বৈকুণ্ঠ চতুর্দশী পূজা বিধি (স্কন্দমহাপুরাণোক্ত)

 


বাংলাতে এই সর্বপ্রথম ISSGT (International Shiva Shakti Gyan Tirtha) – এর পক্ষ থেকে শৈবমতানুসারে স্কন্দমহাপুরাণ থেকে বৈকুণ্ঠ চতুর্দশী পূজার সরল বিধি প্রকাশিত হল। কার্তিকমাসের শুক্লপক্ষের চতুর্দশী তিথির শেষ রাতে ব্রহ্মমুহুর্তে এই পূজা করা হয়। এখানে সর্বসাধারণের জন্য সহজ সরল অর্চনা বিধি প্রকাশ করা হয়েছে। এই পূজা বিধি লেখনী ও সংগ্রহ করেছেন শ্রী কৌশিক রায় শৈবজীর । পরমশৈব শ্রীবিষ্ণু সহ প্রভু পরমেশ্বর শিবের আরাধনা করা হয় এই তিথিতে ।

🟪 বৈকুণ্ঠ চতুর্দশী তিথির বিশেষ মাহাত্ম্য 🟪

এই তিথিতে শ্রীবিষ্ণু পরমেশ্বর শিবের আরাধনা করে সুদর্শন চক্র বরদান হিসেবে পেয়েছিলেন । স্কন্দমহাপুরাণে বর্ণিত এই কার্তিকমাসের শুক্লা চতুর্দশী তিথির ভোর সকালে ব্রহ্মমুহুর্তে ভগবান শ্রীবিষ্ণু বৈকুণ্ঠ লোক থেকে মর্তে নেমে এসে বারাণসী কাশীর মণিকর্ণিকা ঘাটে স্নানাদি সেরে প্রথমে কাশীবিশ্বনাথের বিশ্বেশ্বর শিবলিঙ্গের পূজা করেন, তারপর মর্ত্য থেকে সহস্র সংখ্যক পদ্মফুল একত্রিত করে বৈকুণ্ঠলোকে গিয়ে পরমেশ্বর শিবের সহস্র নাম উল্লেখ করে সহস্র অর্থাৎ একহাজার টি পদ্মফুল দিয়ে পরমেশ্বর শিবের আরাধনা করেন । পরমেশ্বর মহাদেব লীলাবশত পরমশৈবশ্রীবিষ্ণুর ভক্তির পরীক্ষা নেওয়ার জন্য একটি পদ্ম সরিয়ে ফেলেন, ৯৯৯ টি নামের সাথে ৯৯৯ টি পদ্ম দেওয়ার পর শ্রী বিষ্ণুজী দেখলেন একটি পদ্ম কম পড়ে গেছে তখন তিনি দুশ্চিন্তায় মগ্ন হলেন, তিনি ভেবে পেলেন না একটি পদ্ম কি করে কম পড়ে গেল। তখন তিনি নিজের চক্ষু তুলে তা পদ্ম হিসেবে পরমেশ্বর শিবকে অর্পন করলেন । মহাদেব তার ভক্ত শ্রীবিষ্ণুর এই ভক্তি দেখে অতি প্রসন্ন হয়ে শ্রীবিষ্ণুর সমক্ষে প্রকটিত হয়ে শ্রীবিষ্ণুকে দর্শন দিয়ে ধন্য করলেন এবং পরমেশ্বর শিব শ্রীবিষ্ণুকে বরদান চাইতে বললে শ্রীবিষ্ণু বললেন, হে প্রভু পরমেশ্বর সদাশিব, আপনি অন্তর্যামী, সমস্ত কিছুই আপনি জ্ঞাত আছেন। তবুও আপনার আদেশের মর্যাদা জন্য বলছি, অসুরেরা সমস্ত জগতকে পীড়িত করছে। আমার নিজের অস্ত্র-শস্ত্রে দৈত্যদের বধ সম্ভব হচ্ছে না, তাই হে পরমেশ্বর আমি আপনার স্মরণ গ্রহণ করেছি। শ্রীবিষ্ণুর এই কথা শুনে পরমেশ্বর শিব শ্রীবিষ্ণু জিকে সুদর্শন চক্র প্রদান করলেন। এছাড়াও পরমেশ্বর সদাশিব শ্রী বিষ্ণুজী কে বললেন তোমার এই পূজা করার তিথি বৈকুণ্ঠ চতুর্দশী নামে সমগ্র জগৎ বিখ্যাত হবে। এই চতুর্দশীর দিন সর্বাগ্রে শ্রীবিষ্ণু অর্থাৎ তোমাকে পূজা করতে হবে অতঃপর পরবর্তী তে আমার পূজা করতে হবে যে ব্যক্তি শুধুমাত্র এই দিন অগ্রে তোমার পুজো করে তারপর আমার পূজা সম্পন্ন করবে তিনি আমার আশীর্বাদ ধন্য হবেন । হে বিষ্ণু তুমি আমার পরমভক্ত শৈবশিরোমণি, তাই যে ব্যক্তি আমার ভক্তের পূজা করে সে ব্যক্তি আমার অতীব প্রিয় ।

