত্র নেই, সুতরাং ইহা কাল্পনিক।

৪) বেদ বহির্ভূত কাল্পনিক শ্লোক বানিয়ে তা দিয়ে হোম করার নির্দেশ দিয়েছেন, ফলে তিনি নিজেই অবৈদিক হলেন । তার নির্দেশনা অনুযায়ী হোম করলেও কখনো তা বৈদিক হোম বলে গণ্য হচ্ছে না, কেননা সেখানে ব্যবহৃত তথাকথিত মন্ত্রসমূহ‌ই বেদ বহির্ভূত।

৫) কোনো কোনো মূর্খ আর্যসমাজী আবার দয়ানন্দ সরস্বতীকে মহর্ষি বলে দাবি করে এটা বলতে পারে যে, ঋষিবাক্য পরতঃ প্রমাণ, তাই ঋষির বলা অবৈদিক বাক্য বা দিয়ে বেদসম্মত বাক্যকে গ্রহণ করতে হবে। তাই দয়ানন্দ যা লিখেছে তা বেদমন্ত্র ই। এমন দাবি যারা করে তাদের বলি, আপনারা তো  স্মার্তদের বিরোধীতা করতে গিয়ে আদিশঙ্করাচার্য কে গালিগালাজ করেন, তাহলে আদিশঙ্করাচার্যের বাক্যকে কেন আপ্তবচন প্রমাণ বাক্য তথা পরতঃ বলে মানতে পারেন না ?

মহীধর উবট সায়ণাচার্য দের কে কেন মানতে পারেন না ?

সুতরাং উদ্ভট যুক্তি উপস্থাপন করে নিজেদের হাসির পাত্র বানাবেন না। তাহলে যে কেউ ঋষি হয়ে যাবে আর তার কথাই প্রমাণ হয়ে যাবে, তাহলে আর্যসমাজী পুরাণ শাস্ত্রকেও মেনে চলতে হবে। কেননা আপনারাই পুরাণ কে অবৈদিক ও অশ্লীল বলেন, তাহলে পৌরাণিকরাই আপনাদেরকে বলবে যে পুরাণের অশ্লীল ও অবৈদিক অংশকে বাদ দিয়ে পুরাণের বাকি অংশগুলোকে মেনে চলুন,  মানতে পারবেন তো ?

পারবেন না, সুতরাং এইসব উদ্ভট হাস্যকর কথাও বলে লোক হাসাবেন না।


🔥 আমাদের সিদ্ধান্ত : 

(১) দয়ানন্দ সরস্বতী কাল্পনিক মন্ত্র রচনা করে সেটিকে বেদমন্ত্র বলে প্রচার করতেন। সুতরাং দয়ানন্দ সরস্বতী একজন ভণ্ড ও ধূর্ত ব্যক্তি ।

(২) দয়ানন্দ সরস্বতীর রচিত সত্যার্থ প্রকাশের বাংলা সংস্করণের মধ্যে আর্যসমাজীরা নিজেদের ইচ্ছামত বিকৃতিকরণ করেছে। তাই এরাও দয়ানন্দ সরস্বতীর চেয়েও চরম মাত্রায় ভণ্ড ।

(৩) বেদ প্রচারের নামে মিথ্যা, কাল্পনিক জিনিসপত্র প্রচার করে দয়ানন্দ সরস্বতী ও তার আর্যসমাজ আমাদের সনাতনীদের মধ্যে থাকা প্রাচীন ঐতিহ্য সংস্কৃতি বৈচিত্র্যগুলিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে চলেছে, এদের এই ভণ্ডামি আজ তুলে ধরা হল, সুতরাং এই ম্লেচ্ছ মিথ্যুকদের বয়কট করা উচিত ।


পরমেশ্বর সদাশিব ও শ্রীগুরুদেবের কৃপায় এই ম্লেচ্ছ মিথ্যুক আর্যসমাজীদের আস্ফালন নিবারণ করা হল, সমস্ত সনাতন ধর্মাবলম্বী সনাতনীদের উদ্দেশ্যে বলছি, আপনারা এই আর্যসমাজ নামক ক্যান্সার ভাইরাস গুলির থেকে সাবধান থাকবেন, বাংলাদেশ অগ্নিবীর নামক একটি আর্যসমাজীদের ফেসবুক পেজ আছে, এরা বর্তমানে বাংলাদেশে খুব বাড়াবাড়ি শুরু করেছে, এরা সাধারন মানুষের দূর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে মানুষ কে দলে টানে। এদের অপপ্রচারে বহু সনাতনী আজ দেবতার মূর্তিপূজা বিরোধী হয়ে গিয়েছে, বহু মানুষ আজ ম্লেচ্ছ দের মতোই জীবন যাপন করছে অথচ নিজেদের কে বৈদিক সনাতনী ভেবে বসে আছে,  দয়ানন্দ সরস্বতীর মতবাদ খণ্ডন করেছেন বহু পণ্ডিতবর্গ , যা রয়েছে হিন্দি ভাষায়। কিন্তু তাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষের কাছে যেহেতু হিন্দি ভাষা জানাটা একটু কঠিন, ঠিক সেই দূর্বলতার সুযোগ নিয়েই এই আর্যসমাজীরা বাংলাদেশে এদের অপপ্রচার শুরু করেছে। 

আমরা শিবভক্ত শৈব রা থাকতে কখনোই  আর্যসমাজীদের অপপ্রচার চালাতে দেবো না, তাই এই আজকের উপস্থাপনায় দয়ানন্দ সরস্বতীর ভণ্ডামী তুলে ধরলাম। আপনরা যখন‌ই কোনো আর্যসমাজী কে বেশি জ্ঞান দিতে দেখবেন, তাকে আমাদের এই লেখাটির লিঙ্ক ধরিয়ে দেবেন। বেদজ্ঞ হবার ব্যর্থ চেষ্টা তখন‌ই ফাঁস হয়ে যাবে এদের... 


জয় পরমেশ্বর শিবের জয়

জয় পরমেশ্বরী মাতা পার্বতীর জয় 

জয় নন্দী মহারাজের জয় 

জয় শৈব সনাতন ধর্মের জয় 

ॐ নমঃ পার্বতীপতয়ে হর হর মহাদেব 🙏


🚩অপপ্রচার দমনে - শ্রীনন্দীনাথ শৈব জী

প্রচারে - International Shiva Shakti Gyan Tirtha - ISSGT 


আরো দেখুন 👇

দয়ানন্দ সরস্বতীর রচিত সত্যার্থপ্রকাশ পুস্তকে শিবপুরাণ সমীক্ষা নামক আপত্তির নিরসন

দয়ানন্দ সরস্বতীর অশ্লীল বেদ ভাষ্যের খণ্ডন পর্ব - ১




মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমবার ব্রত বিধি ও মাহাত্ম্য (শৈবপুরাণোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ১ (মূলপূজা)

বৃহৎ শিবার্চন বিধি পুস্তক (শৈব আগমোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ২ (প্রহরপূজা)

ত্রিপু্রোৎসব দীপপ্রজ্জ্বলন রীতি – স্কন্দমহাপুরাণোক্ত