🟪 পূজার জন্য করনীয় 🟪

🛑সনাতন ধর্ম অনুসারে, নতুন দিন গণনা শুরু হয় সূর্য উদয় হ‌ওয়ার সময় থেকে, অর্থাৎ যতক্ষন সূর্য উদয় না হয় ততক্ষন পর্যন্ত সেটি আগের দিন হিসেবেই গণ্য হবে ।

🛑ব্রহ্মমুহূর্ত = সারারাত কেটে যাওয়ার পরে শেষ রাত তিনটের পর থেকে ব্রহ্মমুহূর্ত শুরু হয় ।

১) যে দিনটি ব্রহ্মমুহূর্তের মধ্যে এই চতুর্দশী তিথি পড়বে সেই দিন শিব আরাধনা করতে হবে।

২) যে দিনের শেষ রাতে ব্রহ্মমুহুর্তে শিবপূজা করবেন সেই দিনের সন্ধ্যাতে বিষ্ণুর পূজা করবেন । অর্থাৎ সন্ধ্যাতে বিষ্ণুর পূজা করার পর সারারাত জেগে কাটানোর পর সেই রাতের‌ই ব্রহ্মমুহুর্তে পরমেশ্বর শিবের আরাধনা করবেন ।

৩) চতুর্দশী তিথি যদি রাত বারোটার সময় থেকে শুরু হয় তবে ত্রয়োদশী তিথিতেই শ্রীবিষ্ণুকে সন্ধ্যা বেলায় পূজা করবেন, তারপর চতুর্দশী তিথির মধ্যে ব্রহ্মমুহুর্তের সময় পরমেশ্বর শিবের আরাধনা করবেন ।

🟪 উপকরণ 🟪

১. শ্রীবিষ্ণুর বিগ্রহ বা চিত্র (কেউ চাইলে সাধারন শিবলিঙ্গে বা বাণলিঙ্গেও শ্রীবিষ্ণুর পূজা করতে পারেন , সেক্ষেত্রে শিবলিঙ্গের মধ্যে শ্রীবিষ্ণুকে কল্পনা করতে হবে)

২. শুদ্ধ জল এবং গঙ্গাজল

৩. অভিষেক পাত্র

৪. ত্রিপুন্ড্র ধারণের জন্য ভস্ম বা খড়িমাটি

৫. রুদ্রাক্ষের মালা(বিষ্ণুর জন্য)[যদি সমর্থ হন]

৬. কুশাসন অথবা কম্বলের আসন

৭. পঞ্চামৃত (দধি, দুগ্ধ, ঘৃত, মধু ও শর্করা)[শ্রীবিষ্ণু ও প্রভু শিবের জন্য]

৮. ধূপ, ঘিয়ের দীপ ও কর্পূর

৯. পানীয় জল [শিব ও কৃষ্ণের জন্য আলাদা আলাদা গ্লাসে]

১০. শ্রীবিষ্ণুর জন্য নৈবেদ্য প্রসাদ হিসেবে পাকা ফল ও মিষ্টান্ন ইত্যাদি দিতে পারেন।

১১. পরমেশ্বর শিবের জন্য নৈবেদ্য প্রসাদ পাকা ফল ও মিষ্টান্ন ইত্যাদি দিতে পারেন।
কেউ যদি চান তবে অন্নভোগের সাথে পরমান্ন(পায়েস) দিতে পারেন।

১২. শ্বেতচন্দন , বেলপাতা ও গন্ধপুষ্প ।

🛑 যদি সমর্থ হন তবে ব্রহ্মমুহুর্তের সময় শিব আরাধনার সময় শিবসহস্র নামের একটি একটি করে নাম উচ্চারণ করে তার সাথে একটি একটি করে মোট ১০০০টি পদ্মফুল পরমেশ্বর শিবের উদ্দেশ্যে সমর্পন করবেন । পদ্মফুলের স্থানে বিকল্প হিসেবে ১০০০টি দূর্বাও দিতে পারেন । (যেমন – ॐ নমঃ শ্রীকন্ঠঃ, ॐ নমঃ কালযোগী, ॐ নমঃ শর্বঃ )

🛑 ১০০০টি পদ্মফুল বা দূর্বা দিতে অসমর্থ হলে শুধুমাত্র বিষ্ণুকৃত শিবসহস্রনামটি পাঠ করবেন ।

🟪 পূজার দিনের সকালের কর্মসূচি 🟪

✅সকালে নিদ্রাভঙ্গ করে শিবগৌরীর স্মরণ করুন হাত জোড় করে। মন্ত্র –
কর্পূর গৌরং করুণাবতারং সংসার সারম্ ভুজগেন্দ্রহারম্ ।
সদা বসন্তং হৃদয়ারবিন্দে ভবং ভবানী সহিতম্ নমামি ।।

তারপর স্নান সেরে কপাল সহ দেহের পাঁচ স্থানে ত্রিপুণ্ড্র অঙ্কিত করুন এবং গলায় রুদ্রাক্ষ ধারণ করুন এবং নিত্যদিনের পূজার্চনা করুন। পূজার উক্ত সারাদিন উপবাস করতে হয়, সন্ধ্যার সময় পুনরায় শুদ্ধ হয়ে পরিষ্কার বস্ত্র ধারণ করতে হবে। পুনরায় কপাল সহ দেহের পাঁচ স্থানে ত্রিপুণ্ড্র অঙ্কিত করুন এবং গলায় রুদ্রাক্ষ ধারণ করুন। এবার পূজা স্থানে এসে কুশের অথবা কম্বলের আসনে বসুন।

🔘 পরমশৈব শ্রীবিষ্ণুজীর পূজা 🔘

✅প্রথমে শিবপার্বতীকে স্মরণ করুন নিম্নোক্ত মন্ত্র পাঠ করে –
কর্পূর গৌরং করুণাবতারং সংসার সারম্ ভুজগেন্দ্রহারম্ ।
সদা বসন্তং হৃদয়ারবিন্দে ভবং ভবানী সহিতম্ নমামি ।।


✅তারপর ভগবান গণেশকে প্রণাম করুন গণেশ মন্ত্র পাঠ করে – ॐ গাং গণেশায় নমঃ ॥

✅নিজ গুরুকে প্রণাম করুন এই মন্ত্রে – অখণ্ড মণ্ডলা কারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরম। তদপদং দর্শিতং যেন তস্মৈ শ্রী গুরুবে নমঃ।।

✅এবার গঙ্গাজল ছিটিয়ে নিন ॐ নমঃ শিবায় মন্ত্র উচ্চারণ করে। এবার ধূপ দীপ জ্বেলে নিন।

✅এবার হাতজোড় করে বলুন –
হে পরমেশ্বর শিব
হে ভক্তবৎসল
হে আমার আরাধ্য প্রভু সদাশিব
আমি আপনার‌ই পালনহার স্বরূপ সাক্ষাৎ হরির শুভ অনুষ্ঠান করার সংকল্প করেছি, যিনি আপনার সর্বশ্রেষ্ঠ ভক্ত, যিনি আমাদের শৈবদের কাছে প্রেরণা। অত‌এব আপনার কল্যাণে যেন আমার দ্বারা কৃত এই শৈবসেবা অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হয়।

✅শ্রীবিষ্ণুর চিত্র বা প্রতিমার সম্মুখে হাতজোড় করে বলুন –

হে বাসুদেব ! তুমি আমার গুরু স্বরূপ, তোমার চরণের স্পর্শে ধন্য হয়েছে এই ধরনী বারংবার, তুমি সুদর্শনচক্র ধারণ করে ধর্মের রক্ষা করেছ, তোমার কৃপায় সেই পরম দূর্লভ শিবজ্ঞান সমস্ত বিশ্ববাসীর কাছে বোধগম্য হয়েছে। তুমি বিষ্ণু রূপে, নারায়ণ রূপে, পরশুরাম রূপে, রামচন্দ্ররূপে এবং কৃষ্ণ রূপে এবং আরো নানারূপে শিবারাধনা করেছ। তুমি সহস্র সংখ্যক পদ্মপুষ্প দ্বারা শিবসহস্র উচ্চারণ করে শিবারাধনা করেছ, তুমি শিবের ভক্তিতে একটি পদ্মের অভাবে নিজের পবিত্র কমলের ন্যায় চক্ষু শিবকে অর্পন করে দিয়েছো, যার ফলস্বরূপ তুমি শিবকৃপা সহিত সুদর্শন চক্র লাভ করেছ তথা ত্রৈলোক্যপতি হয়েছো। তাই তোমার ন্যায় মহান শৈবের সেবা যত্ন করে তোমার আশীর্বাদে শিবপ্রাপ্ত করার মার্গ প্রশস্ত করতে ব্রতী হয়েছি। হে ভক্ত শিরোমণি বিষ্ণু তুমি আমার উপর কৃপা দৃষ্টি দাও, আমার প্রেমসম্পন্ন এই সেবা গ্রহণ করে নাও ।
ॐ কেশবায় নমঃ ॥
ॐ নারায়ণায় নমঃ ॥
ॐ মাধবায় নমঃ ॥


✅এবার শ্রীবিষ্ণুর জন্য পাকা ফল ও মিষ্টান্ন ইত্যাদি সাধ্যমত সাজিয়ে সামনে প্রসাদ হিসেবে নিবেদন করুন ৷ পানীয় জলপূর্ণ গ্লাস নিবেদন করুন।

✅এক এক করে শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে প্রদান করা প্রসাদপূর্ণ পাত্র গুলি – ॐ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায়, নৈবেদ্য সমর্পয়ামি ।।

✅এবং পানীয় জলপূর্ণ গ্লাসটি শ্রীবিষ্ণুর সম্মুখে তুলে ধরে বলুন – ॐ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায়, পানার্থ পয়ঃ সমর্পয়ামি ।।

✅এবার শ্রীবিষ্ণুকে পঞ্চামৃত দ্বারা স্নান করাবেন(শিবলিঙ্গতেও বিষ্ণু কল্পনা করে পঞ্চামৃত দ্বারা শিবলিঙ্গ কে স্নান করাতে পারেন)। দুধ দ‌ই ঘী মধু এবং শর্করা হিসেবে আঁখেররস বা চিনিজল এই সব বস্তু গুলো একসাথে মিশিয়ে নেবেন একটি ঘটিতে। এবার শ্রীবিষ্ণুর প্রতিমাকে একটি অপেক্ষাকৃত বড় পাত্রে বসিয়ে দিয়ে পঞ্চামৃত দিয়ে স্নান করান এই মন্ত্র পাঠ করতে করতে – স এস রুদ্র ভক্তশ্চ কেশবো রুদ্রসম্ভবঃ। ॐ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায় ॥

(শ্রীবিষ্ণু জীর চিত্র তে পূজার ক্ষেত্রে উক্ত পঞ্চামৃত খুবই সামান্য পরিমাণ মতো নিয়ে জলে গুলে নিন। কয়েকটি দূর্বা সেই জলে স্পর্শ করে বিষ্ণু চিত্রে ছিটিয়ে দিন এই মন্ত্র পাঠ করতে করতে – স এষ রুদ্র ভক্তশ্চ কেশবো রুদ্রসম্ভব। ॐ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায় ॥ )


✅এবার শুদ্ধ জল দ্বারা শ্রীবিষ্ণুকে স্নান করিয়ে স্বচ্ছ বস্ত্র দ্বারা মুছে দিন।

✅হাতে রুদ্রাক্ষ মালা নিয়ে পাঠ করে এই মন্ত্র টি পরমশিবভক্ত গোপালকে বা শ্রীকৃষ্ণের চিত্রকে এই রুদ্রাক্ষ মালাটি পড়িয়ে দিন। মন্ত্র – ॐ তৎপুরুষায় বিদ্মহে মহাদেবায় ধীমহি তন্নো রুদ্রঃ প্রচোদয়াৎ ।
ॐ নমঃ ভগবতে রুদ্রায় । ॐ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায় রুদ্রাক্ষমাল্যং নিবেদয়ামি ।।


অতঃপর, কিছু টা ভস্ম (অথবা খড়িমাটি) নিজের হাতের তিন আঙুলে তুলে নিয়ে এই মন্ত্র পাঠ করে ভস্মটি অভিমন্ত্রিত করুন – ॐ অগ্নিরিতি ভস্ম বায়ুরিতি ভস্ম জলমিতি ভস্ম স্থলমিতি ভস্ম ব্যোমেতি ভস্ম সর্বংহ বা ইদং ভস্ম মন এতানি চক্ষূংষি ভস্মানি যস্ মাদ্ ব্রতমিদং পাশুপতং যদ্ ভস্ম নাঙ্গানি সংস্পৃশেত্ তসমাদ্ ব্রহ্ম তদেতত্ পাশুপতং পশুপাশ বিমোক্ষণায় ॥

✅এবার এই মন্ত্রটি পাঠ করে কিছুটা জল দিয়ে ভিজিয়ে নিন ভস্ম অথবা খড়িমাটিকে –
মা নস্তোকে তনয়ে মা ন আয়ুষি মা নো গোষু মা নো অশ্বেষু রীরিষঃ । মা নো বীরান্ রুদ্র ভাবিনো বধীরহবিষ্মন্তঃ সদমিত্বা হবামহে ॥

এবার হাতের তিন আঙ্গুল দিয়ে সেই ভস্মটির কিছু টা তুলে নিয়ে শৈব শিরোমণি শ্রীকৃষ্ণ জী মহারাজের কপালে ভস্মের ত্রিপুণ্ড্র অঙ্কিত করবেন এই মন্ত্রে কপালে ত্রিপুণ্ড্র আঁকার সময় ॐ নমঃ শিবায় ।ॐ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায়, ত্রিপুণ্ড্র সমর্পয়ামি ।।

✅এবার কিছু চন্দনযুক্ত পুষ্প সহ বেলপাতা হাতে নিয়ে এই মন্ত্র পাঠ করে শ্রীকৃষ্ণ জী কে অর্পণ করুন – ॐ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায় ।।

✅আবার কিছু চন্দনযুক্ত পুষ্প সহ বেলপাতা হাতে নিয়ে এই মন্ত্র পাঠ করে শ্রীকৃষ্ণ জী কে অর্পণ করুন – ॐ বিষ্ণবে নমঃ ।।

✅পুনরায় কিছু চন্দনযুক্ত পুষ্প সহ বেলপাতা হাতে নিয়ে এই মন্ত্র পাঠ করে শ্রীকৃষ্ণ জী কে অর্পণ করুন – ॐ নমো নারায়ণায় ।।


🌼পরমশৈব শ্রীকেশব ধ্যানম্ –
তাক্ষ্যার্সনশ্চতুর্বাহুঃ শঙ্খচক্রগদাধরঃ।।৩১।।
শ্যামপীতাম্বরধরো বনমালাবিভুষিতঃ ।
যজ্ঞদেবোন্তমো দেবো মাধবো মধুসূদনঃ।।৩২।।
শিবপ্রণামপরমঃ শিবধ্যানৈক তৎপরঃ।
শিবার্চনপরো নিত্যং বিষ্ণুশান্তিং করোতু মে।।৩৩।।

⭕সরলার্থ – (বিষ্ণু ধ্যান) যিনি গরুড়াসনের উপরে আরোহনকারী এবং নিজের চারহস্তে শঙ্খ চক্র গদা(এবং পদ্ম) ধারণকারী, সেই শ্যামবর্ণ ও পীতাম্বর ধারণকারী, বনমালা বিভূষিত তথা যজ্ঞদেবগণের মধ্যে উত্তম দেবতা হলেন মাধব মধুসূদন শ্রীকৃষ্ণ। তিনি পরমেশ্বর শিবকে প্রণামকারী পরম ভক্ততত্ত্ব এবং তিনি সর্বদা উমাপতি শিবের ধ্যানে তৎপর থাকেন। তিনি নিত্য শিব অর্চনায় রত থাকেন। সেই পরমশৈব ভগবান শ্রীবিষ্ণু আমাকে শান্তি প্রদান করুন ।

✅এবার শ্রীবিষ্ণুর মন্ত্র জপ করুন ১০৮ বার – ॐ বিষ্ণবে নমঃ ‌॥

✅অতঃপর, শৈবশ্রীবিষ্ণুর প্রণাম মন্ত্র পাঠ করে প্রণাম করুন ভগবান কে।
🙏পরমশৈবকৃষ্ণের প্রণামমন্ত্র : নমঃ শ্রীকৃষ্ণায় নন্দনন্দনায় বৈকুণ্ঠাধিপত্যংশভূতায় শৈবায় ॥

🛑এবার পরমশৈব শ্রীবিষ্ণুর বন্দনা করুন –

অথ বিষ্ণুর্মহেশস্য শিবস্যৈব পরা তনুঃ।
বারিতত্ত্বাধিপঃ সাক্ষাদব্যক্তপদসংস্থিতঃ ॥ ১২৬
নিৰ্গুণ সত্ত্ববহুলস্তথৈব গুণকেবলঃ ।
অবিকারাভিমানী চ ত্রিসাধারণবিক্রিয়ঃ ॥ ১২৭
অসাধারণকর্মা চ সৃষ্ট্যাদিকরণাৎ পৃথক্‌ ।
দক্ষিণাঙ্গভবেনাপি স্পর্ধমানঃ স্বয়ম্ভুবা ॥ ১২৮
আদ্যেন ব্রহ্মণা সাক্ষাৎ সৃষ্টঃ স্রষ্টা চ তস্য তু ।
অণ্ডস্যান্তর্বহির্বর্তী বিষ্ণুলোকদ্বয়াধিপঃ ॥ ১২৯
অসুরান্তকরশ্চক্রী শত্রুস্যাপি তথানুজঃ ।
প্রাদুর্ভূতশ্চ দশধা ভৃগুশাপচ্ছলাদিহ ॥ ১৩০
ভূভারনিগ্রহার্থায় স্বেচ্ছয়াবাতরৎ ক্ষিতৌ।
অপ্রমেয়বলো মায়ী মায়য়া মোহয়ঞ্জগৎ ॥ ১৩১
মূর্তিং কৃত্বা মহাবিষ্ণুং সদাবিষ্ণুমথাপি বা।
বৈষ্ণবৈঃ পূজিতো নিত্যং মূৰ্তিত্ৰয়ময়াসনে ॥ ১৩২
শিবপ্রিয়ঃ শিবাসক্তঃ শিবপাদার্চনে রতঃ।
শিবস্যাজ্ঞাং পুরস্কৃত্য স মে দিশতু মঙ্গলম্ ॥ ১৩৩

✅এবার একটা ফুল হাতে নিয়ে হাত জোড় করে পূজার মধ্যে অজান্তে হওয়া ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন এই মন্ত্র পাঠ করে।
মন্ত্র – অজ্ঞানাদ্যদি বা জ্ঞানাজ্জপ পূজাদিকং ময়া ।
কৃতং তদস্তু সফলং কৃপয়া তব কেশব ॥

[বাংলাতে সহজ সরল ভাবেও প্রার্থনা করতে পারেন এটি বলে – হে শৈবশিরোমণি কেশব শ্রীকৃষ্ণ ! আমি না জেনে অথবা জেনে বুঝে যে জপ- পূজা ইত্যাদি সৎ কর্ম করেছি, তা যেন আপনার কৃপায় সফল হয়]

✅এবার কর্পূর জ্বেলে আরতি করুন।

✅এবার পরমশৈব বিষ্ণুজী মহারাজের কাছে হাতজোড় করে শিবভক্তি প্রার্থনা করুন এই মন্ত্র পাঠ করে।
মন্ত্র – শিবে ভক্তিঃ শিবে ভক্তিঃ শিবে ভক্তির্ভবে ভবে। ভক্ত্যা ময়ার্চিতো মহ্যং প্রার্থিতং শং প্রয়চ্ছতু ।।

[বাংলাতে সহজ সরল ভাবেও প্রার্থনা করতে পারেন এটি বলে – হে শিবভক্ত গোবিন্দ ! প্রত্যেক জন্মে আমার শিবে ভক্তি হোক, শিবে ভক্তি হোক, শিবে ভক্তি হোক। আমি ভক্তিসহকারে আপনার সেবা অর্চনা করেছি, আপনি আমাকে প্রার্থিত কল্যাণ প্রদান করুন।]

🟪এখানে পরমশৈব ভগবান শ্রীবিষ্ণুর সেবা সম্পন্ন হল ।

🛑 যেহেতু মূল শিবারাধনা এখনো বাকি আছে তাই বিষ্ণুপূজা সম্পন্ন হলেও উপবাস ভঙ্গ করবেন না । কিন্তু একান্তই যদি সম্ভব না হয় তবে কিছু সামান্য ফল ও দুধ বা দ‌ই খেতে পারেন ।

🛑 বিষ্ণুপূজা করার পর রাত্রি জাগরণ করবেন ব্রহ্মমুহুর্তের আগে পর্যন্ত। রাত্রি জাগরণের সময় যে কোনো শিবশাস্ত্র পাঠ করবেন(শিবমহাপুরাণ/শিবগীতা/শৈব‌উপনিষদ) । শিবভজন সঙ্গীতের অনুষ্ঠান করতে পারেন, শিবশাস্ত্রের আলোচনা করতে পারেন, শিবলীলা মাহাত্ম্য বর্ণনা করতে পারেন । শিবসম্পর্কিত স্তোত্র পাঠ করতে পারেন । ব্রহ্মমুহুর্ত শুরু হলে অর্থাৎ রাত ৩.৩০ মিনিট -এর পর শিব আরাধনা শুরু করবেন ।

🛑 বৈকুণ্ঠ চতুর্দশীর শিবপূজা শুভারম্ভ 🛑

আপনার উপাসনার কক্ষে অথবা শিবমন্দিরে উপস্থিত হয়ে গঙ্গা জল চারিদিকে ছিটিয়ে দিন রং মন্ত্রে। শিবলিঙ্গ অথবা শিববিগ্রহ (অথবা চিত্র) – এর সামনে কুশের আসন অথবা কম্বলের আসন পেতে তার উপর উত্তর দিকে মুখ করে বসুন।

✅এবার হাত জোড় করে প্রথমে পরমেশ্বর প্রভু শিব ও মাতা পার্বতীকে স্মরণ করবেন, 🔘মন্ত্র – ॐ সাম্বশিবায় নমঃ ॥

✅অতঃপর নিজ গুরু কে স্মরণ করুন (যদি আপনি অদীক্ষিত ব্যক্তি হন তবে ভগবান গণেশকে স্মরণ করুন এই মন্ত্র পাঠ করে – ॐ গাং গণপতয়ে নমঃ)

✅এবার ঘিয়ের দীপ জ্বালুন, সুগন্ধযুক্ত ধূপ জ্বালিয়ে নিন। ফল অথবা মিষ্টান্ন এবং পানীয় জল সহ জলের গ্লাস সাজিয়ে দিন প্রভু শিবের সমীপে। এবার এক একটি থালা প্রভুর সামনে দেখিয়ে বলুন – শিবার্পণমস্তু ॥
হে প্রভু মহাদেব ! হে মাতা পার্বতী ! আমার দ্বারা নিবেদিত এই ভক্তিযুক্ত সমস্ত প্রসাদ আপনারা প্রসন্ন হয়ে গ্রহণ করে আমার উপর কৃপা করুন।

✅হাতে এক ঘটি গঙ্গা জল নিয়ে পাঠ করুন মহামৃত্যুঞ্জয় মহামন্ত্র –

ॐ ত্রয়ম্বকং যজামহে সুগন্ধিং পুষ্টিবর্ধনম্।
উর্বারুকমিব বন্ধনান মৃত্যোর্মুক্ষীয় মামৃতাৎ ॥
এবার সমগ্র জলটি শিবলিঙ্গ ঢেলে দিন।

🚩যারা শুধুমাত্র গঙ্গাজল দিয়েই পূজা করতে চান তারা নিম্নে থাকা পঞ্চামৃতের দ্বারা শিবলিঙ্গের অভিষেক পদ্ধতিটি এড়িয়ে যান। কিন্তু যারা গঙ্গাজল এবং পঞ্চামৃত উভয় উপাচার দিয়েই অভিষেক করাতে চান তারা সমগ্র নিয়মটিই অনুসরণ করবেন।

🚩যারা শুধুমাত্র পঞ্চামৃত দ্বারা অভিষেক করাতে ইচ্ছুক তারা এই পঞ্চামৃত পদ্ধতিটি কে অনুসরন করতে পারেন👇

[যদি পঞ্চামৃত (দুধ, দই, ঘী, মধু এবং শর্করা) দিয়ে পূজা করতে চান তবে সবগুলি একটি ঘটিতে ঢেলে একসাথে মিশিয়ে নেবেন ।

⚫এবার ঐ একত্রে মিশিয়ে রাখা পঞ্চামৃতের ঘটি হাতে তুলে নিয়ে শিবলিঙ্গে অর্পন করে দিন এই মন্ত্র উচ্চারণ করে –

ॐ পঞ্চ নদ্যঃ সরস্বতী যন্তি সস্ত্রোতসঃ ।
সরস্বতী তু পঞ্চধা সো দেশোঽভবৎসরিত্ ॥
পয়ো দধি ঘৃতং চৈব মধু চ শর্করান্বিতম্ ।
পঞ্চামৃতং ময়ানীতং স্নানার্থ প্রতিগৃহ্যতাম্ ॥
ভগবতে শ্রীসাম্বসদাশিবায় নমঃ, পঞ্চামৃতস্নানং সমর্পয়ামি, পঞ্চামৃতং স্নানান্তে শুদ্ধোদকস্নানং সমর্পয়ামি ॥

(পঞ্চামৃত ঢালার পর শুদ্ধ জল দিয়ে ধুয়ে দিন শিবলিঙ্গ)]

🚩যারা শুধুমাত্র গঙ্গাজল দিয়ে অভিষেক করেছেন তারা এই অর্ঘ্য মন্ত্র থেকে নিম্নোক্ত সম্পূর্ণ পদ্ধতি টি অনুসরণ করবেন।

🚩যারা পঞ্চামৃত দ্বারা অভিষেক করেছেন তারাও এই অর্ঘ্য মন্ত্র থেকে বাকি সম্পূর্ণ পদ্ধতিটি অনুসরণ করবেন👇

✅এবার অর্ঘ নিবেদনের জন্য হাতে দূর্বা আতপচাল নিয়ে এই মন্ত্র উচ্চারণ করে শিবলিঙ্গ প্রদান করুন –

রূপং দেহি যশো দেহি ভোগং দেহি চ শঙ্কর
ভুক্তিমুক্তিফলং দেহি গৃহীত্বার্ঘ্যং নমোঽস্তু তে ॥

✅এবার পঞ্চোপচার [ধূপ, দীপ, গন্ধ(চন্দন), ফুল, নৈবেদ্য] দিয়ে পূজা করুন।

✅হাতে বেলপাতা সহ ফুল নিয়ে পুষ্পাঞ্জলী প্রদান করুন

এই মন্ত্রে –
অজ্ঞানাদ্যদি বা জ্ঞানাদ্যদ্যৎ পূজাদিকং ময়া।
কৃতং তদস্তু সফলং কৃপয়া তব শঙ্কর ৷৷ তাবকস্ত্বগতপ্রাণস্ত্বচ্চিত্তোঽহং সদা মৃড।
ইতি বিজ্ঞায় গৌরীশ ভূতনাথ প্রসীদ মে৷৷
ভূমৌ স্খলিতপাদানাং ভূমিরেবাবলম্বনম্।
ত্বয়ি জাতাপরাধানাং ত্বমেব শরণং প্ৰভো॥

‌‍॥ ॐ নমঃ শিবায় ॥
॥ ॐ নমঃ শিবায় ॥
॥ ॐ নমঃ শিবায় ॥

✅অতঃপর
মাতা পার্বতী সহিত পরমেশ্বর শিবের ধ্যান করবেন এই মন্ত্র উচ্চারণ করে –

(ধ্যান করার সময় নিচের এই চিত্রটি দেখে কল্পনা করতে পারেন চোখ বন্ধ করে এবং ধ্যানের সময়সীমা আপনার মনের গভীরতার উপর নির্ভরশীল, অন্তত দশমিনিট ধ্যান করুন👇)

পার্বতী সহিত পরমেশ্বর সদাশিব ও কার্তিকেয়-গণেশ

🔘 শিবধ্যান মন্ত্র –

কৈলাসপীঠাসনমধ্যসংস্থং ভক্তৈঃ সনন্দাদিভির্রচ্যমানম্ ।
ভক্তার্তিদাবানলহাপ্রমেয়ং ধ্যায়েদুমালিঙ্গিতবিশ্বভূষণম্ ॥
ধ্যায়েন্নিত্যং মহেশং রজতগিরিনিভং চারুচন্দ্রাবতংসং রত্নাকল্পোজ্জ্বলাঙ্গং পরশুমৃগবরাভীতিহস্তং প্রসন্নম্ । পদ্মাসীনং সমন্তাৎ স্তুতমমরগণৈর্ব্যাঘ্রকৃত্তিং বসানং বিশ্বাদ্যং বিশ্ববীজং নিখিলভয়হরং পঞ্চবক্ত্রং ত্রিনেত্রম্ ॥

✅ধ্যানের পর এবার ১০৮ বার ষড়াক্ষর মহামন্ত্র জপ করুন(রুদ্রাক্ষমালা অথবা হাতের শৈবমালাতেও জপ করতে পারেন)।

🔘মন্ত্র – ॥ ॐ নমঃ শিবায় ॥

✅জপ এর পর মাতা পার্বতীর উদ্দেশ্যে জপ করুন ষড়াক্ষরী মহামন্ত্র

🔘মন্ত্র- ॥ ॐ নমঃ শিবায়ৈ ॥

🛑এবার বিষ্ণুকৃত শিবসহস্রনাম স্তোত্র পাঠ করবেন।

[সামর্থবান ব্যক্তি ১০০০টি পদ্মফুল শিবের ১০০০টি নামের একটি একটি করে উচ্চারণ করে তার‌ই সাথে একটি একটি করে পদ্মফুল পরমেশ্বর শিবকে অর্পন করবেন। পদ্মফুল দিতে অসমর্থ হলে তার স্থানে ১০০০টি দূর্বা দিতে পারেন, ১০০০টি দূর্বা দিতেও অসমর্থ হলে ১০০০টি বেলপাতা দিতে পারেন, তাতেও অসমর্থ হলে জল প্রদান করবেন, যদি তাও সমর্থ না হন তবে একটি দূর্বা হাতে নিয়ে  বিষ্ণুকৃত শিবসহস্রনাম স্তোত্রম্ পাঠ করে তারপর সেই দূর্বা টি পরমেশ্বর শিবকে প্রদান করবেন, যদি একটি দূর্বা দিতেও অসমর্থ হন তবে শুধুমাত্র বিষ্ণুকৃত শিবসহস্রনাম স্তোত্রম্ পাঠ করে পরমেশ্বর শিবকে প্রণাম করবেন]

✅ পরমেশ্বর শিবের ১ হাজার টি আলাদা আলাদা নাম বিভক্ত করে দেওয়া আছে, এখানে ক্লিক করে দেখে পূজা করুন 👇

পরমেশ্বর শিবের ১হাজারটি নাম ও তার অর্থ


[অথবা শুধুমাত্র 

✅ ধৈর্য্য ধরে ধীরে ধীরে ভক্তিসহকারে পাঠ করুন এখানে ক্লিক করে 👉 বিষ্ণুকৃত শিবসহস্রনাম স্তোত্রম্ (শিবমহাপুরাণোক্ত) ]

🔶শিবসহস্র নাম উচ্চারণ করে পূজা সম্পন্ন হলে অথবা শিবসহস্রনাম স্তোত্র  পাঠ সম্পূর্ণ হবার পর পরবর্তী নির্দেশ অনুসরণ করুন ।

✅এবার একটা ফুল হাতে নিয়ে হাত জোড় করে পূজার মধ্যে অজান্তে হওয়া ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন এই মন্ত্র পাঠ করে।
🔘ক্ষমাপ্রার্থনা মন্ত্র –

অজ্ঞানাদ্যদি বা জ্ঞানাজ্জপ পূজাদিকং ময়া ।
কৃতং তদস্তু সফলং কৃপয়া তব শঙ্কর ॥

[বাংলাতে সহজ সরল ভাবেও প্রার্থনা করতে পারেন এটি বলে – হে প্রভু শিব শঙ্কর! আমি না জেনে অথবা জেনে বুঝে যে জপ- পূজা ইত্যাদি সৎ কর্ম করেছি, তা যেন আপনার কৃপায় সফল হয়]

✅এবার প্রভু শিবের কাছে শিবভক্তি প্রার্থনা করুন এই মন্ত্র পাঠ করে।
শিবভক্তি প্রার্থনা মন্ত্র –
শিবে ভক্তিঃ শিবে ভক্তিঃ শিবে ভক্তির্ভবে ভবে।
অন্যথা শরনং নাস্তি ত্বমেব শরনং মম ॥

[বাংলাতে সহজ সরল ভাবেও প্রার্থনা করতে পারেন এটি বলে – হে প্রভু সদাশিব ! প্রত্যেক জন্মে আমার শিবে ভক্তি হোক, শিবে ভক্তি হোক, শিবে ভক্তি হোক। শিব ব্যতীত অন্য কেউ আমাকে শরণ দেবার নেই। হে পার্বতীপতি আপনিই আমার শরণদাতা]

॥ বৈকুণ্ঠ চতুর্দশী পূজার বিধি সমাপ্ত হল ॥

✅পূজা সমাপ্ত হবার পর শিবচরণামৃত ও শিব প্রসাদ গ্রহন করে উপবাস ভঙ্গ করবেন। নীচের এই লিঙ্কে ক্লিক করে দেখুন 👉

🛑বিঃদ্রঃ – বৈকুণ্ঠ চতুর্দশীর পরবর্তী তিথিই(অর্থাৎ পরের দিনই) হল কার্তিকপূর্ণিমা তিথি। এই কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পরমেশ্বর শিবের উদ্দেশ্যে ত্রিপুরোউৎসব হিসেবে দীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠান করা হয়। ত্রিপুরোৎসব পূর্ণিমার সন্ধ্যা বেলাতে অবশ্য‌ই দীপপ্রজ্জ্বলিত করবেন শিবমন্দিরে বা আপনার বাড়িতে থাকা শিবের সমক্ষে । এই ত্রিপুরোৎসব সম্পর্কে জানতে এবং এটি পালনের বিধি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য নিচের এই লিঙ্কে ক্লিক করে দেখে নিন 👉 ত্রিপু্রোৎসব দীপপ্রজ্জ্বলন রীতি – স্কন্দমহাপুরাণোক্ত

🖋️ সংগ্রহে ও লেখনীতে – শ্রীনন্দীনাথ শৈব (কৌশিক রায় শৈবজী)

©️কপিরাইট ও প্রচারে – International Shiva Shakti Gyan Tirtha (ISSGT)

© Koushik Roy. All Rights Reserved

মন্তব্যসমূহ

  1. ঔঁ নমোঃ শিবায়🕉 🙏🙏
    মাতা পার্বতী ও পরমেশ্বর শিবের আরেকটি ধ্যান মন্ত্র এখানে পেয়েছে
    উমা সহিত উমাপতয়েঃ নমোঃ
    এই ধ্যান মন্ত্রে মাও বাবার পূজো
    করা যাবে
    হর হর ব্যোম ব্যোম🕉🕉
    🙏🙏🙏🌷🙏

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমবার ব্রত বিধি ও মাহাত্ম্য (শৈবপুরাণোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ১ (মূলপূজা)

বৃহৎ শিবার্চন বিধি পুস্তক (শৈব আগমোক্ত)

শিবরাত্রির ব্রত বিধি ২ (প্রহরপূজা)

ত্রিপু্রোৎসব দীপপ্রজ্জ্বলন রীতি – স্কন্দমহাপুরাণোক্ত